E-Paper

শিক্ষাকর্মীদের ভাতা: হতাশ পার্শ্বশিক্ষকরা

যেমন পার্শ্বশিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর পদ বাতিল হওয়ার পরে তাঁদের উপরে অস্বাভাবিক চাপ বেড়েছিল। আপাতত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫,৪০৪ জন শিক্ষক স্কুলে ফিরলেও সেই চাপ কমেনি।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:১২

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের সাম্মানিক ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রুপ সি কর্মীরা পাচ্ছেন ২৫ হাজার। গ্রুপ ডি-রা পাচ্ছেন ২০ হাজার। অথচ পার্শ্বশিক্ষক, একাদশ, দ্বাদশের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক, বৃত্তিমূলক শিক্ষকেরা বছরের পর বছর স্কুলে পড়িয়েও তুলনায় সামান্য টাকা পাচ্ছেন। বার বার ধর্না আন্দোলন করেও তাঁদের ভাতা বাড়ছে না বলে সরব হয়েছেন ওই সব শিক্ষকেরা। তাঁদের জন্য এখনও নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো তৈরিই হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। এখনও সামান্য ভাতায় কাজ করা পার্শ্বশিক্ষক, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক, বৃত্তিমূলক শিক্ষকদের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী কেন তাঁদের প্রতি একটু মানবিক হবেন না?

যেমন পার্শ্বশিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর পদ বাতিল হওয়ার পরে তাঁদের উপরে অস্বাভাবিক চাপ বেড়েছিল। আপাতত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫,৪০৪ জন শিক্ষক স্কুলে ফিরলেও সেই চাপ কমেনি। পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, “পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার কথা থাকলেও আমাদের স্কুলে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ— সব করতে হয়। শিক্ষকের অভাবে একাদশ-দ্বাদশের ক্লাসও নিই। এত দিন এত আন্দোলন, বিকাশ ভবনে এত ধর্নায় বসেও আমাদের জোটে মাত্র ১৩ হাজার টাকা। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্রতি মানবিক না-হলে ফের রাস্তায় বিক্ষোভে নামব।”

স্কুলের গরমের ছুটি পড়ছে ৩০ এপ্রিল। তেমন হলে গরমের ছুটির মধ্যেই ওঁরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিকের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক সমিতির শিক্ষকেরা। এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ সরকার বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রমে যে যে বিষয় আছে সেগুলো পড়াতেই হয়। সেই সঙ্গে নতুন নতুন বিষয়, যেমন ডেটা সায়েন্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়ও পড়াতে হচ্ছে। শিক্ষক কম থাকায় নবম, দশমের ক্লাসও নিচ্ছি। এত সব করেও মাসে পাই মাত্র ১৪,৭৭৫ টাকা।”

কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধীনে থাকা বৃত্তিমূলক শিক্ষক-প্রশিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে যাঁরা আংশিক সময়ের শিক্ষক তাঁদের ভাতা আট হাজার টাকা এবং যাঁরা চুক্তিভিত্তিক তাঁদের ভাতা ১৩ হাজার টাকা। এই বৃত্তিমূলক শিক্ষকদের উচ্চ মাধ্যমিকের বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, অটোমোবাইল, এগ্রিকালচারের মতো নানা বিষয় পড়াতে হচ্ছে। বৃত্তিমূলক আংশিক সময়ের শিক্ষক কঙ্কন দাস বলেন, “বহু স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক নেই। আমরা একাদশ ও দ্বাদশের বৃত্তিমূলক বিষয়গুলির ক্লাস তো নিচ্ছিই, একাদশ দ্বাদশের বাংলা, ইংরেজি থেকে বিজ্ঞানের বিষয়ের ক্লাসও নিতে হচ্ছে। ক্লাস নিতে আমাদের আপত্তি নেই। শিক্ষক না-থাকলে পড়ুয়াদের স্বার্থে ক্লাস নিতে চাই। কিন্তু গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র কর্মীদের মতো আমাদের ভাতা বাড়ানোর বিষয়ে কি মুখ্যমন্ত্রী মানবিক হবেন না?”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Part Time Teacher Bengal SSC Recruitment Case Government Allowance Contractual Teachers School Teachers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy