চলছে যজ্ঞ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
মেঘ-রোদের লুকোচুরির মধ্যে শিবযজ্ঞ শুরু হল কোচবিহারে। শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ কোচবিহারের খাগড়াবাড়ি এলাকায় শিবযজ্ঞ শুরু হয়। ২০ জন পুরোহিত রীতি মেনে সূর্যকান্ত মণির মাধ্যমে সৌররশ্মি প্রতিফলিত করে, শিবমূর্তির পাদদেশে ওই যজ্ঞকুণ্ডে অগ্নিসংযোগ করেন। এর পরই শুরু হয় ত্র্যম্বক মন্ত্র উচ্চারণ। সে সময় বৃষ্টির জন্য সকলেই অপেক্ষায়। কাকতালীয় ভাবে তখনই দু-এক ফোঁটা বৃষ্টি পড়ে। যা দেখে যজ্ঞ দেখতে ভিড় করা বাসিন্দা উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন। শিবযজ্ঞ সমিতির সদস্য বিশ্বজি শঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “সকাল থেকেই আকাশ জুড়ে মেঘ করে। ঝিরঝির করে দু-এক ফোঁটা বৃষ্টি হয়।” শিবযজ্ঞ সমিতির সভাপতি হিমাদ্রী শঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “ঐতিহ্য মেনে আমরা যজ্ঞে সামিল হয়েছি। সকলের কল্যাণ যজ্ঞের মূল উদ্দেশ্য”
টানা অনাবৃষ্টির জন্য সর্বত্র জমিতে ধান, পাট থেকে শুরু করে সব্জি চাষ ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে স্থানীয় চাষিরা জানিয়েছেন। গাছের ফল, ফুলও ঝরে পড়ছে। জেলাকে ইতিমধ্যে খরাপ্রবণ বলে ঘোষণার দাবি তুলেছেন কৃষকদের এক সংগঠন। এই পরিস্থিতির অবসান চেয়েই যজ্ঞ শুরু হয় এ দিন। তবে এ দিনই সকাল থেকেই আকাশ মেঘে ঢেকে ছিল। সমিতি সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৮ সালে কোচবিহারের মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ধর্মসভার সিদ্ধান্ত মেনে ওই বছর থেকে শিবযজ্ঞ শুরু হয়। এবারে ৬৭ বছরে পা দিয়েছে যজ্ঞ।
মন্দিরের সামনে রাস্তা ঘিরে মেলা বসেছে। সেখানে রকমারি পসরা নিয়ে হাজির ব্যবসায়ীরা। খাবারের দোকানও দেওয়া হয়েছে। ছোটদের নাগরদোলাও রয়েছে সেখানে। এ দিন বহু বাসিন্দা সেখানে ভিড় করেন। মেলায় আসা দোকানিরা জানান, যজ্ঞের কয়েক দিন ধরেই জেলার নানা প্রান্ত থেকে মানুষ সেখানে ভিড় করেন। ভাল বেচাকেনা হয়। সেখানে এক খাবারের ব্যবসায়ী বলেন, “প্রার্থনা যেমন করি সেই সঙ্গে দোকানও দিই। কিছু উপাজর্ন হয়।” সমিতির সম্পাদক জয়শঙ্কর ভট্টাচার্য জানান, “পাঁচ দিন ধরে ওই যজ্ঞ চলবে। ওই কয়েক দিন ধরেই মেলা চলবে। প্রসাদ বিতরিত হবে প্রতিদিন। তৃতীয় দিন রবিবার একই সঙ্গে বারো নাবালিকার কুমারী পুজো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy