Advertisement
E-Paper

লঙ্কার ফলন কমায় দাবি ক্ষতিপূরণের

এপ্রিল মাসে খরা। চলতি মাসে ঝড়বৃষ্টি। দুইয়ের প্রভাবে হলদিবাড়িতে লঙ্কার ফলন ভাল হয়নি। বিপাকে পড়েছেন বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, হলদিবাড়ি ব্লকে প্রতি বছর ৪২-৪৫ হাজার টন লঙ্কার উৎপাদন হয়। প্রতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাস অবধি লঙ্কার মরসুম হিসাবে ধরা হয়। এ বার খরা বৃষ্টির প্রভাবে ফলন মার খেয়েছে।

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০২:০১

এপ্রিল মাসে খরা। চলতি মাসে ঝড়বৃষ্টি। দুইয়ের প্রভাবে হলদিবাড়িতে লঙ্কার ফলন ভাল হয়নি। বিপাকে পড়েছেন বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, হলদিবাড়ি ব্লকে প্রতি বছর ৪২-৪৫ হাজার টন লঙ্কার উৎপাদন হয়। প্রতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাস অবধি লঙ্কার মরসুম হিসাবে ধরা হয়। এ বার খরা বৃষ্টির প্রভাবে ফলন মার খেয়েছে। এখনও অবধি উৎপাদনের পরিমাণ ১৮ হাজার টনের মত। এর মধ্যে কিছু লঙ্কা উত্তর ভারত এবং রাজ্যের কিছু প্রান্তে গিয়েছে। তাই হলদিবাড়ির চাষিরা ক্ষতিপূরণের দাবিও তুলেছেন।

হলদিবাড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব মৈত্রী বলেছেন, “ঝড় বৃষ্টিতে হলদিবাড়ি ব্লকের ২৫ শতাংশ খেত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একই কারণে বাকি অংশের জমিতে লঙ্কার উৎপাদন কমে গিয়েছে। গত মাসে খরার পর হালকা বৃষ্টি প্রয়োজন ছিল। সেখানে গত ১৫ দিন ধরে মাঝে মাঝেই ঝড় এবং বৃষ্টি হয়েছে। তাতে খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

হলদিবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সত্যেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “এ বার হলদিবাড়িতে টোম্যাটোর দাম পায়নি চাষিরা। একই অবস্থা দাঁড়িয়েছে হলদিবাড়ির লঙ্কার। কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। রাজ্য সরকারের কাছে হলদিবাড়ির কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি। ব্লক কৃষি আধিকারিককে মৌখিক ভাবে সব জানানো হয়েছে। লিখিতভাবেও জানানো হচ্ছে।”

চাষিরা জানিয়েছেন, হলদিবাড়িতে ২৩৫০ হেক্টর জমিতে তিন ধরনের লঙ্কা হয়। এগুলি হল, আকাশি, সুপার ও বুলেট সবুজ রঙের। আকাশি লঙ্কার উৎপাদন সবচেয়ে বেশি। শতকরা ৮৫ ভাগ জমিতে এই লঙ্কার চাষ হয়। ‘বুলেট’ লঙ্কা দেখতে গোলাকৃতি। পাহাড়ে এই ধরনের লঙ্কা পাওয়া যায়। সুপার লঙ্কা গাঢ় সবুজ। আকাশির তুলনায় লম্বা এবং একটু শক্তপোক্ত। ‘সুপার’-এর গন্ধ ‘আকাশি’র তুলনায় বেশি। ঝালও হয় বেশি। তিন রকমের লঙ্কার মধ্যে ‘বুলেট’ লঙ্কার ঝাল বেশি। তবে বুলেট লঙ্কায় গন্ধ নেই। হলদিবাড়িতে সাধারণত প্রতি বছর এই সময় আকাশি লঙ্কার উৎপাদন হয় ১৫০ টন। এবার তা হয়েছে মাত্র ৬০ টন। একই অবস্থা অন্য প্রজাতিগুলির। হলদিবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক বিঘা জমি থেকে ৬০-৭০ মন লঙ্কা মেলে। এই বছর উৎপাদন হয়েছে, ৩০ মনের মত।

লঙ্কা ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার হলদিবাড়ি বাজারে আকাশি লঙ্কা বিক্রি হয়েছে, প্রতি কিলোগ্রাম সাড়ে ৭ টাকা দরে। কৃষকরা জানান, প্রতি কিলোগ্রাম লঙ্কার উৎপাদন খরচ হয় ৫ টাকা। উৎপাদন কমে গেলে খরচ একই থাকায় লঙ্কার উৎপাদন খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। এতে লঙ্কা যে দামে বিক্রি হচ্ছে তাতে লোকসানে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। পাশাপাশি, সুপার লঙ্কার উৎপাদনও কম তাই প্রতি কিলোগ্রাম ১৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বুলেট লঙ্কা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম। উৎপাদন খরচ বেশি এবং বাজারের স্থিরতা না থাকার জন্য চাষিরা বুলেট ও সুপার লঙ্কা কম উৎপাদন করেন।

হলদিবাড়ির পাইকারি সব্জি ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি আবাস বন্দ জানিয়েছেন, এই বছর এখনও গঙ্গারামপুর এবং কাটিহারের লঙ্কা না ওঠায় বিভিন্ন এলাকায় হলদিবাড়ির উৎপাদন অল্প পরিমাণে গিয়েছে। কিন্তু উৎপাদন কার্যত অর্ধেক হওয়ায় তা আর সম্ভব হবে না। গঙ্গারামপুর এবং কাটিহারের লঙ্কা বাজারে ঢুকলে দাম কমে যাবে হলদিবাড়ির লঙ্কার।

haldibari raja bandyopadhyay chilli cultivation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy