Advertisement
২১ মে ২০২৪

ফের-ভোটের বুথে অন্য ছবি

পুরভোটের ‘বিপুল’ সাফল্যে তৃণমূল উল্লসিত। কিন্তু তা মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাঁদের ঢাল পুনর্নির্বাচনের বুথগুলি। অভিযোগহীন ভোটে ওই ছয় বুথের পাঁচটিতেই জিতেছেন বিরোধীরা। যা দেখে বিরোধী দলগুলি বলেছে, গোটা পুরভোট ‘ঠিকঠাক’ হলে তৃণমূলকে বেগ পেতে হতো।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৭ ০৩:২২
Share: Save:

পুরভোটের ‘বিপুল’ সাফল্যে তৃণমূল উল্লসিত। কিন্তু তা মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাঁদের ঢাল পুনর্নির্বাচনের বুথগুলি। অভিযোগহীন ভোটে ওই ছয় বুথের পাঁচটিতেই জিতেছেন বিরোধীরা। যা দেখে বিরোধী দলগুলি বলেছে, গোটা পুরভোট ‘ঠিকঠাক’ হলে তৃণমূলকে বেগ পেতে হতো।

উদাহরণ হিসেবে বিভিন্ন পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডের ফল তুলে ধরছেন বিরোধীরা। ডোমকলে তৃণমূল সব মিলিয়ে ভোট পেয়েছে ৮৪%। বেশ কয়েকটি বুথে বিরোধী দলগুলি মিলিত ভাবে ১০০ ভোটও পায়নি। সেখানে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন সাকুল্যে একটি ভোট। আবার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আমিনাবাদের দু’টি বুথে ভোটের দিন বহিরাগতদের সঙ্গে জোট সমর্থকদের মারপিট হয়। তার জেরে আঁটোসাটো নিরাপত্তায় পুনর্নিবার্চন হয়। সেই দু’টি বুথ-সহ ওই ওয়ার্ডটি সিপিএম দখল করেছে। অথচ তার ঠিক পাশের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছেন ৩৪৬১টি ভোট। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিপিএম পেয়েছে ৮৭ভোট।

পূজালিতে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি বুথে ভোটযন্ত্র ভাঙা ও গোলমালের জন্য আবার ভোট নেওয়া হয়। তার একটিতে তৃণমূল সামান্য ভোটে জিতলেও বাকি দু’টি বুথে জিতেছে কংগ্রেস এবং বিজেপি। ৯ নম্বর ওয়ার্ডটিও জিতেছে বিজেপি।

রায়গঞ্জের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ নম্বর বুথে পুনর্নির্বাচন হয়েছিল। সেখানে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ৮৩১ ভোট, তৃণমূল ৫৬টি। রায়গঞ্জের আরও অনেক বুথে ব্যাপক ছাপ্পা-রিগিং হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তৃণমূল কর্মীকে পুলিশ ধরেছিল ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। বিস্তর বোমা ফেটেছিল ১৯, ২৪, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে। সর্বত্রই তৃণমূল জিতেছে। একচেটিয়া ভোটের নজির গড়ে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে শাসক দল পেয়েছে ২২২২টি ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিপিএম পেয়েছে ৫৩টি ভোট।

আরও পড়ুন: মেজাজ পাল্টে, মাঠ আগলে ওঁরাই কারিগর

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘তিন পুরসভায় ভোট লুঠ হয়েছে। বাম জমানায় কেশপুর, গড়বেতা, আরামবাগে যে ভাবে ভোট হতো, সেই রাস্তাই নিয়েছিল তৃণমূল। যেখানেই আমরা রুখে দাঁড়িয়েছি, ওরা হেরেছে।’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘আমাদের বিচারে ভোট অবৈধ। ছ’টি বুথের পুনর্নির্বাচনে অংশ নিইনি। শুধু খাতায় কলমে প্রার্থী ছিল। তাতেও পাঁচটিতে তৃণমূল হেরেছে। বোঝাই যাচ্ছে জবরদস্তি না করলে তৃণমূলের পক্ষে স্বত়ঃস্ফূর্ত সমর্থন নেই।’’

তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘অবাধ ভোটের জোরেই জিতেছি। ভোটের দিনই টিভিতে লোকে দেখেছে বহিরাগতরা নিজেরাই জানিয়েছে তারা বিজেপির। আর কিছু কি বলতে হবে?’’ পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘‘নেতাই, নন্দীগ্রামের নায়কদের মুখে আর গণতন্ত্রের কথা মানায় না। মানুষ রয়েছে আমাদের সঙ্গেই।’’

বড় ব্যবধান

কোথায় ওয়ার্ড তৃণমূল দ্বিতীয়

ডোমকল ৫ ৩৯২৭ ৯০

ডোমকল ১ ৩৬৯৮ ৮২

রায়গঞ্জ ১৬ ২২২ ৫৩

রায়গঞ্জ ২২ ২৬২২ ৩০৫

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipality election TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE