Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভরা বর্ষায় বৃষ্টি নেই, ক্ষতির ভয় আমন চাষে

আকাশে মেঘের আনাগোনাই সার। ভরা শ্রাবণে এ বার বৃষ্টির দেখা নেই উত্তরবঙ্গে। উঁচু জমিতে রোপণ করা আমন ধানের চারা চড়া রোদে ঝলসে হলুদ হতে বসায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। জলপাইগুড়ি জেলা কৃষি আধিকারিকদের আশঙ্কা, আর এক সপ্তাহের মধ্যে ভারী বৃষ্টি না-হলে বিপদ বাড়বে আরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫০
Share: Save:

আকাশে মেঘের আনাগোনাই সার। ভরা শ্রাবণে এ বার বৃষ্টির দেখা নেই উত্তরবঙ্গে। উঁচু জমিতে রোপণ করা আমন ধানের চারা চড়া রোদে ঝলসে হলুদ হতে বসায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। জলপাইগুড়ি জেলা কৃষি আধিকারিকদের আশঙ্কা, আর এক সপ্তাহের মধ্যে ভারী বৃষ্টি না-হলে বিপদ বাড়বে আরও। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের দফতরে কৃষি ও সেচ কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক হয়। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক সুদীপ মিত্র বলেন, “বৃষ্টি কম হওয়ায় চাষের কাজে জলের অভাব হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে টানা বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে তা নিয়ে বৈঠক হয়েছে।”

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় দু’ লক্ষ দশ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের কাজ শুরু হয়েছে। ৭৫ শতাংশ জমিতে চারা বোনার কাজ শেষ হলেও জলের অভাবে মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে। বাকি ২৫ শতাংশ জমিতে জল না থাকায় চাষিরা চারা বোনার কাজ করতে পারেননি। যে জমিতে চারা বোনা শেষ হয়েছে, তার মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ নিচু এলাকা। সেখানে সামান্য জল থাকলেও বাকি উঁচু জমির ধানের চারা ঝলসে হলুদ হতে শুরু করেছে। জেলার অতিরিক্ত কৃষি অধিকর্তা সুজিত পাল বলেন, “জুলাই মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম ছিল। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়েছে। এদিকে রোদের তাপ বাড়ছে ফলে মাঠের জল শুকিয়ে যেতে বসেছে। আর এক সপ্তাহ ওই পরিস্থিতি চললে সমস্যা বাড়বে।” কৃষি কর্তারা জানান, ভরা বর্ষাতেও তিস্তা সেচ খাল থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। কিন্তু ওই জল দিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা সম্ভব নয়। কারণ, জেলার মাত্র ২৫ হাজার হেক্টর জমি তিস্তা সেচের আওতায় রয়েছে। ক্ষুদ্র সেচের আওতায় রয়েছে এক লক্ষ ১৫ হাজার হেক্টর জমি। বাকি ৭০ হাজার হেক্টর জমির আমন চাষ সেচের আওতার বাইরে বৃষ্টিতে নির্ভরশীল। জেলা কৃষি আধিকারিক তপন সরকার বলেন, “সেচের আওতার বাইরে থাকা জমি নিয়ে সমস্যা বেশি। বৃষ্টি না হলে সেখানে ধানের চারা রক্ষা করা অসম্ভব।”

কতটা ঘাটতি এ বার বৃষ্টিপাতে?

এ দিনের সভায় কৃষি কর্তারা জানিয়েছেন, জুন মাসে জেলায় গত বছরের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গত বছর জুন মাসে ৬০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এ বার হয়েছে ৬৩০ মিলিমিটার। কিন্তু জুলাই মাস শুরু হতেই বৃষ্টিপাত কমেছে। এই মাসে জেলায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৯১ মিলিমিটার। গত বছর জুলাই মাসে ৯৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এবছর ৩১ জুলাই পর্যন্ত মাত্র সাড়ে চারশো মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই মাসেই চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি জলের চাহিদা থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে চাষিদের কৃষি দফতর থেকে আড়াই হাজার পাম্প মেশিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র সেচ দফতরকেও প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE