Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
TMC

‘বিতর্কিত’ জমিতে নেতার নির্মাণে অভিযান পুলিশের

ওই ‘বিতর্কিত’ জমিতে পাথর ভাঙার কল চালানোর জন্য বীরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে মাদারিহাটের প্রাক্তন তৃণমূল ব্লক সভাপতি সঞ্জয় লামার ভাই কুন্দনের বিরুদ্ধে।

বুধবার রাতে হানা দিল পুলিশ।

বুধবার রাতে হানা দিল পুলিশ। প্রতীকী ছবি।

পার্থ চক্রবর্তী
বীরপাড়া শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:০৬
Share: Save:

বন দফতর ও ভূমি সংস্কার দফতরকে সঙ্গে নিয়ে আলিপুরদুয়ারের লঙ্কাপাড়ায় পাগলি নদী লাগোয়া জমিতে এক তৃণমূল নেতার একাধিক নির্মাণে বুধবার রাতে হানা দিল পুলিশ। ধরা হল এক জনকে। যে জায়গায় ওই নির্মাণগুলি রয়েছে, সেগুলি নদীর চরে বা বন দফতরের জমিতে বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। অভিযোগ, ওই নির্মাণগুলি থেকে বালি এবং পাথরের অবৈধ কারবার চলে। ওই ‘বিতর্কিত’ জমিতে পাথর ভাঙার কল চালানোর জন্য বীরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে মাদারিহাটের প্রাক্তন তৃণমূল ব্লক সভাপতি সঞ্জয় লামার ভাই কুন্দনের বিরুদ্ধে। কোনও অভিযোগই মানেননি সঞ্জয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, “ঘটনা জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।”

আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘পাগলি নদীতে বেআইনি ভাবে বালি-পাথরের খাদান চলছিল বলে অভিযোগের ভিত্তিতে বন ও ভূমি দফতরকে নিয়ে যৌথ অভিযান চালানো হয়। একটি পাথর ভাঙার কলও চলছিল। সেখান থেকে এক জনকে ধরা হয়। কিছু প্রশ্ন ওঠায় নোটিস দেওয়া হয়েছে।’’

এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, নদীর গা ঘেঁষে ‘বিতর্কিত’ জায়গায় একটি প্রাথমিক স্কুল এবং তার পাশে টিনের চালের কংক্রিটের বিরাট ‘গ্যারাজ’ রয়েছে। অভিযোগ, সেখান থেকেই বেআইনি বালি-পাথর তুলে গাড়ি এবং মোটরবাইকে চাপিয়ে চালান করা হয়। স্থানীয় সূত্রের দাবি, পাগলি নদীর একটা অংশ ‘দখল’ করে ওই স্কুল আর শেড তৈরি হয়েছে। হড়পা বান সামলাতে নদীর মাঝে বোল্ডার ফেলে অস্থায়ী ‘বাঁধ’ও দেওয়া হয়েছে। এই নির্মাণ এত দিনে প্রশাসনের চোখে পড়ল না কেন? বিএলএলআরও (মাদারিহাট) খুশবু লামা বলেন, “আমার সময়কালে এমন অভিযোগ পাইনি। তদন্ত করে দেখছি।” সেচ দফতরের আলিপুরদুয়ারের নির্বাহী বাস্তুকার অমরেশ সিংহের দাবি, “মাস খানেক আগে, জেলায় এসেছি। বিষয়টি দেখব।”

এ নিয়ে মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, “এ নিয়ে আমার বক্তব্য না লেখাই ভাল।” নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৃণমূলের এক নেতা দাবি করেন, “পাগলি নদী দখল করেই শেডের মধ্যে নিজের অফিস খুলেছেন সঞ্জয়। সেখান থেকে গোটা এলাকায় বালি-পাথরের অবৈধ কারবার চলছে।” লঙ্কাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সুজানা মঙ্গর ছেত্রী বলেন, “এমন নির্মাণ করা যায় না। কিন্তু উনি (সঞ্জয় লামা) ব্লক সভাপতি ছিলেন। কী করব?”

সঞ্জয়ের দাবি, ‘‘বালি-পাথরের অবৈধ কারবারে জড়িত নই। যে এলাকায় নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেটা নদী নয়। তুলসিপাড়া চা বাগানের জমি। কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র নিয়েই করা হয়েছে। কাগজপত্র রয়েছে। সাত দিনের মধ্যে কাগজ-সহ প্রশাসনের নোটিসের জবাব দেব।’’ ‘ক্রাশার’টিও তাঁর ভাই নন, বীরপাড়ার অন্য এক জন চালান বলে দাবি তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC birpara Illegal Construction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE