Advertisement
১৮ মে ২০২৪

২০ দিন মায়ের দেহ আগলে সন্তানেরা

অন্তত ২০ দিন আগে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধা শিখা রায়ের (৬৫)। অথচ তাঁর প্রাণ ফিরবে আশায় গাঁয়ের কবিরাজের ওষুধ খাইয়ে যাচ্ছিলেন বাড়ির লোকজন। লেপ-কম্বল দিয়ে বিছানায় ঢেকে চলছিল ওষুধ খাওয়ানো। শরীরেও নানা রাসায়নিক মাখিয়ে রাখায় দুর্গন্ধ বার হয়নি। মায়ের মৃতদেহ ঘরে রেখেই দিব্যি রান্নাবান্না করে খেয়েছেন তাঁরা। অবশেষে পড়শিরা সন্দেহের বশে ঘরে ঢুকে দেহটি দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁর সুভাষপল্লি এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৫
Share: Save:

অন্তত ২০ দিন আগে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধা শিখা রায়ের (৬৫)। অথচ তাঁর প্রাণ ফিরবে আশায় গাঁয়ের কবিরাজের ওষুধ খাইয়ে যাচ্ছিলেন বাড়ির লোকজন। লেপ-কম্বল দিয়ে বিছানায় ঢেকে চলছিল ওষুধ খাওয়ানো। শরীরেও নানা রাসায়নিক মাখিয়ে রাখায় দুর্গন্ধ বার হয়নি। মায়ের মৃতদেহ ঘরে রেখেই দিব্যি রান্নাবান্না করে খেয়েছেন তাঁরা। অবশেষে পড়শিরা সন্দেহের বশে ঘরে ঢুকে দেহটি দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁর সুভাষপল্লি এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ গিয়ে বিছানায় কম্বল-লেপ ঢাকা অবস্থায় বৃদ্ধার পচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার করে। ওই বৃদ্ধার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। সেখানেই তারা রান্না করে খাচ্ছিলেন। দীর্ঘ দিন ধরে বৃদ্ধাকে দেখতে না পেয়ে সন্দেহের বশে খোঁজ খবর শুরু করে এলাকার বাসিন্দা ও পঞ্চায়েত সদস্যরা। বেশ কিছুদিন ধরে বিষয়টি ওই বৃদ্ধার ছেলে মেয়েরা এড়িয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার জোর করে ঘরে ঢুকে মশারির ভেতর লেপ ও কম্বল ঢাকা দেওয়া অবস্থায় ওই বৃদ্ধার মৃতদেহটি দেখতে পান বাসিন্দারা।

জয়গাঁ থানার ওসি কাশ্যপ রাই বলেন, “মৃতার নাম শিখা কর্মকার(৬০) মৃতদেহটি দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ২০-২২ দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে।” বৃদ্ধার তিন ছেলে মেয়ের মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। মৃতার তিন ছেলে মেয়ে সুবীর, সীমা ও ময়ূরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জয়গাঁ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সুভাষপল্লি এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য শ্যামলী বর্মন জানান, শিখা দেবী ও তার পরিবারের সদস্যদের মানসিক সমস্যা রয়েছে।

বৃদ্ধার ছেলে সুবীর ভুটানে একটি গ্যারেজে কাজ করেন। ওঁদের বাড়িতে বেশ কয়েক ঘর ভাড়াটেও রয়েছে। ওই বৃদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে অসুখে ভুগছিলেন। ছট পুজোর পর থেকে আর দেখা যায়নি তাঁকে। শ্যামলীদেবী বলেন, “বেশ কয়েকবার আমি নিজে ওঁর খোঁজ নেওয়ার জন্য ওর ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলি। তারা জানায় মা অসুস্থ। সেজন্য ফালাকাটায় কবিরাজের কাছে চিকিত্‌সা করানো হচ্ছে। পরে আর ওই বৃদ্ধার দেখা পাইনি।” দীর্ঘ দিন বৃদ্ধাকে না দেখে সন্দেহ হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে পাড়ার মহিলাদের নিয়ে জোর করে ওদের ঘরে ঢুকে পড়শিরা দেখেন, মশারির ভেতর পচা গলা মৃতদেহটি রয়েছে। পড়শিরা জানিয়েছে, মৃত দেহটি পচলেও কোন দুর্গন্ধ বের হয়নি। ফলে বাড়ির পাশে থাকা ভাড়াটেরাও বিষয়টি টের পাননি। মৃতার সন্তানেরা জানান এক কবিরাজ ওই বৃদ্ধা সুস্থ হয়ে যাবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

20days death alipurduar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE