Advertisement
E-Paper

জেলেই হিটার জ্বালিয়ে মোচ্ছব

তিন বাংলাদেশি বন্দি পালানোর মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় আলিপুর জেলের ভিতরে ‘রাউন্ড’ দিতে বেরিয়ে বন্দিদের এমনই ‘মোচ্ছব’ চোখে পড়ল ওই রেঞ্জের ডিআইজি বিপ্লব দাসের। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই সব হিটার বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। জেলে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৬

মাদক থেকে মোবাইল সবই ঢুকছে জেলে। তবে চোরাপথে। রক্ষীদের নজর এড়িয়ে। কিন্তু সেলেই সমানে জ্বলছে হিটার। তাতে খুশিমতো তৈরি হচ্ছে খাবারদাবার। কখনও চা-কফি, কখনও বা পোলাও-মাংস। গোগ্রাসে, সোল্লাসে খাচ্ছেন বন্দিরা।

তিন বাংলাদেশি বন্দি পালানোর মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় আলিপুর জেলের ভিতরে ‘রাউন্ড’ দিতে বেরিয়ে বন্দিদের এমনই ‘মোচ্ছব’ চোখে পড়ল ওই রেঞ্জের ডিআইজি বিপ্লব দাসের। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই সব হিটার বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। জেলে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

গত রবিবার আলিপুর জেলের ১৫ ফুট উঁচু পাঁচিল টপকে পালিয়েছে তিন বাংলাদেশি বন্দি। তার পয়েক দিন পরে হুগলি জেলে বন্দিরা কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছে। পুড়িয়ে দিয়েছে জেলের গ্রন্থাগার। বন্দিদের তাণ্ডবে জেলকর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে জখম হয়েছেন বন্দিরাও। আলিপুরে বন্দি পালানোর জেরে ইতিমধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে তিন কারাকর্মীকে। বদলি করা হয়েছে জেলের সুপার এবং এক জেলারকে। কিন্তু এ-সব সত্ত্বেও যে জেলের ভিতরের চিত্রটা পাল্টায়নি, হিটার জ্বালিয়ে বন্দিদের তা এই মোচ্ছবেই তার প্রমাণ মিলেছে।

আলিপুরে বন্দি পালানোর পরে পরেই একটি নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যের কারা দফতর। তাতে বলা হয়েছিল, সব জেলে বন্দিদের সেলে যখন-তখন তল্লাশি চালাতে হবে। সেলের মধ্যে মাদক, মোবাইল, ধারালো অস্ত্র-সহ আপত্তিকর কোনও বস্তু আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। থাকলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ওই সব বন্দিদের বদলি করে দিতে হবে ওই জেলের অন্যত্র কিংবা অন্য জেলে।

ওই নির্দেশ মেনেই আলিপুর জেলের দায়িত্বে থাকা প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি বিপ্লব দাস হঠাৎই শুক্রবার সকালে তল্লাশি শুরু করেন জেলের মধ্যে। তখনই ১০-১২ জন বন্দির সেল থেকে উদ্ধার হয় হিটার। এক কারারক্ষীর কথায়, ‘‘সেলের মধ্যে ‘প্লাগ পয়েন্ট’ নেই। ইলেকট্রিক তারের মোড়ক ব্লেড দিয়ে চিরে তার বার করে হিটারের কানেকশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’’ তার পরেই হিটারগুলি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

যদিও এই ধরনের বেআইনি কাজকর্ম আলিপুর কেন, রাজ্যের কোনও জেলে নতুন নয় বলেই জানাচ্ছেন কারা দফতরের প্রবীণ কর্তারা। এক কারাকর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন জেলে যে-সব দাগি অপরাধী দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে, তাদের মৌরসি পাট্টা তৈরি হয়ে যায়। তাদের হাত দিয়েই জেলে মাদক পাচারের ঘটনা ঘটে। তাদের সেলেই হিটার-সহ বেশ কিছু বেআইনি জিনিসপত্র রাখা থাকে। নিয়মিত সেলের মধ্যে চা-কফি, মাংস, ফল, আনাজ সরবরাহ করেন কর্তব্যরত কারারক্ষীরাই।’’

এ দিনের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে আরও এক বার সেটাই যে দেখিয়ে দিয়েছে, তা এক বাক্যে মেনে নিচ্ছেন জেলের তাবড় কর্তারা।

Picnic Prison Heater
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy