Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাহুলকে দেখতে ছুটির দিন বদল জুরান্তি বাগানের শ্রমিকদের

রাহুল গাঁধীর কর্মিসভায় যোগ দিতে গেলে বাগানের কাজের দিন ‘নষ্ট’ হবে। তাই ‘ছুটির দিন’ বদলে নিলেন মেটেলির জুরান্তি চা বাগানের শ্রমিকরা।আজ মঙ্গলবার কংগ্রেসের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধীর কর্মিসভা রয়েছে জুরান্তি চা বাগানে। ডুয়ার্সের প্রত্যন্ত এলাকার এই চা বাগানে বেশ কয়েকদিন ধরেই শুরু হয়েছে নিরাপত্তা কর্মীদের আনাগোনা, তৈরি হয়েছে মঞ্চও।

জুরান্তিতে রাহুল গাঁধীর কর্মিসভার প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।

জুরান্তিতে রাহুল গাঁধীর কর্মিসভার প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।

সব্যসাচী ঘোষ
মালবাজার শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৪ ০১:৫৬
Share: Save:

রাহুল গাঁধীর কর্মিসভায় যোগ দিতে গেলে বাগানের কাজের দিন ‘নষ্ট’ হবে। তাই ‘ছুটির দিন’ বদলে নিলেন মেটেলির জুরান্তি চা বাগানের শ্রমিকরা।আজ মঙ্গলবার কংগ্রেসের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধীর কর্মিসভা রয়েছে জুরান্তি চা বাগানে। ডুয়ার্সের প্রত্যন্ত এলাকার এই চা বাগানে বেশ কয়েকদিন ধরেই শুরু হয়েছে নিরাপত্তা কর্মীদের আনাগোনা, তৈরি হয়েছে মঞ্চও। সেই সঙ্গে টিভিতে দেখা রাহুল গাঁধীকে কাছ থেকে দেখার জন্য উৎসাহও তৈরি হয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে। কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠন এনইউপিডব্লুর তরফে বাগানের সব শ্রমিকদেরই আমন্ত্রন জানানো হয়েছে সভায়। সভায় চা শ্রমিকরা এলে, বাগানের স্বাভাবিক কাজে যাতে কোনও প্রভাব না পড়ে, সে কারণেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন বদলানোর আর্জি জানিয়ে আবেদন করা হয় সংগঠনের তরফে। বাগান কর্তৃপক্ষ তা মঞ্জুরও করেন। ডুয়ার্সে বাগানগুলিতে কোনও সভা থাকলে, বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে গণছুটির দরখাস্ত করে শ্রমিকদের সভায় নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দীর্ঘ দিনের। সেখানে এই ছুটির দিনে কাজ করতে চাওয়ার আর্জি ব্যতিক্রমী বলেই মনে করছে চা শিল্পমহল। জুরান্তি চা বাগানে রবিবারেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন পালন করা হয়। রাহুল গাঁধীর কর্মিসভার দিন চূড়ান্ত হওয়ার পরেই, বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে মঙ্গলবার ছুটি চেয়ে এনইউপিডব্লুর তরফে মৌখিকভাবে আর্জি জানানো হয়। মঙ্গলবার ছুটির পরিবর্তে আগামী রবিবার শ্রমিকরা কাজ করতে ইচ্ছুক বলে সংগঠনের তরফে জানানোয়, সেই আর্জি মঞ্জুর করেছেন কর্তৃপক্ষ। এ দিন সোমবার কর্তৃপক্ষ নোটিশ এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।

জুরান্তি বাগানের ম্যানেজার তাপস দাস বলেন, “যে দিন থেকে রাহুল গাঁধী বাগানে আসবেন বলে স্থির হয়েছে সেদিন থেকেই বাগানের শ্রমিকেরা খুবই উৎসাহী হয়ে রয়েছেন। তাই তাদের কথা ভেবেই রবিবারে কাজ করার প্রস্তাবে রাজি হয়ে, মঙ্গলবার ছুটির ঘোষণা করেছি।”

বাগানে ছুটি ঘোষণা হওয়ায় খুশি শ্রমিকরাও। বাগানের প্রবীণ শ্রমিক ডাহারু মুণ্ডার কথায়, “বাগানের কাজ থাকলে তো আর রাহুল গাঁধীকে দেখা হত না। ইন্দিরা গাঁধী আর রাজীব গাঁধীকেও দেখতে পারিনি। রাহুলকে দেখে সেই আশা মেটাতে পারব। বাগান ছুটি থাকায় আর কাজ নিয়ে সংশয় থাকল না।” জুরান্তি চা বাগানের শ্রমিক সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। মেটেলি এবং সামসিং-এর মাঝে এই বাগানে ডান-বাম কোনও দলেরই সর্বভারতীয় নেতা এতদিন আসেননি। স্বভাবতই উৎসাহী সঞ্জয় মুন্ডা বলেন, “আগে ট্রাকে চেপে শহরে গিয়ে নেতাদের বক্তৃতা শুনতাম। এ বারে আমাদের বাগানে রাহুল গাঁধী আসায় বাইরের লোকেরা বাগানে আসবেন।” আলিপুরদুয়ার লোকসভার কংগ্রেস প্রার্থী জোসেফ মুন্ডার সমর্থনে কর্মী সভা করতে রাহুল গাঁধী জুরান্তিতে আসছেন। আর নাগরাকাটার বিধায়ক জোসেফবাবুর বাড়িও জুরান্তি চা বাগানে। বাগানে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের আধিপত্য দীর্ঘ দিনের। এনইউপিডব্লু-র কেন্দ্রীয় কমিটির জোসেফবাবুর কথায়, “সভার জন্য কাজের দিন নষ্ট হোক তা চাইনি। বাগানের কাজই শ্রমিকদের রোজগারের একমাত্র উপায়। আমি নিজেও চা বাগানের বাসিন্দা, রাজনীতির জন্য শ্রমিকদের মজুরি কাটা হোক তা চাই না। সে কারণেই ছুটির দিন বদলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rahul gandhi sabyasachi ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE