Advertisement
১৯ মে ২০২৪

‘মমতা জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে আত্মসমর্পণ বুলেটের

ঝেড়ে ফেলতে চাইছে দল, কিন্তু নাছোড় নেতা। তাই অনুগামীদের নিয়ে “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ” স্লোগান দিতে দিতে সোমবার মালদহের ইংরেজবাজার থানায় আত্মসমর্পণ করতে যান তৃণমূল থেকে সদ্য বহিষ্কৃত যুব নেতা বিশ্বজিৎ রায় ওরফে বুলেট। পুলিশ অবশ্য তাকে গ্রেফতার করে থানাতেই।

মালদহের ইংরেজবাজার থানা চত্বরে বিশ্বজিৎ রায় ওরফে বুলেট। সোমবার। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

মালদহের ইংরেজবাজার থানা চত্বরে বিশ্বজিৎ রায় ওরফে বুলেট। সোমবার। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৭
Share: Save:

ঝেড়ে ফেলতে চাইছে দল, কিন্তু নাছোড় নেতা। তাই অনুগামীদের নিয়ে “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ” স্লোগান দিতে দিতে সোমবার মালদহের ইংরেজবাজার থানায় আত্মসমর্পণ করতে যান তৃণমূল থেকে সদ্য বহিষ্কৃত যুব নেতা বিশ্বজিৎ রায় ওরফে বুলেট। পুলিশ অবশ্য তাকে গ্রেফতার করে থানাতেই।

গত শুক্রবার মালদহে বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের আধিকারিকদের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে তাঁদের মারধর, গালিগালাজ করে বুলেট ও তার অনুগামীরা। সেই দৃশ্য টিভিতে প্রচারিত হওয়ার পর সে দিন রাতেই বুলেটকে বহিষ্কার করে দল। তার অনুগামী ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু দু’দিন ধরে জেলা যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি বুলেটের খোঁজ পায়নি পুলিশ। এ দিন সকালে থানা চত্বরে হঠাৎ দল ও নেত্রীর নামে স্লোগান দিতে দিতে আসতে দেখা যায় বুলেটকে। সঙ্গে ছিল জনা তিরিশ অনুগামী। মিছিল করে এসে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, “আমরা মানুষের জন্য আন্দোলন করি। আন্দোলন করতে গেলে ভুল হয়েই থাকে। আমাদের এই আন্দোলন চলবে।”

পুলিশ দু’দিন ধরে তাকে ‘পলাতক’ বলে দাবি করলেও, বুলেটের এ দিন দাবি, “আমি পালিয়ে যাইনি। কলকাতায় গিয়েছিলাম রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে। ফিরে এসে আত্মসমর্পণ করলাম।” মালদহে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা অবশ্য জানান, আদৌ কলকাতা যায়নি বুলেট। ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার সাহায্যে মালদহতেই গা ঢাকা দিয়ে থাকছিল সে। শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও ভাবেই তার পাশে নেই, তা বুঝতে পেরে সোমবার আত্মসমর্পণ করে।

বুলেটের মুখে অবশ্য পরস্পর-বিরোধী কথা শোনা গিয়েছে। থানা চত্বরে তার দাবি ছিল, “দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে কলকাতা গিয়েছিলাম।” কিন্তু বহিষ্কারের পরেও পুলিশের খাতায় ফেরার এক ব্যক্তিকে রাজ্য নেতৃত্ব দলীয় কর্মসূচিকে অংশ নিতে দিলেন কী ভাবে? আদালত থেকে বেরোনোর সময় বুলেটের জবাব, “আমি কলকাতায় গিয়ে কোনও রাজ্য নেতার সঙ্গে দেখা করিনি।” তা হলে সকালে ও কথা বললেন কেন? বুলেট জবাব না দিয়ে পুলিশের গাড়িতে উঠে পড়েন।

তবে দল যে তার পাশে থাকতে চায় না তারও ইঙ্গিত মিলেছে। ঘটনার রাতেই দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ নেওয়ার নির্দেশ দেন। আগে না জানিয়ে হঠাৎই শনিবার দুুপুরে বিল বাকি থাকার অভিযোগে বুলেটের রেস্তোরাঁর বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় দফতর। তার পর থেকেই সেটি বন্ধ। বছরখানেক আগে রেস্তোরাঁটি বুলেট তৈরি করলেও কাগজে কলমে সেটি তার বাবার নামে রয়েছে। ভুয়ো বিল নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে আধিকারিকদের নিগ্রহ করেছিল যে, তার রেস্তোরাঁতেই এক মাসের ছ’হাজার টাকার বিল বকেয়া বলে জানান এক কর্মী। দফতরের কর্মীদের হেনস্থা করার ফলেই কি চটজলদি পদক্ষেপ? বিদ্যুৎ দফতরের মালদহের বিভাগীয় ম্যানেজার শৈবাল মজুমদারের সঙ্গে কথা বলার জন্য দেখা করার চেষ্টা করা হলে তিনি দেখা করতে চাননি। ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

এ দিন বুলেটের সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। পুলিশের তরফে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, মূল অভিযুক্ত ধরা পড়ে যাওয়ায় হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই আবেদন জানানো হয়নি। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

malda biswajit roy bullet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE