Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রী আসুন, চাইছে দেগঙ্গা

গলা ফাটিয়ে বললেন, ‘‘ছেলেটা আরজিকর হাসপাতালে মরে গেল। ডাক্তাররা লিখলেন, ডেঙ্গি হয়েছে। এ সব কি তা হলে ভুল? ডেঙ্গি যদি না-ই হয়েছে, তা হলে ডাক্তাররা সে কথা লিখলেন কেন?’’

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪১

সদ্য সন্তানহারা অপর্ণা দাসের গালে শুকিয়ে আসা জলের দাগ। চোদ্দো বছরের ছেলে রাহুলের মৃত্যুর শংসাপত্র হাতে নিয়ে উত্তেজনায় কাঁপছিলেন। গলা ফাটিয়ে বললেন, ‘‘ছেলেটা আরজিকর হাসপাতালে মরে গেল। ডাক্তাররা লিখলেন, ডেঙ্গি হয়েছে। এ সব কি তা হলে ভুল? ডেঙ্গি যদি না-ই হয়েছে, তা হলে ডাক্তাররা সে কথা লিখলেন কেন?’’

হাবরার দাসপাড়ায় থাকত রাহুল। কাঁদতে কাঁদতে মা বলে চলেন, ‘‘যার ছেলে কোল ফাঁকা করে চলে যায়, শুধু সেই বোঝে কী যন্ত্রণা!’’

দেগঙ্গার বেলেডাঙা দাসপাড়া বৃহোতি দাস কলেজে পড়তেন। অষ্টমীর দিন আরজিকরে মারা যান। মৃত্যুর কারণ হিসাবে শংসাপত্রে লেখা ‘ডেঙ্গি।’ জ্বরের হাত থেকে ছেলেকে রক্ষা করতে মা লীনাদেবী হাড়োয়ায় বাপের বাড়িতে এসেছেন। শুক্রবার সেখানেই বৃহস্পতির ঠাকুর্দা বলাই দাস বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথায় আমরা ব্যথিত। ওঁকে ভুল বোঝানো হয়েছে।। উনি এক বার এলাকায় এলেই পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন।’’

দেগঙ্গা, হাবরা, বসিরহাট, বাদুড়িয়া, গাইঘাটা— উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ জ্বরে
আক্রান্ত। একের পর এক মৃত্যু ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে বসে জানান, দেগঙ্গায় ডেঙ্গি ছড়ায়নি, এ কথাটা তাই হজম করতে পারছেন না মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘ওঁকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। এক বার এলাকা ঘুরে দেখুন উনি।’’

একে তো মশা মারায় তেমন গা লাগাচ্ছিল না স্বাস্থ্য দফতর— এমন ক্ষোভ ছিলই। মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির পরে ব্লিচিং ছড়ানো, মশা মারার তেল স্প্রে করার উদ্যোগে আরও ঢিলেমি দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ দেগঙ্গাবাসীর। সেই ক্ষোভের প্রতিফলন দেখা গেল এ দিন। কলসুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি করে জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলেন রোগীরা। সেখানে গিয়েছিলেন দেগঙ্গার তৃণমূল বিধায়ক রহিমা বিবি। চার চিকিৎসকের আসার কথা ছিল। এসেছিলেন এক জন। বিধায়ককে দেখে ক্ষিপ্ত হন রোগীরা। মন্তব্য আসে, ‘‘মজা দেখতে এসেছেন?’’ পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ আসে।

বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এ দিনও ছিল লাইন। রক্ত পরীক্ষা করানোর লাইনে মাথা ঘুরে পড়লেন রামনাথপুরের বৃদ্ধা সাবিত্রীবালা দাস। পাশেই দাঁড়িয়ে ঘোষালের আবাদ গ্রামের গীতা পাড়ুই। কপালের ঘাম মুছে বললেন, ‘‘আমরাও তো মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী একবার দেখে যান, কী অবস্থায় আছি সকলে।’’

Dengue Deganga Fever Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy