E-Paper

শুভেন্দু এআই চান একাধিক জায়গায় নাম কাটাতে, সরব তৃণমূল

গণনাপত্র পূরণে সাহায্যের নামে সাধারণ মানুষের থেকে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ লোকজন টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:১৮
শুভেন্দু অধিকারী।

শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

এক জনের একাধিক জায়গায় নাম রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে এমন অভিযোগ বহু দিনের। এমন ‘ভুয়ো’ ভোটার ঠেকাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার চাইলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে, ফের স্বচ্ছ ভোটার তালিকা চেয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে একগুচ্ছ দাবি করেছেন তিনি। গণনাপত্র বিতরণের পাঁচ দিনের মাথায়, শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আবার দ্বিচারিতার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, এখন থেকেই ভোটের ফল বুঝতে পেরে এই সব কথা বলছে বিজেপি।

ভোটার তালিকা সংশোধনে কারচুপির অভিযোগ ঘিরে চাপানউতোর অব্যাহত। তার মধ্যেই কমিশনের উপরে চাপ বাড়িয়ে বিরোধী দলনেতা বলেছেন, “ভুয়ো ভোটার রাখতে এখনও সক্রিয় তৃণমূল। তাই মৃত ভোটারের নাম বাতিল করতে কমিশন কিছু ব্যবস্থা করলেও, আধার পোর্টালের তথ্য কাজে লাগিয়ে তা ১০০% ত্রুটিমুক্ত করতে হবে। এক নাম একাধিক বার যাতে না-থাকে, সে জন্য এআই ব্যবহার করে গণনাপত্রে থাকা ছবি পরীক্ষা করা হোক।” এই কাজে শুধু রাজ্য সরকারের আধিকারিকের উপরে ভরসা রাখা চলবে না বলেও তাঁর দাবি। পাশাপাশি, কলকাতার পুর-কমিশনারের বিরুদ্ধে কারচুপি করে জন্ম-শংসাপত্র বিলির অভিযোগও ফের তুলেছেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে শুভেন্দু বলেছেন, “তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চেয়েছি। জবাব না পেলে আদালতে যাব।” এর সঙ্গেই, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পরে ফের কমিশনে যাবেন বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু।

তৃণমূল অবশ্য শুভেন্দুর অভিযোগে আমল দেয়নি। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, “বিহারে জীবিত মানুষকে মৃত দেখিয়ে অসংখ্য বৈধ ভোটারের নাম বাদ দিয়েছে বিজেপি। সেখানে একাধিক ভোট দেওয়ার অভিযোগে নাম জড়িয়েছে সঙ্ঘ-নেতা এক প্রাক্তন সাংসদের। চেষ্টা করেও এই রাজ্যে সেটা করতে পারবেন না শুভেন্দুরা।” তাঁর কটাক্ষ, “দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে নানা চেষ্টা করেছে (বিজেপি)। এখন কমিশনকেও দলের স্বার্থে ব্যবহার করছে। কিন্তু তাতেও কাজ হবে না বুঝে ভোটার বদলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা।”

এ দিকে, গণনাপত্র পূরণে সাহায্যের নামে সাধারণ মানুষের থেকে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ লোকজন টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে (সিইও) পাঠানো চিঠিতে অধীর লিখেছেন, ‘নিরক্ষর এবং বিভিন্ন বয়সের অনেকে গণনাপত্র পূরণ করতে সমস্যায় পড়ছেন। প্রায় দু’কোটি মানুষের সাহায্য প্রয়োজন। তাঁদের অসহায়তার সুযোগে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ও রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কয়েক জন টাকা তুলছেন।’ এই প্রেক্ষিতে কমিশনের কাছে রাজ্যের প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গণনাপত্র পূরণে সহায়তা শিবির তৈরি এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী নিয়োগের দাবিও তুলেছেন অধীর। পাশাপাশি, ‘ভোট চোর গদি ছোড়’ স্লোগানের পক্ষে রাজ্য জুড়ে সংগ্রহ করা গণস্বাক্ষর এ দিনই শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ট্রেনে করে দিল্লিতে এআইসিসি-র কাছে পাঠিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। দলের রাজ্য দফতর বিধান ভবন থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মিছিলও করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার-সহ দলের নেতা-কর্মীরা।

বিএলও-দের গতিবিধি আগাম জানানোর দাবি তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ জমিয়তে উলামা। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী শনিবার বর্ধমানে বলেছেন, “নির্বাচন কমিশন আগাম জানাক, বিএলও-রা কোথায় কবে যাবেন। সেটা না-হলে মানুষ বুঝতে পারছেন না কবে তাঁর বাড়িতে বিএলও আসবেন।” সিদ্দিকুল্লার অভিযোগ, “গণনাপত্র পূরণের পরে খসড়া তালিকা সাধারণ মানুষ কী ভাবে পাবেন, তা নিয়ে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকেরাও তথ্য দিতে পারছেন না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Artificial Intelligence TMC Election Commission

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy