প্রতীকী ছবি।
রাজ্য জুড়ে পুজো কমিটিগুলির জন্য টাকা বরাদ্দ করছে রাজ্য সরকার। অথচ বরাদ্দেরই অভাবে বন্দিদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক বকেয়া থাকছে!
কেন বন্দিরা পরিশ্রম করেও প্রাপ্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না, সম্প্রতি আরটিআই বা তথ্য জানার অধিকার আইনে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে সংশ্লিষ্ট জেল-কর্তৃপক্ষ ওই বরাদ্দের অভাবের কথাই বলেছেন।
এক সময় দমদম কেন্দ্রীয় জেলে ছিলেন ‘রাজনৈতিক’ বন্দি প্রসূন চট্টোপাধ্যায়। তখন তাঁর কাজের মজুরি বকেয়া ছিল। সেই বিষয়ে অগস্টের শুরুতে আরটিআই করেন প্রসূনের দাদা প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়। তার জবাবে সপ্তাহ দুয়েক আগে দমদম জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, যখন ফান্ড বা তহবিল পাওয়া যায়, তখন নির্দিষ্ট হারে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। কেন ওই সংশ্লিষ্ট বন্দি পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না? জেল-কর্তৃপক্ষ জানান,
তাঁরা বন্দিদের মজুরি বাবদ প্রাপ্য দেওয়ার জন্য (সরকারের কাছ থেকে) বরাদ্দ অর্থ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রসূনের ২০১৭-র ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত পারিশ্রমিক বকেয়া রয়েছে।
কারা দফতরের খবর, অনেক বন্দির ছয় থেকে ১০ মাসের পারিশ্রমিক বকেয়া রয়েছে। দমদম, মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলে এই সমস্যা বেশি। আলিপুর, প্রেসিডেন্সি সেন্ট্রাল জেলে তুলনায় এই সমস্যা কম। কী কারণে বন্দিদের প্রাপ্য বকেয়া থাকছে? জবাব এড়িয়ে এক কারাকর্তা বলেন, ‘‘বরাদ্দের বিষয়ে অর্থ দফতরে ফাইল গিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।’’
গত বছর বন্দিদের পারিশ্রমিক এক লাফে অনেকটা বেড়েছে। সেই জন্য এই সমস্যা চলছে বলে মনে করছেন কারাকর্তাদের একাংশ। পরিশ্রম ও কর্মদক্ষতার নিরিখে দণ্ডিত বন্দিদের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়: দক্ষ, কম দক্ষ এবং অদক্ষ। সেই হিসেবে প্রতিদিন যথাক্রমে ৫০, ৪০ এবং ৩০ টাকার আশেপাশে পারিশ্রমিক পেতেন তাঁরা। এখন তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ১০০, ৯০ এবং ৮০ টাকা। গত বছর যখন পারিশ্রমিক বাড়ানো হয়, সেই সময় অবশ্য বরাদ্দ নিয়ে সমস্যায় হয়নি। এই শ্রমের অর্থ বন্দিরা শুধু জেলেই খরচ করেন না, বাড়িতেও পাঠান। এই অর্থ দরিদ্র বন্দিদের সংসারের হাল টানতেও সাহায্য করে। এর আগে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় এবং হাওড়া জেলা জেলে নিয়মিত মজুরির দাবিতে অনশন করেছিলেন বন্দিরা।
সেই দাবি ফের উঠেছে। সেই সঙ্গে উৎসবে বন্দিদের জন্য বোনাসের দাবি তুলেছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রঞ্জিত শূর বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলির জন্য ২৮ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে। অথচ বন্দিদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক বকেয়া রেখেছে। বন্দিদের পরিবার আছে। তাঁদেরও পুজো রয়েছে। সেটা তো সরকারের ভাবা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy