Advertisement
E-Paper

নোটিস, পত্রযুদ্ধের আঁচে আবার সরব বিরোধীরা

পুরভোটের আবহে ফের চর্চায় ফিরে এল সারদা-প্রসঙ্গ। সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের জেরে তৃণমূলের সুব্রত বক্সী-মুকুল রায়ের চিঠি-পাল্টা চিঠি ঘিরে সরগরম তৃণমূলের অন্দর। সিবিআই সূত্রের খবর, দলের হিসেব চেয়ে সুব্রত ও মুকুল— দু’জনকেই নোটিস পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা সারদা-প্রসঙ্গে আবার নতুন করে সরব হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৭

পুরভোটের আবহে ফের চর্চায় ফিরে এল সারদা-প্রসঙ্গ।

সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের জেরে তৃণমূলের সুব্রত বক্সী-মুকুল রায়ের চিঠি-পাল্টা চিঠি ঘিরে সরগরম তৃণমূলের অন্দর। সিবিআই সূত্রের খবর, দলের হিসেব চেয়ে সুব্রত ও মুকুল— দু’জনকেই নোটিস পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা সারদা-প্রসঙ্গে আবার নতুন করে সরব হয়েছে। শনিবারই পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব দাবি করেছেন, বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে লড়াই করে যে সব তৃণমূল নেতারা বিধায়ক হয়েছেন, তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘ভোট প্রচারে তৃণমূল প্রার্থীরা ১৫ লক্ষ টাকা করে পেয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ওই টাকা যে বেসরকারি লগ্নি সংস্থার কাছ থেকে এসেছিল, তাও প্রকাশ হচ্ছে। যাঁরা আমানতকারীদের কাছ থেকে লুঠ করা টাকা নিয়ে ভোটে জিতেছেন, তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে।’’

তৃণমূলের দুই নেতার চিঠি-চাপাটি প্রসঙ্গে এ দিন কটাক্ষ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। মধ্য কলকাতায় দলীয় এক প্রার্থীর প্রচারে অধীর বলেন, ‘‘সিবিআই হিসেব চাওয়ায় সুব্রত বক্সী বলছেন, সব মুকুল জানে। মুকুল বলছেন, তিনি নাকি সব হিসেব কালীঘাটে দিয়ে এসেছেন! আর কালীঘাট এখন মোদীর পায়ে ধরছে, যাতে সিবিআই থাবা
না মারে!’’

অবশ্য বিরোধীদের দাবি ও কটাক্ষকে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। রবীনবাবুর দাবি নিয়ে এ দিন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘রোজভ্যালি কাণ্ডে মানিক সরকার-সহ সিপিএম নেতাদের অনেকেরই নাম শোনা যাচ্ছে। রবীনবাবুরা আগে তাঁদের পদত্যাগ করান, তার পরে আমাদের কথা ভাববেন।’’ আর অধীরবাবুর কটাক্ষ নিয়ে পাথর্বাবুর মন্তব্য, ‘‘আগে উনি দলের সাইনবোর্ডটা রক্ষা করার দিকে মন দিন।’’ সিবিআইয়ের নোটিস পাঠানোর তোড়জোড় নিয়ে পার্থবাবু বলেন, ‘‘আমরা তো বার বার বলছি, সিবিআইয়ের চিঠি বা সমন যা-ই আসুক, আমরা তার জবাব দেব।
দল হিসেবে যা উত্তর দেওয়ার,
দেওয়া হবে।’’

সিবিআই সূত্রে খবর, তৃণমূলের বতর্মান সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রতকে নোটিস পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে সিবিআই। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, তথ্য জমা দেওয়ার কথা জানিয়েই ওই নোটিস পাঠানো হচ্ছে। একই সঙ্গে তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুলকেও ফের নোটিস পাঠানো হবে বলে সিবিআই সূত্রের খবর। সিবিআইয়ের এক আধিকারিক গত বৃহস্পতিবার সুব্রতবাবুর সঙ্গে কথা বলার জন্য তৃণমূল ভবনে ফোন করেছিলেন। তার পরের দিনই সুব্রত ও মুকুলের চিঠি-পাল্টা চিঠিতে সরগরম হয়ে ওঠে শাসক দলের অন্দর মহল। তৃণমূলের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে গত মাসের গোড়াতেই মুকুলকে চিঠি পাঠিয়েছিল সিবিআই। যার উত্তরে মুকুল জানিয়েছিলেন, তিনি আর দলের পদাধিকারী নন। ফলে ওই সব হিসেবপত্র তাঁর কাছে নেই। সে সব দলের হেফাজতে থাকার কথা।

সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার সুব্রতকে একই কথা জিজ্ঞাসা করা হবে। তিনিও যদি নথি না থাকার কথা জানান, তা হলে নথি কোথায় গেল, সে প্রশ্ন তুলবে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এক কর্তা বলছেন, ‘‘সুব্রত কী জবাব দেন, তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে।’’ কারণ, মুকুলকে লেখা তাঁর একটি চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দলের কাছে ওই নথি নেই বলেই সুব্রত লিখেছেন। তিনি ওই সব নথি মুকুলের কাছে চেয়েছেন। সুব্রত যদি একই কথা সিবিআইকে জানান, তা হলে ফের মুকুলকে ডেকে এ ব্যাপারে জেরা করবে সিবিআই।

সিবিআইয়ের একটি সূত্র বলছে, মুকুলের সঙ্গে আর কে কে দলের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত নথি দেখতেন, তা-ও জানতে চাওয়া হবে। প্রয়োজনে ওই নথি উদ্ধারের জন্য সেই সব ব্যক্তিকেও জেরা করা হতে পারে। সুব্রত যদি এ ব্যাপারে দলের অন্য কোনও নেতার নাম করেন, তাঁকেও ডেকে পাঠানো হতে পারে। সুব্রত-মুকুলের পাশাপাশি শাসক দল-ঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নকেও ফের ডাকতে পারে সিবিআই। তাঁকে অবশ্য এর আগেও এক বার ডাকা হয়েছিল।

kolkata corporation election Subrata Bakshi vs Mukul Roy saradha scam war of letters cbi notice cbi tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy