Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শুভেন্দুর মঞ্চে হাজির সাবিত্রী, কৃষ্ণেন্দু

গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার মালদহে তিনি মেলালেন দুই পক্ষকে। শুভেন্দু অধিকারীর মঞ্চে শনিবার আগাগোড়া উপস্থিত ছিলেন মালদহের দুই তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের দুই মন্ত্রী, সাবিত্রী মিত্র এবং কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। এর আগে যাঁদের মেলাতে বেগ পেতে হয়েছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।

মালদহে পুরভোটের আগে কর্মিসভা শুভেন্দুর। —নিজস্ব চিত্র।

মালদহে পুরভোটের আগে কর্মিসভা শুভেন্দুর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৫ ০০:৫৮
Share: Save:

গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার মালদহে তিনি মেলালেন দুই পক্ষকে। শুভেন্দু অধিকারীর মঞ্চে শনিবার আগাগোড়া উপস্থিত ছিলেন মালদহের দুই তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের দুই মন্ত্রী, সাবিত্রী মিত্র এবং কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। এর আগে যাঁদের মেলাতে বেগ পেতে হয়েছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। সম্প্রতি নানা দলীয় সভায় দু’জনকে একসঙ্গে দেখা গেলেও, অধিকাংশ সময়েই তা ছিল নেহাতই নিয়মরক্ষা। একজন ঢোকার মুখে, অন্যজন বেরোনোর সময়ে সামান্য সৌজন্য বিনিময় করছেন, এমনই দেখা যেত। এ দিন কিন্তু দেখা গেল, মঞ্চে কথাও বলছেন দু’জন, রয়েছেন দীর্ঘ ক্ষণ।

পুরভোটের আগে দলীয় কর্মীদের হাতে হাত মিলিয়ে চলার বার্তা দিলেন তৃণমূলের মালদহ জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দুও। শনিবার মালদহের দুই পুরসভার ভোটের প্রস্তুতির জন্য কর্মিসভা করলেন শুভেন্দু। সভায় তিনি বলেন,“একই সঙ্গে পুরসভা এবং রাজ্যের উন্নয়ন তুলে ধরে ভোটারদের কাছে পৌঁছতে হবে। সকলকে একসঙ্গে কাজ করে দুই পুরসভা বিরোধীশূন্য করতে হবে। ”

গত লোকসভা ভোটে মালদহের দু’টি কেন্দ্রে দলের ভরাডুবির পরে গোষ্ঠী কোন্দল চরমে ওঠে। হারের দায় নিয়ে রাজ্যের দুই মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী এবং সাবিত্রী মিত্রের মধ্যে প্রকাশ্যে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ শুরু হয়ে যায়। সেই সময় দলের জেলা সভানেত্রীর পদ থেকে সাবিত্রী দেবীকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনকে। লোকসভা ভোটের আগের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহে এসে জেলার রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের নাম ধরে ধরে সকলকে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন। দলের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তারপরেও চিত্রটা বিশেষ বদলায়নি। তাই পুরভোটের আগে শুভেন্দুও একসঙ্গে চলা বার্তা দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও, তা কতটা ফলপ্রসু হবে তা নিয়ে দলের অন্দরেই সংশয় রয়েছে। যদিও জেলাতে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, “আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠী নেই। আমরা সকলেই মিলে কাজ করি। আর এভাবেই কাজ করে দুই পুরসভায় আমাদের দখলে রাখব।”

রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দফতরের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু বাবু বলেন, “দ্বন্দ্বের কোনও ঘটনাই এখানে নেই। এবার আমাদের উন্নয়নই হবে পুরভোটের হাতিয়ার।” রাজ্যের আরেক মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব পুরোপুরি খারিজ করেননি। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের দল একটি পরিবার। পরিবারে সবকিছুই হয়। এখন আমাদের লক্ষ্য পুরসভা ভোট। সব আসনে জয়ী হবে তৃণমূল।”

এ দিন দুপুরে প্রথমে পুরাতন মালদহের নেতা কর্মীদের নিয়ে মঙ্গলবাড়ির একটি সিনেমা হলে সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। কর্মিসভায় শুভেন্দু ছাড়াও জেলার দুই মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু, সাবিত্রী দেবী এবং জেলা সভাপতি সহ অনান্য প্রথম সারির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এখানে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাংসদ সকলকে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করার কথা বলেন। ২০টি আসনেই জয়ী হয়ে পুরসভাকে বিরোধী শূন্য করে দেওয়ার জন্য কর্মীদের আহ্বান জানান তিনি। দরকারে ভোটার তালিকা ধরে ধরে সকলের বাড়ি যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে ইংরেজবাজার পুরসভার কর্মিসভাতেও সকলকে একসঙ্গে চলার বার্তা দেন তিনি। একই সঙ্গে ১৫ মার্চের মধ্যে জেলা নেতৃত্বের প্রার্থীদের নামের তালিকা করে রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sabitri mitra suvendu adhikary maldaha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE