মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো এবং লোকসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার অভিযোগ তুলে জলপাইগুড়ি বজরাপাড়া বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধৃত বিচারাধীন ছয় বন্দি আমরণ অনশন শুরু করেছেন। শুক্রবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জেলার কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ওই বন্দিদের গত ২৬ মার্চ জেলা দায়রা আদালতে তোলা হয়। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ দশ দিনের জন্য তাদের নিজেদের হেফাজতে নেয়। ওই দিন থেকে থানা হাজতে এক বন্দি অনশন শুরু করেন। পরের দিন থেকে অন্য বন্দিরা একে একে অনশন আন্দোলনে যোগ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনশনকারী বন্দিদের মধ্যে আছেন কামতাপুর পিপলস পার্টির (কেপিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুবাস বর্মণ, কেপিপি নেতা দীপঙ্কর সিংহ, চন্দন রায়, আদিত্য রায়, পবিত্র রায় এবং অনুকুল সিংহ। প্রথম অনশন শুরু করেন নুবাস। এ দিন হাসপাতালে তিনি বলেন, “গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার কেন্দ্রে কেপিপি-র প্রার্থী ছিলাম। এবারও লড়াই করতাম। পুলিশ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করছে। ওই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আমরা আমরণ অনশন শুরু করেছি।” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুনাল অগ্রবাল ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমরা তদন্তের প্রয়োজনে ওঁদের নিজেদের হেফাজতে নিয়েছি। অনশন শুরু করার পরে অসুস্থতা বোধ করায় তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কেউ অনেক কথাই বলতে পারেন। তা নিয়ে কিছু বলার নেই।”
গত ২৬ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে বজরাপাড়ায় বিস্ফোরণে ছ’জন নিহত হন। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ গত ২৮ ডিসেম্বর ময়নাগুড়ির পানবাড়ি এলাকা থেকে চন্দনকে ও ৩০ ডিসেম্বর কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে নুবাসকে গ্রেফতার করে। পরের দিন শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া থেকে ধরা হয় দীপঙ্করকে। পরে গ্রেফতার করা হয় আদিত্য ও পবিত্রকে। কেপিপি-র সাধারণ সম্পাদক নিখিল রায় বলেন, “একের পর এক মামলা জুড়ে দিয়ে বন্দিদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আজ, শনিবার হাসপাতালে ওদের সঙ্গে কথা বলব।”
গত ২৬ মার্চ কোতোয়ালি থানায় আনার পর থেকে নুবাস খাবার খেতে অস্বীকার করেন। পরের দিন খাবার ফিরিয়ে দেন দীপঙ্কর সিংহ, চন্দন রায়, আদিত্য রায়। শুক্রবার খাবার নেয়নি পবিত্র রায় এবং অনুকুল সিংহ। বৃহস্পতিবার রাত থেকে নুবাস বর্মণের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। এ দিন ছয় বন্দিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। জলপাইগুড়ি হাসপাতালের সুপার সুশান্ত রায় বলেন, “চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। ওঁরা এখন সুস্থ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy