Advertisement
০৫ মে ২০২৪
WB Panchayat Election 2023

কোর্টের নির্দেশ, তবু প্রার্থীরা কি পাহারা পেলেন

অশান্তির জেরে এবং বাধা পেয়ে মনোনয়ন দিতে না-পারায় বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সিপিএম, আইএসএফ এবং বিজেপির কয়েক জন প্রার্থী।

Calcutta High Court

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ ০৭:২৮
Share: Save:

পুলিশ প্রহরায় নিয়ে গিয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে এই নির্দেশ দিয়েছিল খোদ কলকাতা হাই কোর্ট। অথচ বাস্তবে প্রার্থীদের ফেলে পালাল পুলিশ। অভিযোগ তেমনই।

হাই কোর্টের ওই নির্দেশের পরে পুলিশ প্রহরায় নিয়ে যাওয়ার সময়ে ভাঙড়ে ৮২ জন প্রার্থীকে আক্রমণ করা হয় এ দিন। অভিযোগ, সেই সময়ে তৃণমূলের ‘আশ্রিত’ সমাজবিরোধীদের গুলিতে মারা যান এক আইএসএফ কর্মী এবং পুলিশ এলাকা ছেড়ে পালায়। তারই প্রতিবাদে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে আইএসএফ।

অশান্তির জেরে এবং বাধা পেয়ে মনোনয়ন দিতে না-পারায় বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সিপিএম, আইএসএফ এবং বিজেপির কয়েক জন প্রার্থী। এই প্রার্থীরা মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, বারুইপুর, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ন্যাজাট থেকে এসেছিলেন। সব ক’টি মামলার একত্রে শুনানি করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বিজেপির হয়ে শ্রীজীব চক্রবর্তী, সূর্যনীল দাস এবং বাম, আইএসএফ-এর হয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, শামিম আহমেদ, ফিরদৌস শামিম সওয়াল করেন। তাঁদের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, বারুইপুরের প্রার্থীরা এসপি (বারুইপুর)-র অফিসে জড়ো হবেন। তাঁদের পাহারা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব এসপি-র। বসিরহাটের প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাবে কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। ভাঙড়ের ক্ষেত্রে ভাঙড় এবং কাশীপুর থানার পুলিশকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেন বিচারপতি। এর পাশাপাশি বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, এই মামলার সঙ্গে যুক্ত থানাগুলির সব সিসিটিভির ফুটেজ আগামী এক বছরের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।

এই নির্দেশের কিছু ক্ষণ পরেই বিচারপতি মান্থার এজলাসে ভাঙড়ের আইএসএফ প্রার্থীদের হয়ে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, তাঁর মক্কেলরা পুলিশি পাহারায় মনোনয়ন দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। পুলিশ ওই প্রার্থীদের ফেলে পালায়। শামিমের বক্তব্য, আদালতের নির্দেশের পরে প্রার্থীরা কোথায় জড়ো হবেন, পুলিশকে তা জানানো হয়েছিল। ভাঙড় থানার আইসি-কে তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন। সেই খবর তৃণমূলের কাছে পুলিশ পৌঁছে দিয়েছে এবং তার ফলেই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। আজ, শুক্রবার কোর্টে এই অভিযোগ লিখিত ভাবে জানানো হবে।

বর্ধমান থেকেও পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। বর্ধমানের মঙ্গলকোটের সিপিএম নেতা শাজাহান চৌধুরীর দাবি, ‘‘আমাদের এক মহিলা প্রার্থী-সহ পাঁচ জনকে মারধর করেছে তৃণমূল। পুলিশ কোনও নিরাপত্তা দিতে পারছে না।’’ আউশগ্রাম, মঙ্গলকোটে মনোনয়নপত্র কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিরোধীদের দাবি, অভিযোগ জানানোর পরেও পুলিশ সক্রিয় হয়নি।

উল্টো চিত্রও ছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক পরেশরাম দাস তিন কংগ্রেস প্রার্থী ও এক এসইউসি প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে ক্যানিং ১ বিডিও অফিস পর্যন্ত পৌঁছে দেন। পরেশ বলেন, “ক্যানিংয়ে অশান্তি হয়েছে। বিরোধীরা ভয় পাচ্ছেন মনোনয়ন দিতে। বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিরোধী প্রার্থী আমার কার্যালয়ে এলে আমি চার জনকে বিডিও অফিসে এসে ডিসিআর কেটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।” বিজেপি নেতা সুনীপ দাসের অভিযোগ, “এ সব ন্যাকামো করে লাভ নেই। গত কয়েক দিন ধরে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ক্যানিংয়ে যে সন্ত্রাস হয়েছে, তা মানুষ দেখেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE