অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরোগ্য কামনা। হাসপাতালের কাছে পোস্টার হাতে। শনিবার সুমন বল্লভের তোলা ছবি।
মিন্টো পার্কের নার্সিংহোমের গেটের বাইরে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে চাকবাঁধা ভিড়টা সকাল-সন্ধ্যা থেকেই যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যখন ওই নার্সিংহোমে ঢুকছেন বা বেরোচ্ছেন, সেই মুহূর্তে ভিড়টা যেন আরও গাঢ় হচ্ছে। ভিড়ের মধ্যে থেকেই উদ্বিগ্ন কিছু তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক বা সাধারণ মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেমন আছেন। বেশির ভাগ সময়েই কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার ইকো পার্কের বিজয়া সম্মেলন থেকে রাত সওয়া ন’টা নাগাদ মমতা সোজা নার্সিংহোমে পৌঁছোন। ছিলেন ভোর সওয়া তিনটে পর্যন্ত। তখনও গেটের মুখে অভিষেকের ছবি এবং তাঁর কল্যাণ কামনা করে লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে
জমে ছিল ভিড়টা। মাঝেমাঝে স্লোগানও দেওয়া হচ্ছিল তাঁর আরোগ্য কামনা করে। তৃণমূল সূত্রের খবর, শনিবার কালীঘাটে দলের নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকে মমতা জানান, শুক্রবার রাতে অভিষেকের শরীরটা একটু খারাপ হয়েছিল।
ঘুমের সমস্যা হচ্ছিল। আর নাড়ির গতি আর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ওঠানামা করছিল।
নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেকের শারীরিক অবস্থা দেখার পরেই শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ বিশেষ অনুরোধ পাঠিয়ে প্রবীণ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়কে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাত আড়াইটে নাগাদ আসেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ সমীর বিশ্বাস। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের মতো অনেকেই নার্সিংহোমে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। এত রাত পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন এবং একাধিক চিকিৎসক আসছেন দেখে বাইরে জমাট ভিড় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন হয়েছিল। নার্সিংহোম ছাড়ার সময় মমতা সবাইকে আশ্বস্ত করে যান।
নার্সিংহোম সূত্রের খবর, শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কের এমআরআই হওয়ার কথা ছিল। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত তা হয়নি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তরুণ সাংসদের ঘুমের সমস্যা হয়েছে। এর কারণ মূলত ট্রমা। তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ওঠানামা করছে বলে একটু নিঃশ্বাসের কষ্ট রয়েছে। নাড়ির গতিও অনিয়মিত। তাঁকে পরীক্ষার জন্য এ দিন রাতে প্রবীণ বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়কেও নিয়ে আসা হয়। তিনি অভিষেককে পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন।
নার্সিংহোম থেকে শুক্রবার কোনও মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশিত হয়নি। শুক্রবার রাতেই অভিষেককে ‘স্পেশ্যাল ক্রিটিক্যাল রুম’-এ স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। শনিবার সকালে একটি বুলেটিন বার করা হয়। তাতে বলা হয়েছিল, অভিষেকের জ্বর ও শরীরে ব্যথা রয়েছে। অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। চোখ পরীক্ষাও হয়েছে। শনিবার বিকেল বা সন্ধ্যায় আর কোনও বুলেটিন প্রকাশিত হয়নি। শনিবারও গভীর রাত পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে ছিলেন। রাতে এসে অভিষেককে আবার দেখে যান চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, পরবর্তী চিকিৎসার পদক্ষেপ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা সোমবার বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy