বিয়ের পরে পণের দাবিতে বধূকে অত্যাচার ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইঞ্জিনিয়র স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের পতিরামের কাছারিপাড়া এলাকার ঘটনা। গত বৃহস্পতিবার ওই বধূ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। সোমবার রাতে পুলিশ পতিরাম এলাকা থেকে তাঁর অভিযুক্ত শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে।
বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযুক্ত স্বামীর নাম সনৎ সরকার। তিনি বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির মেজিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইঞ্জিনিয়র। তাকে গ্রেফতার করতে সংশ্লিষ্ট গঙ্গাজলঘাটি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বধূর অভিযুক্ত ননদ নূপুর সরকার পলাতক। ধৃত শাশুড়ি শঙ্করী সরকার একটি স্কুলের হস্টলের মেট্রন। শ্বশুরমশাই ক্ষিতিশ সরকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। মঙ্গলবার ধৃতদের বালুরঘাট আদালতে হাজির করালে সিজেএম কোর্টের বিচারক সঞ্জয় চৌধুরী জামিন নাকচ করে অভিযুক্তদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
২০১২-র ২৮ জুন তপন থানার রামপুর এলাকার বাসিন্দা জয়ন্ত দাসের মেয়ে পর্ণাশ্রী দেবীর সঙ্গে পতিরামের কাছারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা সনৎ সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয়। ক্ষিতিশবাবু ও জয়ন্তবাবু সহকর্মী ছিলেন। জয়ন্তবাবু জানান, বিয়েতে দাবিমত পণের ১ লক্ষ টাকা এবং ১৮ ভরি সোনার গয়না ও অন্য জিনিসপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে টাকার দাবিতে মেয়ের উপর জামাই ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অত্যাচার শুরু করেন। মেয়ের কথা ভেবে জয়ন্তবাবু দু দফায় আরও সাড়ে তিন লক্ষ দেন। তার পরে গাড়ি কেনার জন্য আরও ২ লক্ষ টাকা জামাই সনৎ দাবি করে। জয়ন্তবাবুর অভিযোগ, “টাকা আনতে অস্বীকার করলে পরে মেয়েকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করা হয়।” অভিযোগকারী বধূর অভিযোগ, “সনৎ গলা টিপে মারার চেষ্টা করেছিল। সেই সময় মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবাসনে ছিলাম। প্রতিবেশী এক জনের ফ্ল্যাটে পালিয়ে বাঁচি। আমাকে বাড়ি থেকেও বার করে দেওয়া হয়।” সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মজুমদার বলেন, “গত এক মাস ধরে ওই বধূ বাপের বাড়ি তপনের রামপুরে রয়েছেন। অভিযুক্ত শ্বশুর শাশুড়ি বধূকে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করে ছেলের আবার বিয়ে দেবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন বলে অভিযোগ। মামলাটির পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন ২০ মে।” অভিযুক্তদের আইনজীবী দেবাশিস কর্মকার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “সব মিথ্যা অভিযোগ। এ দিন আমার দুই মক্কেলের জামিন নাকচ হয়েছে ঠিকই। পরের শুনানিতেও আবেদন করব।”