Advertisement
২৭ মার্চ ২০২৩

কী বলেছেন, গৌতমের ব্যাখ্যা চাইল পলিটব্যুরো

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করার জন্য বঙ্গ ব্রিগেডের দাবি ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটিতে। দিল্লিতে বৈঠকে হাজির ছিলেন না গৌতমবাবু। তার কয়েক দিন পরেই বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলে গৌতমবাবু প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি পদে কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী মীরা কুমারকে ভোট দিতে যাদের আপত্তি ছিল না, মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে ইয়েচুরির বেলায় তারাই আপত্তি করল কোন যুক্তিতে?

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৩৯
Share: Save:

মান্যতা পেল বর্ধমান জেলা কমিটির দাবি। ধাক্কা খেল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট!

Advertisement

দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রকাশ্যে তিনি কী বলেছিলেন, গৌতম দেবের কাছে তার ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠাল সিপিএমের পলিটব্যুরো। লিখিত জবাব দিতে তৈরি হচ্ছেন গৌতমবাবুও। তাঁর জবাব পেলে দলের আগামী কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না।

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করার জন্য বঙ্গ ব্রিগেডের দাবি ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটিতে। দিল্লিতে বৈঠকে হাজির ছিলেন না গৌতমবাবু। তার কয়েক দিন পরেই বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলে গৌতমবাবু প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি পদে কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী মীরা কুমারকে ভোট দিতে যাদের আপত্তি ছিল না, মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে ইয়েচুরির বেলায় তারাই আপত্তি করল কোন যুক্তিতে? সংসদীয় রাজনীতিতে ইয়েচুরির জনপ্রিয়তাকে কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ হিংসা করেন বলেই এমন সিদ্ধান্ত কি না, এই কথাও বলেছিলেন তিনি। এ ভাবে চললে বাংলার জন্য অন্য পথের কথা ভাবতে হবে বলেও ইঙ্গিত ছিল তাঁর কথায়। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটিও এ কে জি ভবনে চিঠি পাঠিয়ে দাবি তুলেছিল, ইয়েচুরি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের জন্য প্রকাশ কারাটদের জেলায় এসে কর্মী-সমর্থকদের কাছে ব্যাখ্যা দিতে হবে! আর বর্ধমান পাল্টা প্রশ্ন তুলেছিল, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে কেন গৌতমবাবুর শাস্তি হবে না?

দলীয় সূত্রের খবর, পলিটব্যুরোর তরফে যে চিঠি গৌতমবাবুর কাছে পাঠানো হয়েছে, তা কার্যত শো-কজ। তিনি যা বলেছেন, তার অর্থ কী, কাদের দিকে ইঙ্গিত করেছেন— এ সবই জানতে চেয়েছেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। গৌতমবাবু অবশ্য এই নিয়ে এখন মুখ খুলছেন না। মন্তব্য করতে চাননি ইয়েচুরিও। তবে দলের এক পলিটব্যুরো সদস্যের বক্তব্য, ‘‘ওঁকে শো-কজ করা হয়নি। কেউ কেউ চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন গৌতমবাবুর মন্তব্য সম্পর্কে। তার পরে ওঁর কাছে ওই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: আন্দোলনে আছি যুদ্ধে নয়, আতঙ্কে পাহাড়

বর্ধমান জেলা কমিটি অবশ্য একা নয়। সিপিএম সূত্রের খবর, পলিটব্যুরোর তিন সদস্য এ কে পদ্মনাভন, সুভাষিণী আলি, বি ভি রাঘবুলু এবং কেন্দ্রীয় কমিটির কে হেমলতা, পুষ্পেন্দ্র সিংহ গ্রেবালের মতো নেতারা চিঠি দিয়েছিলেন গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে দলীয় পদক্ষেপ চেয়ে। পলিটব্যুরোর ঘরোয়া বৈঠকে ইয়েচুরি বরং বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, গৌতমবাবু কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। পরের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেই না হয় বিষয়টি আলোচনা করা যাবে। কিন্তু বাকিরা বেঁকে বসেছিলেন। এমনকী, বাংলার দুই নেতাও সেখানে কারাটদের সঙ্গে ভিন্নসুর হননি বলেই সূত্রের ইঙ্গিত।

অভিযোগকারীদের মধ্যে সুভাষিণীকে ব্যারাকপুরে লোকসভার প্রার্থী করেছিলেন গৌতমবাবুই! আর পুষ্পেন্দ্রকে কেন্দ্রীয় কমিটির এক বৈঠকের ফাঁকে ঘরোয়া আসরে বলেছিলেন, ‘পুশি’কে বাংলা পার্টির দায়িত্ব দিলে ভাল হয়! বাংলায় কী হচ্ছে না হচ্ছে, তা নিয়ে যখন ‘পুশি’র এত মাথাব্যথা! কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের মন্তব্য, ‘‘বাংলার এক সাংসদকে নিয়ে একটা বিতর্ক চলতে চলতেই আর একটা টেনে আনা হল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.