Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মন্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবিতে কর্মসূচি কংগ্রেসের

রামঘাট কান্ডে ‘প্রতিবাদকারী’কে চড় মারার মামলায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবে’র গ্রেফতারের দাবিতে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটে লাগাতার ২৪ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে মহামিছিলও করবে কংগ্রেস।

শিলিগুড়ির রামঘাটে কংগ্রেসের সভা।—নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ির রামঘাটে কংগ্রেসের সভা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৪
Share: Save:

রামঘাট কান্ডে ‘প্রতিবাদকারী’কে চড় মারার মামলায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবে’র গ্রেফতারের দাবিতে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটে লাগাতার ২৪ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে মহামিছিলও করবে কংগ্রেস। রবিবার বিকেলে কংগ্রেস বিধায়কদের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল রামঘাটে যান। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলার পরে কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের তরফে আন্দোলনের কথা জানান দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধায়ক শঙ্কর মালাকার।

শঙ্করবাবু বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের কাছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি। কালী পুজো পরে ফের আন্দোলন শুরু হবে। মহামিছিল ছাড়াও পুলিশ কমিশনারেটের সামনে টানা ২৪ ঘন্টা অবস্থান বিক্ষোভ করা হবে।” কংগ্রেসের আন্দোলন নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবে’র প্রতিক্রিয়া, “কংগ্রেস একটি রাজনৈতিক দল। তাঁরা তাদেঁর কর্মসূচি করছে। ওঁরা যা খুশি করতে পারে। এই নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।”

এদিন রামঘাটে শঙ্করবাবু ছাড়াও ফাঁসিদেওয়ার বিধায়ক সুনীল তিরকে, জলপাইগুড়ির বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা যান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার সহ দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। নাগরাকাটার বিধায়ক যোশেফ মুণ্ডা-সহ উত্তরবঙ্গের আরও দুই বিধায়কের রামঘাটে যাওয়ার কথা থাকলেও তাঁরা নানা কারণে আসতে পারেননি বলে শঙ্করবাবু জানিয়েছেন।

এদিন বিকেল চারটায় কংগ্রেস বিধায়করা রামঘাট এলাকায় যান। বাসিন্দারা বিধায়কদের জানান, আমরা এলাকায় বৈদ্যুতিক চুল্লি চাই না। স্থানীয় বাসিন্দা কাজল দাস, রিম্পা বিশ্বাস, দিলারা বেগম, মহেন্দ্র মাহাতোরা এলাকা থেকে শ্মশানটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানান। পলাশ দত্ত নামে এক বাসিন্দা দাবি করেন, “শ্মশানটি সরিয়ে নদীর অন্য পারে নিয়ে যাওয়া হোক।” বাসিন্দাদের অনেকেই কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা সুখবিলাসবাবুকে আন্দোলন করার কথা বলেন। বৈদ্যুতিক চুল্লির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বিক্ষোভ দেখিয়ে গ্রেফতার হওয়া কংগ্রেস নেতা রাজেশ যাদব, ও মন্ত্রীর হাতে ‘মার খাওয়া’র অভিযোগ গ্রেফতার মহানন্দ মণ্ডলের স্ত্রী বিজলীদেবী বিধায়কদের ওই দিনের ঘটনার বিবরণ দেন। উল্লেখ্য, বিজলীদেবী নিজে ওই ৫ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রীও।

বাসিন্দাদের বক্তব্য শোনার পর সুখবিলাসবাবু গোটা ঘটনাকেই দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এখানে চুল্লি হবে কিনা তা নিয়ে স্থানীয় লোকেদের সঙ্গে আগে আলোচনা করতে পারতেন মন্ত্রী। তা না করে যা করলেন তা ভাবা যায় না।”

গত ২৮ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়ির জলপাই মোড়ে রামঘাট শ্মশানে নতুন বৈদ্যুতিক চুুল্লির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের সময় বাধা দেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। মন্ত্রী গৌতম দেব কয়েকজন বাসিন্দাদের আলোচনার জন্য ডেকে নেন। সেখানেই বাদানুবাদের পর গোলমাল হয় বলে অভিযোগ। মন্ত্রী মহানন্দ মণ্ডলকে চড় থাপ্পর মারেন বলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। আরেক বাসিন্দা গৌরী মিত্রকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা মন্ত্রীকে হেনস্থা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার পাল্টা অভিযোগ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে মহানন্দ মণ্ডল, রাজেশ যাদব-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়। পুলিশ দুটি ক্ষেত্রেই মামলা করলেও পরে মহানন্দ ও রাজেশকে গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য দুজনেরই জামিন পান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

slap case congress ramghat gautam deb
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE