প্রশাসনিক স্তরে একাধিক ফাঁকফোকর চিহ্নিত করে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ (এনআরএস) কর্তৃপক্ষকে শো কজ় নোটিস পাঠিয়েছিল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। তার পরেই নড়েচড়ে বসলেন কর্তৃপক্ষ। সোমবার এনআরএসের সমস্ত চিকিৎসক-অধ্যাপক, সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারের জন্য একটি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কলেজে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় উল্লেখ না করা হলে (ইন বা আউট নথিবদ্ধ না করালে) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি গরহাজির বলে ধরে নেওয়া হবে।
নোটিসে এ-ও বলা হয়েছে, প্রতি দিন বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উপস্থিতি জানান দিতে হবে। অনলাইনে আগাম অনুমতি নিলে, তবেই ছুটি মঞ্জুর করা হবে। না-বলে ছুটি নিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই নোটিসে।
গত ৬ মে এনআরএস কর্তৃপক্ষকে শো কজ়ের নোটিস পাঠায় জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। নোটিসে যে আট দফা ‘ফাঁকফোকর’ চিহ্নিত করা হয়, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, এনআরএসের ২০টি বিভাগের মধ্যে ১৮টিতেই চিকিৎসকদের হাজিরা সংক্রান্ত নথি অসম্পূর্ণ রয়েছে। এমবিবিএস পরীক্ষার সময় হলের মধ্যে অবাঞ্ছিত ভিড় এবং পরীক্ষার্থীদের কথা বলার দৃশ্যও সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বলে জানানো হয়।
শো কজ় নোটিসে বলা হয়, এনআরএসের অ্যানাটমি-সহ বেশ কয়েকটি বিভাগে কোনও সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক নেই। ৭৩ শতাংশ শয্যায় রোগী ভর্তি থাকলেও বাকি শয্যাগুলির কোনও তথ্য নেই বলে উল্লেখ করা হয় ওই নোটিসে। একদম শেষে এনআরএস কর্তৃপক্ষকে সাত দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয় যে, এই নিয়মভঙ্গের কারণে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে না।
আরও পড়ুন:
স্বাভাবিক ভাবেই কলকাতার অন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের চিঠি পৌঁছেছে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এক কর্তা জানান, তাঁরা চিঠি পেয়েছেন। আগের সব নির্দেশই পালন করা হয়েছে। জবাবি চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যভবনে। আরজি কর হাসপাতালের এক কর্তাও চিঠি পাওয়ার কথা জানান। তবে এই বিষয়ে সবিস্তার কিছু জানা যায়নি।