Advertisement
E-Paper

ট্রেনের খবর জানতেও চরম হয়রানি

শনিবার দুপুরে শিয়ালদহ স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, বহু মানুষ উদ্বিগ্ন মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অজস্র প্রশ্ন নিয়ে। কিন্তু বেশির ভাগেরই জবাব পাচ্ছেন না। বিরক্ত, ক্ষুব্ধ ও হতাশ যাত্রীদের প্রশ্ন, ট্রেন ছাড়বে না বা কবে থেকে ট্রেন চলবে— এ সব জানতে কেন শিয়ালদহ বা হাওড়া স্টেশনে যেতে হবে? মাইকেও কেন ট্রেন বাতিলের ঘোষণা হচ্ছে না ঠিক মতো?

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শমীক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০০
মরিয়া:  জানলা গলে কামরূপ এক্সপ্রেসে। শনিবার হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

মরিয়া: জানলা গলে কামরূপ এক্সপ্রেসে। শনিবার হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

শিয়ালদহ স্টেশন। শনিবার দুপুর দু’টো। জলপাইগুড়ির বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় অনুসন্ধান কাউন্টারে অভিযোগ করলেন, ৩ সেপ্টেম্বর পদাতিক এক্সপ্রেস বাতিল হয়েছে, কিন্তু মোবাইলে ‘মেসেজ’ পাননি। তাঁর প্রশ্ন, ৪ সেপ্টেম্বর কি ওই ট্রেন চলবে?

বেলা আড়াইটে। কলকাতার বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা উজ্জ্বল জায়সবাল শিলিগুড়ির ভক্তিনগরে বোনের বাড়িতে পাঠাবেন মাকে। দার্জিলিং মেলের টিকিট কাটা ৩ সেপ্টেম্বরের। ট্রেন বাতিল হয়েছে খবর পেয়ে এসেছেন। লক্ষ্য, টিকিট বাতিল করে ৭ সেপ্টেম্বরের টিকিট কাটা। কাউন্টারের কর্মী তাঁকে জানালেন, ওই দিন দার্জিলিং মেল চলবে কি না জানি না।

দু’জনকেই পাঠানো হলো তিনতলায় রিজার্ভেশন কাউন্টারে। সেখানে জানানো হলো, ওই দু’দিন ওই দু’টি ট্রেন চলবে না, এমন নির্দেশ নেই। তবে শনিবার কামরূপ এক্সপ্রেস চলবে। উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস, কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস, দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেস, তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস কবে ছাড়বে— তা নিশ্চিত করে জানাতে পারছেন না রেল-কর্তারাও।

শনিবার দুপুরে শিয়ালদহ স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, বহু মানুষ উদ্বিগ্ন মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অজস্র প্রশ্ন নিয়ে। কিন্তু বেশির ভাগেরই জবাব পাচ্ছেন না। বিরক্ত, ক্ষুব্ধ ও হতাশ যাত্রীদের প্রশ্ন, ট্রেন ছাড়বে না বা কবে থেকে ট্রেন চলবে— এ সব জানতে কেন শিয়ালদহ বা হাওড়া স্টেশনে যেতে হবে? মাইকেও কেন ট্রেন বাতিলের ঘোষণা হচ্ছে না ঠিক মতো?

কম অসহায় নন কাউন্টারের কর্মীরাও। সর্বশেষ তথ্য পাচ্ছেন না তাঁরাও। এত মানুষ ফোনে বা সশরীর অনুসন্ধান কাউন্টারে গিয়ে প্রশ্ন করছেন যে, অনেকে উত্তেজিত হয়ে উত্তর দিচ্ছেন বা চুপ করে থাকছেন। খারাপ ব্যবহারও করছেন অনেকে।

বেসরকারি সংস্থা বা বিপণিতে ভিড় বাড়লে চাপ সামলাতে কর্তারাও চলে আসেন কাউন্টারে। কিংবা বাড়তি কর্মীর ব্যবস্থা করেন। সেই মানসিকতা রেলে কোথায়— আক্ষেপ দীর্ঘক্ষণ কাউন্টার সামলানো এক রেলকর্মীর। প্রায় এক মাস ধরে বন্যার জন্য অসম, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কলকাতা-সহ বাকি দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। হাজার হাজার যাত্রী আটকে। এমন বিপর্যয়ের মধ্যে যাত্রী-দুর্ভোগ কমাতে রেলের কর্তারা আদৌ কি কিছু করছেন? একই প্রশ্ন বহু যাত্রীর। রেল-কর্তাদের গতে বাঁধা দাবি, ট্রেন বাতিল হলে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে পূর্ব রেলের এক কর্তার যুক্তি, দিন কয়েকের জন্য কোনও দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হলে ‘কম্পিউটারাইজড রিজার্ভেশন সিস্টেম’-এ তার উল্লেখ থাকে না। বন্যার কারণে প্রতি দিনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এক বা দু’দিন আগে ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত হচ্ছে। তাতে সমস্যা হচ্ছে কিছু।

Sealdah railway station Train Inquiry Counter শিয়ালদহ স্টেশন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy