এক সময় দার্জিলিং পাহাড় সমস্যা নিয়ে তাঁর সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব ছিলেন শরিকেরা। তাঁর দলীয় সংগঠনের সম্মেলনের নথিতেও বলা হয়, পাহাড় সমস্যা নিয়ে তাঁর নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার সঠিক ভাবে এগোতে পারেনি। কিন্তু রাজ্যের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেই এবার দার্জিলিং লোকসভা আসনে মূল প্রচারক হিসাবে চাইছে জেলা সিপিএম। বড় শরিকের সিদ্ধান্তে দ্বিমত নেই ছোট শরিকদেরও। ২০১০ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে একটি সফরের পর বুদ্ধবাবু জেলায় আসেননি। যদিও দলীয়ভাবে এখনও বুদ্ধবাবুই দার্জিলিং জেলার দায়িত্ব রয়েছে।
আগামী ১২ মার্চ, বুধবার জেলায় কর্মী সভায় যোগ দিতে আসছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। সভার পর সিপিএমের জেলা পর্যায়ের বৈঠক হবে। লোকসভার প্রচারের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্বের তালিকা চূড়ান্ত করে তা কলকাতায় পাঠানো হবে। এর পর ১৪ মার্চ জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হবে। প্রাথমিক ভাবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সীতারায় ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু এবং গৌতম দেব-এর নাম তালিকায় রয়েছে। সমতলে বুদ্ধের জনসভার পাশাপাশি পাহাড়ে সীতারাম ইয়েচুরিকে দিয়ে সভা করানোর ভাবনা শুরু হয়েছে। তবে সবই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে করা হবে।
সিপিএম সূত্রে খবর, বুদ্ধবাবু রাজি হলে তাঁর শরীরের কথা মাথায় রেখে ছোট ছোট সফর করানো হতে পারে। যেমন কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদ বা মালদহ এসে থেকে পরের দিন রায়গঞ্জ বা ইসলামপুরে আসা। সেখানে বিশ্রাম নিয়ে শিলিগুড়ি সফর। জীবেশবাবু বলেন, “বুদ্ধবাবুর শরীর ভাল যাচ্ছে না, টানা সফর করতে পারেন না। কী ভাবে ওঁকে আনা যায় তা দেখা হচ্ছে। সব ওঁর সম্মতির উপর নির্ভর করছে।”
এই প্রসঙ্গে বাম শরিক সিপিআই-র জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “যে আসনে যে দল প্রার্থী দেয়, তাঁরাই মূলত প্রচারক এবং প্রচারের তালিকা তৈরি করে। বামফ্রন্টে আলোচনা হয়। দার্জিলিঙে বুদ্ধবাবু প্রচারে আসতেই পারেন, সেটা সিপিএমের সিদ্ধান্ত। তা হলে ভালই হয়।” আরএসপি-র জেলা কার্যকরী সম্পাদক তাপস গোস্বামী বলেন, “এক সময় বামফ্রন্ট সরকারের পাহাড় নীতির সমালোচনায় সরব ছিলাম। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। চটজলদি যে পাহাড় সমস্যা মিটবে না তা বোঝা যাচ্ছে। বুদ্ধবাবু এলে, তাঁর বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হবে।”