যত্ন: ষাঁড়ের শুশ্রূষায় ব্যস্ত পুলিশকর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
পড়শির বেড়া ভেঙে ছাগলে গাছ খেয়েছে বা হাইটেনশন তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হনুমান, গাঁ-গঞ্জে যে কোনও ‘কেসে’ই ভরসা পুলিশ। থানায় রবীন্দ্রজয়ন্তী থেকে পথ নিরাপত্তার প্রচারে বিয়ের আসরে হেলমেট বিলিও করতে হয় পুলিশকে। সেই আইন রক্ষকরা যে অবলা প্রাণীর শুশ্রূষাতেও সজাগ— বৃহস্পতিবার সেই ছবি দেখলেন কাঁথির মানুষ। জনা কয়েক মদ্যপ যুবকের মারধরে জখম একটি ষাঁড়ের ভাঙা পায়ে যত্নে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিলেন পুলিশকর্মীরা।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাতে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি মহকুমার দেশপ্রাণ ব্লকের খাগড়াবনি গ্রামের কাছে রাতের আড্ডায় মৌতাত সবে জমেছে। চার যুবকের সেই নেশার আসরে হঠাৎই হাজির একটি ষাঁড়। প্রাণীটি কোনও উপদ্রব করেনি। তবু তাকে নিয়েই বাজি ধরে ফেলেন ওই চারজন। কে ষাঁড়কে বাগে আনতে পারবে, শুরু হয় লড়াই। তবে যুঝে উঠতে পারেনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ষাঁড়ের গুঁতোয় ধরাশায়ী হয় চার বীরপুঙ্গব। রণে ভঙ্গ দেয় ষাঁড়ও।
ষাঁড়ের কাছে এই হার মানতে পারেনি চার যুবক। তাই বুধবার ভোরে নেশা কাটতেই শুরু হয় ষাঁড়ের খোঁজ। শেষে রাতে কাঁথির চৌরঙ্গিমোড়ের কাছে তার দেখা মেলে। হারের শোধ নিতে চার যুবক লোহার রড নিয়ে নিরীহ প্রাণীটির উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। শুরু হয় বেদম মার। ষাঁড়ের আর্তনাদে লোকজন ছুটে এলে চারজন পালায়। ততক্ষণে মারের চোটে ষাঁড়ের ডান পা ভেঙে গিয়েছে। মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে সে।
রাতে টহলদারিতে বেরনো কাঁথি থানার দুই সাব ইনস্পেক্টর স্বপন গোস্বামী ও রবি গ্রাহিকা রক্তাক্ত ষাঁড়টিকে তুলে থানায় নিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার সকালে এক পশু চিকিৎসককে ডেকে ষাঁড়ের ভাঙা পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা হয়। কাঁথি থানার এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘অবলা প্রাণীটিকে বাঁচাতে যা করণীয় সেটাই করেছি। এখন ওই চার যুবককে খুঁজে শায়েস্তা করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy