Advertisement
E-Paper

দলে সংসদীয় মোহ বিরাজ করছে, সিপিএমের দলিলে ২৯ বছর পর ফিরল বসুর প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যানপর্ব

১৯৯৬ সালে অ-কংগ্রেসি দলগুলির সর্বসম্মত প্রস্তাব ছিল, জ্যোতি বসু হোন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সিপিএম তা মানেনি। যাকে বসু বলেছিলেন, ‘‘ঐতিহাসিক ভুল।’’

Parliamentarianism prevails within the party, mentioned in CPM’s document

—ফাইল ছবি।

শোভন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৫৭
Share
Save

জ্যোতি বসুর নাম নেই। তবে ঘুরিয়ে তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যানপর্বের কথা উল্লেখ করা হল সিপিএমের দলিলে। সেই সূত্রেই ২৯ বছর পর সিপিএমের নথিতে ফিরে এলেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য সিপিএমের ২৪তম পার্টি কংগ্রেসের প্রাক্কালে পর্যালোচনা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে দল। গত পার্টি কংগ্রেস থেকে এই পর্যন্ত দল যে যে কৌশল নিয়ে চলেছিল, তার বাস্তবায়ন উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। ২৩ পৃষ্ঠার রিপোর্টের ৭ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে ১৯৯৬ সালে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ‘নোট’-এর প্রসঙ্গ।

সিপিএমের দলিলে লেখা হয়েছে, ‘দলের মধ্যে সংসদীয় মোহ বিরাজমান। যা শুধু দলের রাজনৈতিক-রণকৌশলগত লাইনগত লাইনকে প্রভাবিত করছে না। পাশাপাশিই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কর্মীবাহিনীর উপর।’ এই প্রসঙ্গেই ১৯৯৬ সালে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সংশোধনী নোটের উল্লেখ রয়েছে দলিলে। লেখা হয়েছে, ‘১৯৯৬ সালে কেন্দ্রীয় কমিটি সংশোধনী নোটে সঠিক কথাই বলেছিল।’

সেই বছর অ-কংগ্রেসি দলগুলির সর্বসম্মত প্রস্তাব ছিল জ্যোতি বসু হোন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সিপিএম তা মানেনি। বসু, তৎকালীন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক হরকিষেণ সিংহ সুরজিৎ-সহ অনেকেই চেয়েছিলেন, দল প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রস্তাব গ্রহণ করুক। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে যায় বসুর প্রধানমন্ত্রিত্ব হওয়ার প্রস্তাব। যাকে পরে ‘ঐতিহাসিক ভুল’ বলেছিলেন স্বয়ং বসু। সেই পর্বে দলের মধ্যে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে। কিন্তু সিপিএম সেই সময়ে নোট প্রকাশ করে বুঝিয়ে দিয়েছিল, দল কোনও ভুল করেনি। দেশের সংসদীয় রাজনীতিতে সিপিএম যখন প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে, তখন ২৯ বছর আগের কথা উল্লেখ করে সিপিএম তাদের পার্টির দলিলে লিখল, সংসদীয় মোহ গ্রাস করেছে দলকে। যা গণআন্দোলন এবং শ্রেণি আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দল যে ভাবে কাজ করতে বলেছিল, রাজ্যে রাজ্যে তা বাস্তবায়িত হয়নি বলেও উল্লেখ করেছে সিপিএম। বলা হয়েছে, গত পার্টি কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, গ্রামাঞ্চলে মানুষের জীবন কী ভাবে বদলে যাচ্ছে, তাঁদের কাজের ধরন কেমন পরিবর্তিত হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত সমীক্ষা রিপোর্ট দলের কাছে জমা দিতে। দলিলের ৫ নম্বর পৃষ্ঠায় লেখা আছে, তামিলনাড়ু ছাড়া কোনও রাজ্য কমিটি সেই ‘আবশ্যক’ কাজটি করেনি। ঘুরিয়ে কেরল, বাংলা, ত্রিপুরার মতো বর্তমান বা একদা ক্ষমতার স্বাদ নেওয়া রাজ্য কমিটিগুলিরও সমালোচিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, অতীতে ইএমএস নাম্বুদিরিপাদের সময়ে এক বার ২৫ বছরের নির্বাচনী পর্যালোচনা দলিল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তা-ও এই ভাবে নয়। সিপিএম সূত্রে খবর, এই পরিকল্পনা যখন গৃহীত হয়েছিল, তখন সীতারাম ইয়েচুরি জীবিত। কারাটপন্থীদের অনেকে বলেছিলেন, সীতারাম যে সময় থেকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন, সেই থেকে এই পর্যন্ত ভোট কৌশলের পর্যালোচনা দলিল তৈরি হোক। কিন্তু তা হয়নি। গত তিন বছরের মেয়াদকে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে, স্থানীয় স্তরের ভোট হয়েছে এবং সর্বশেষ বড় নির্বাচন হয়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট। সিপিএম সর্বত্র ধাক্কা খেয়েছে।

CPM Jyoti Basu

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}