পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কিছু বিষয়ে সরাসরি ভর্তি আর কিছু বিষয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা কেন, প্রশ্ন তুলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ইচ্ছাতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরের কলা বিভাগে প্রবেশিকা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে অনেকের অভিযোগ। পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে প্রবেশিকা ফিরিয়ে আনা হলেও আবার বিভ্রাট ইতিহাসের মেধা-তালিকায়। বৃহস্পতিবার ফের সরব হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। প্রশ্ন তুলেছেন প্রবেশিকার খাতা দেখা নিয়ে।
‘‘খাতা কী করে দেখা হয়, আমি প্রথম থেকেই সেই প্রশ্ন তুলেছিলাম,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ অনেকেই মেধা-তালিকা নিয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক এবং অন্য বোর্ডের পরীক্ষায় যাঁরা ৮০-৯০% নম্বর পেয়েছেন, তাঁদের অনেকে শূন্য, এক, দুই, আড়াই পেয়েছেন প্রবেশিকায়। মন্ত্রীর প্রশ্ন, খাতা ঠিক ভাবে দেখা হয়েছিল তো? উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় উপরের দিকে থাকা এক পড়ুয়ার প্রবেশিকার নম্বর বাড়ে রিভিউয়ের পরে। ‘‘যাঁরা আন্দোলন করছিলেন, তাঁরা এখন কী বলবেন? শুনলাম, ডিন ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি দায় এড়াতে পারেন না,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
ইতিহাসের মেধা-তালিকার বিভ্রাট নিয়ে তদন্ত হবে বলে জানান যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। ইতিহাসের উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষক প্যানেল ঠিক করেছেন তিনি নিজেই। তাতে বাইরের পরীক্ষক থাকছেন কি না, জানাননি উপাচার্য। শুধু বলেছেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে যোগ্যতমদেরই প্যানেলে রাখা হবে।’’
আরও পড়ুন: বিশ্বাস রাখুন, দূরে যাবেন না, আদিবাসীদের আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর
উপাচার্য জানান, ইতিহাসের উত্তরপত্র মূল্যায়নে যে পদ্ধতিগত ভুল হয়েছে, বুধবার তাঁকে তা বলেন ইতিহাসের বিভাগীয় প্রধান তথা কলা বিভাগের ডিন শুভাশিস বিশ্বাস। ‘‘তার পরে পদক্ষেপ না-করে উপায় ছিল না আমার,’’ বলেন উপাচার্য। এ দিন শুভাশিসবাবুকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়ার দায়িত্ব থেকেও। শুভাশিসবাবু অবশ্য ইতিহাসের উত্তরপত্র মূল্যায়নে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলেই মনে করছেন। উপাচার্যকে চিঠি লিখে ডিনের পদ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। উপাচার্য জানান, বিষয়টি কর্মসমিতিই দেখবে। তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
ইতিহাস বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষক এ দিন উপাচার্যকে লিখিত ভাবে জানান, যদি বাইরের পরীক্ষকদের দিয়ে খাতা যাচাই করা হয়, তাঁরা চলতি শিক্ষাবর্ষের কোনও ভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকবেন না। শিক্ষক সমিতি জুটা বৈঠক ডেকে ভর্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছে। আর পড়ুয়ারা জানিয়ে দেন, ভর্তির ক্ষেত্রে কোনও যোগ্য ছাত্র বা ছাত্রীকে বঞ্চিত করা হলে তাঁরা তা মানবেন না।
ইতিহাসের মেধা-তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা প্রীতম রায় প্রথমে যে-কলেজে ভর্তি হন, সেখান থেকে বদলি সার্টিফিকেট নিয়ে যাদবপুরে ভর্তি হতে এসেছিলেন। ভর্তি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বিভ্রান্ত প্রীতম বলেন, ‘‘কী হবে, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম গ্রন্থন সেনগুপ্ত ইতিহাসের মেধা-তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন তিনি। ‘‘এখানে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলে ভর্তি হয়ে যাব। তার পরে সিদ্ধান্ত নেব— যাদবপুরে পড়ব না প্রেসিডেন্সিতে,’’ বলেন গ্রন্থন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy