Advertisement
E-Paper

নেতার বাইক চালিয়ে ‘দাদা’ হয়েছিল তহির

সাহেবনগরের রাস্তায় মাচাগুলো খাঁখাঁ করছে। ছেঁড়া ত্রিপলের আড়ালে খান কয়েক চায়ের দোকান আছে বটে তবে দু’দিন ধরে তাদের গায়ে বাঁশের দরমা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১১
জনতার সঙ্গে আলোচনায় পুলিশ। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

জনতার সঙ্গে আলোচনায় পুলিশ। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

সাহেবনগরের রাস্তায় মাচাগুলো খাঁখাঁ করছে। ছেঁড়া ত্রিপলের আড়ালে খান কয়েক চায়ের দোকান আছে বটে তবে দু’দিন ধরে তাদের গায়ে বাঁশের দরমা। ইতিউতি গাছতলায় চাক বাঁধা ভিড় অবশ্য চোখে পড়ছে আর সেখানে কান পাতলে দু-চার শব্দের পরেই ভেসে আসছে নামটা তহিরুদ্দিন। তৃণমূলের দাপুটে ব্লক সভাপতি না থেকেও এখনও প্রবল ভাবে ঘুরপাক খাচ্ছেন সাহেবনগরে। তবে সীমান্ত থেকে মেরেকেটে কিলোমিটার দুয়েক দুরে জলঙ্গির গ্রাম বালিবোন। সেখানেই আটপৌরে গৃহস্থ পরিবারে বেড়ে ওঠা তহিরুদ্দিনের এমন দাপট হল কী করে?

তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা বলছেন, ‘‘স্থানীয় কাজিপাড়া হাইস্কুলে পড়ার সময় থেকেই একটু দাদাগিরির স্বভাব ছিল তহিরুদ্দিনের। পরে সেটা রাজনীতির কাজে ব্যবহার করেছে।’’ তবে স্থানীয় গ্রামবাসীদের অনেকের দাবি সীমান্তে পাচারের কাজে হাত পাকিয়েই তার দাপটের শুরু। জলঙ্গির ধনিরামপুর সীমান্তের চায়ের দোকান থেকে রাজনীতির উঠোন— তার প্রথম জীবনের পাচার-কথা নিয়ে চর্চা নতুন করে শুরু হয়েছে।

বাম জমানায় স্থানীয় এক দাপুটে সিপিএম নেতার বাইক-চালক হিসেবে রাজনীতিতে হাতেখড়ি তাঁর। সেই সঙ্গে শুরু হয় ঠিকাদারির কারবার। ফুলে-ফেঁপে ওঠে তহির।

স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘রাজ্যে পালাবদলের পরেই তাকে প্রায় লুফে নিয়েছিল দল। মান্নান হোসেনের হাত ধরে একেবারে ব্লক সভাপতি। বিরোধীদের অভিযোগ, কেবল লুফে নেওয়ার নয়, একেবারে ব্লক সভাপতির পদে বসিয়ে দেওয়া হয় এলাকার একজন ‘সমাজবিরোধী’কে। আর রাজনৈতিক ক্ষমতা হাতে পেয়েই নিজেকে এলাকার শেষ কথা ভাবতে শুরু করে তহির।’’

জলঙ্গির কংগ্রেস নেতা আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলছেন, ‘‘ছাত্র অবস্থা থেকেই ফেনসিডিল পাচার করে হাত পাকানো শুরু করেছিল তহির। পাচারের কারবারে ব্যাঙ্ক-ব্যালান্স ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল তার। আর সেই সঙ্গে দাপুটে সিপিএম নেতা রফিকুল হাসানের ছায়া সঙ্গী হিসেবে এলাকায় নিজের দাপট বাড়িয়ে নেয় সে।’’ এই তার উত্থানের গল্প।

এক দিকে অর্থ অন্য দিকে রাজনৈতিক ক্ষমতায় বলিয়ান হয়ে রীতিমতো সীমান্তের বাহুবলী হয়ে দাঁড়ায় তহির। জলঙ্গির পোড়খাওয়া সিপিএম নেতা প্রাক্তন

সিপিএমের বিধায়ক ইউনুস সরকার বলেন, ‘‘হ্যাঁ শুনেছি এক সময়ে আমাদের দলের এক জনের মোটরবাইক চালাত তহির। তবে ওই পর্যন্ত। কিন্তু তৃণমূলের টাকার এবং মাসল পাওয়ার দুটোই দরকার ছিল, ফলে তহিরকে একেবারে ব্লক সভাপতির আসনে বসিয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করেছে তৃণমূল।’’

জলঙ্গির বালিবোনা এলাকায় মস্ত বড় বাগানবাড়ি তহিরুদ্দিনের। বাড়িতেই মদের দোকান। ধনিরামপুর বাজার ছাড়াও বহরমপুরে নিজস্ব বাড়ি আর গোটাকয়েক গাড়ি। সেই বাড়ি এখন তালাবন্ধ। ফোনে সাড়া দিচ্ছেন না। মেসেজ করলেও আসেনি তার জবাব।

Sahebnagar Murder TMC Jalangi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy