Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Panchayat Poll

পঞ্চায়েত সমিতিই হল না কেশিয়াড়িতে

কেশিয়াড়ি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিই পেয়েছিল বিজেপি। বাকি ১২টি তৃণমূল।

২০১৮ সালে কেশিয়াড়ির ফলে অশনি সঙ্কেত দেখেছিল রাজ্যের শাসক দল।

২০১৮ সালে কেশিয়াড়ির ফলে অশনি সঙ্কেত দেখেছিল রাজ্যের শাসক দল। ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২০
Share: Save:

এক পঞ্চায়েত ভোট গিয়ে সামনে আর এক পঞ্চায়েত ভোট চলে এল। অথচ এত দিনেও পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন হল না। নানা কারণে বারবার বোর্ড গঠন পিছিয়েছে। তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোরও চলেছে লাগাতার।

কেশিয়াড়ি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিই পেয়েছিল বিজেপি। বাকি ১২টি তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে ২১টি। বাকি ২০টির ক্ষমতায় তৃণমূলই। ভোটের পরপরই জেলার বাকি সব সমিতি গঠন হয়ে গেলেও একমাত্র বাকি পড়েছিল কেশিয়াড়ি। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠনের আর্জি নিয়ে হাই কোর্টে গিয়েছে বিজেপি। হাই কোর্ট সমিতি গঠনের নির্দেশও দিয়েছিল। তবু বোর্ড গঠন হয়নি।

২০১৮ সালে কেশিয়াড়ির ফলে অশনি সঙ্কেত দেখেছিল রাজ্যের শাসক দল। পরিস্থিতি দেখে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ নেমেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেশিয়াড়িতে এসে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ যে ‘ভুল’ করেছেন, তা স্বীকারও করেছিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে ‘ভুল’ না বোঝার আবেদন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অবশ্য সেই সভাতেও কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি গঠন নিয়ে কিছু বলেননি মমতা। তবে ওই সভার পরপরই ‘হারানো’ কেশিয়াড়ি ‘ফেরানো’র দায়িত্ব মমতা দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীকে। কেশিয়াড়িতে এসে বৈঠক করেন শুভেন্দু। তার পরে তো শুভেন্দুই বিজেপিতে চলে যান।

এই সময়ের মধ্যে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে দফায় দফায় দলবদলও হয়েছে। কখনও তৃণমূলের একাধিক সদস্য বিজেপিতে গিয়েছেন। কখনও বিজেপি সদস্যেরা গিয়েছেন তৃণমূলে। দলবদলের জেরে এখন পাল্লা ভারী তৃণমূলেরই। সমিতিতে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।

তা-ও কেন বোর্ড গঠন হচ্ছে না?

তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলের অনেকেই না-কি চান না, এখন আর বোর্ড গঠন হোক। কারণ, কেশিয়াড়িতেও দল গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত। বোর্ড গঠন হলে তা প্রকাশ্যে এসে পড়বে। তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার অবশ্য যুক্তি, ‘‘সমিতিতে বারবার সংখ্যার হেরফের হয়েছে। তাই বোর্ড গঠন হয়নি।’’ তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি আবার বলছেন, ‘‘মাঝে আইনশৃঙ্খলাজনিত কারণে বোর্ড গঠন স্থগিত হয়েছে। এখন তো বিষয়টি বিচারাধীন।’’ বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি শমিত দাশের নালিশ, ‘‘আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড করতে দেওয়া হয়নি। আসন্ন নির্বাচনে কেশিয়াড়ির মানুষ যোগ্য জবাব দেবেন।’’

বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতি গঠন না হওয়ায় কেশিয়াড়ির উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে। তবে এ প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি বিডিও বিপ্লব দত্ত। আর ব্লক প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘জেলা পরিষদ ও গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে উন্নয়নের‌ যাবতীয় কাজকর্ম ওখানে যথারীতি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Poll West Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE