রামঘাট-কাণ্ডে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত মহানন্দ মণ্ডল পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন। প্রায় এক মাস ধরে পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’ ছিলেন মহানন্দবাবু।
সোমবার সকালে শিলিগুড়ি থানায় গিয়ে ধরা দিলে তাঁকে শিলিগুড়ি আদালতে পাঠায় পুলিশ। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে উপর হামলা, শিলিগুড়ির আইসি-র গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, শবদাহ করতে আসা লোকেদের উপর হামলা-সহ একাধিক ধারায় মহানন্দবাবুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। আইনজীবীদের কর্মবিরতি থাকায় নিজের হয়ে জামিনের আবেদন করেন মহানন্দ। পুলিশ সাতদিনের হেফাজত চায়। বিচারক তাঁর ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সরকারি আইনজীবী সুদীপ বাসুনিয়া বলেন, “রামঘাটের গোলমালে হামলাকারীদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। সেই অস্ত্র উদ্ধার করার প্রয়োজনে পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয়েছিল।” শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (সদর) ওজি পাল বলেন, “অস্ত্র এবং অন্য পলাতকদের সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
এ দিন পুলিশ দুটি মামলায় মহানন্দবাবুকে আদালতে তোলে। একটি মামলা শিলিগুড়ি থানার আইসি বিকাশকান্তি দে’র করা। অন্যটি, ঘটনার দিন শবদাহ করতে আসা একদল লোকের। পরের মামলার ধারাগুলি জামিনযোগ্য হওয়ায় বিচারক ধৃতের জামিন দেন। আইনজীবীদের কর্মবিরতি থাকায় মহানন্দবাবুর তরফে লিখিতভাবে জামিনের আবেদন করা হয়। মামলাগুলির আরও অভিযুক্ত ১৯ জন বর্তমানে জেল হেফাজতে। এরমধ্যে প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর অমরনাথ সিংহ, কংগ্রেস নেতা রাজেশ যাদবও আছেন।
আত্মসমর্পণের আগে মহানন্দবাবু জানান, অত্যাচারের ভয়ে ঘটনার পর আমি গা ঢাকা দিয়েছিলাম ঠিকই। তবে আমরা পুলিশের উপর হামলা করিনি। আমাদের ওই মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাঁর কথায়, “এর মধ্যে বারবার বাড়িতে পুলিশি হানা চলছিল। এলাকার লোকজনকে আমার খোঁজে হেনস্থা করা হয়েছে। তাই নিজেই ধরা দিলাম। আইনের পথে বাকি লড়াই লড়ব।” মহানন্দবাবু-সহ বাকিদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে এ দিনও বামেদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে।
জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে পুলিশি অভিযান, অত্যাচার বন্ধ করতে বলেছি। আইন আইনের পথে চলবে। তবে পুলিশ বাড়াবাড়ি করলে আমরা চুপ করে থাকব না।”
রামঘাটে শিলান্যাসের দিন থেকেই গোলমাল শুরু। বৈদ্যুতিক চুল্লি নিয়ে দূষণের কথা বলে বাসিন্দারা সেখানে বিক্ষোভ দেখান। আলোচনার সময় মহানন্দবাবুকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী চড়, লাথি মারেন বলে অভিযোগ ওঠে। এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের কটাক্ষ, “কোন মহাপুরুষ গ্রেফতার বা আত্মসমর্পণ করেছেন জানি না। এতটুকু বলতে পারি, আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy