Advertisement
E-Paper

শব্দাসুরের তাণ্ডবে ত্রস্ত শহর

বিকেল গড়াতেই শিলিগুড়ি যেন শব্দনগরী! চারদিকে চকলেট বোমা সহ নানা বাজির কান ফাটানো শব্দে টেকা দায়। নাকে জ্বালা ধরাচ্ছে বাতাসে ভাসতে থাকা বারুদের গন্ধ। বৃহস্পতিবার, দীপাবলির সন্ধ্যায় এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে শিলিগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। তাতে শহরবাসীদের অনেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন। অনেকে আবার আতঙ্কিত। কারণ, পুলিশের সামনে রাস্তা আটকে দেদার আতসবাজি পোড়ানো হয়েছে। ফাটানো হয়েছে বিকট শব্দের বাজিও। পথচলতি পথচারী, যানবাহনের উপরেই কয়েক জায়গায় তুবড়ি, কালীপটকা ছুড়ে দেওয়ার দৃশ্যও দেখেছেন অনেকে।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫৬
আতঙ্কিত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ির বহু এলাকায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

আতঙ্কিত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ির বহু এলাকায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

বিকেল গড়াতেই শিলিগুড়ি যেন শব্দনগরী! চারদিকে চকলেট বোমা সহ নানা বাজির কান ফাটানো শব্দে টেকা দায়। নাকে জ্বালা ধরাচ্ছে বাতাসে ভাসতে থাকা বারুদের গন্ধ।

বৃহস্পতিবার, দীপাবলির সন্ধ্যায় এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে শিলিগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। তাতে শহরবাসীদের অনেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন। অনেকে আবার আতঙ্কিত। কারণ, পুলিশের সামনে রাস্তা আটকে দেদার আতসবাজি পোড়ানো হয়েছে। ফাটানো হয়েছে বিকট শব্দের বাজিও। পথচলতি পথচারী, যানবাহনের উপরেই কয়েক জায়গায় তুবড়ি, কালীপটকা ছুড়ে দেওয়ার দৃশ্যও দেখেছেন অনেকে। কয়েকটি এলারকায় পথচারী, বাইক আরোহীদের গায়ে বাজির আগুন লেগে জামাকাপড় পোড়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ। প্রায় রাতভর শব্দাসুরের এমন তাণ্ডব চললেও পুলিশ-প্রশাসন কেন নিষ্ক্রিয়, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাননি ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

পুলিশ-প্রশাসনের নজরে কিন্তু এ সব কিছুই পড়েনি। তাই শহরের প্রবীণ সাহিত্যিক, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, একাধিক প্রাক্তন আমলা আক্ষেপ করেছেন। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, কতটা শব্দ হচ্ছে সেটা কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহরের পরিবেশপ্রেমী অভিজিত্‌ মজুমদার, অনিমেষ বসু সহ অনেকেই। অনিমেষবাবু আজ, শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের হস্তক্ষেপ চাইবেন।

ঘটনাচক্রে, এ দিন সন্ধ্যার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী শহরের নানা এলাকায় ঘুরেছেন। একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেছেন। শহরের মূল রাস্তা তো বটেই, একাধিক গলি দিয়েই পুলিশের পাইলট নিয়ে যাতায়াত করেছে মন্ত্রীর গাড়ি। খোদ মন্ত্রীও দেখেছেন, অনেক জায়গায় রাস্তা আটকে আতসবাজি পোড়ানো হয়েছে। এমনকী, কয়েকটি জায়গায় তো মন্ত্রীর গাড়ির প্রায় সামনেই আতসবাজি পুড়েছে। কিন্তু, মন্ত্রী বিকট শব্দের বাজি ফাটার আওয়াজ সে ভাবে টের পাননি বলে দাবি করেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “শহরের কয়েকটা জায়গায় রাস্তা আটকে আতসবাজি পোড়ানোর দৃশ্য আমার চোখে পড়েছে। দু-এক জায়গায় তো গাড়ির উপরেই প্রায় আতসবাজি চলে এসেছে। কিন্তু, শব্দবাজির আওয়াজ আমি সে ভাবে শুনিনি। যাই হোক, নিষিদ্ধ শব্দবাজি রুখতে পুলিশ-প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হওয়ার জন্য বলা হবে।”

ঘটনা হল, দুর্গা পুজোর প্রাক্কালেও পুলিশ-প্রশাসন সজাগ থাকবে বলে একইরকম আশ্বাস পেয়েছিলেন শহরবাসী। কিন্তু, বিসর্জনের সময়ে দেখা গিয়েছে পুলিশের সামনেই বিকট শব্দের বাজি ফাটিয়ে হিলকার্ট রোড জুড়ে কয়েকটি পুজোর উদ্যোক্তারা নেচেছেন। কালীপুজোতে তা আরও বেড়েছে। শহরের শিলিগুড়ি, ভক্তিনগর ও প্রধাননগর থানার গা ঘেঁষে থাকা ফ্ল্যাটবাড়ির বাসিন্দাদের অনেকেই শব্দবাজির দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ। রাস্তাতে ছুড়ে ফেলা বাজির দাপটে কুঁকড়ে গিয়েছে পথচলতি শিশুরাও।

শিলিগুড়ি শহরের চম্পাসারি, নিবেদিতা রোড, হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তা আটকেও বাজি পোড়ানোর দৃশ্য দেখা গিয়েছে। শহরের হাকিমপাড়া, আশ্রমপাড়া, হায়দরপাড়া, ডাবগ্রাম, ভারতনদর, সুভাষপল্লি, এনজেপি এলাকার লেন, বাইলেন আটকে যথেচ্ছ বাজি পোড়ানোর দৃশ্যও দেখেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ পুলিশের অবশ্য এ সব নজরে আসেনি।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “শব্দবাজি কোথাও ফাটছে নাকি? অভিযোগ নেই তো। তবুও খোঁজ নেব।”

kishor saha siliguri firecrackers kali pujo noise
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy