বিমান বসু। —ফাইল চিত্র।
দলের নীতি মেনে নিজে সব পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। পদে না থেকেও দল এবং রাজনীতির কাজ করা যায় বলে বরাবর বিশ্বাস করে এসেছেন। সেই বিমান বসুর মুখেই এ বার আক্ষেপ শোনা গেল রাজনীতি ক্রমশ ‘আয় করার উপায়ে’ পরিণত হওয়ায়। তাঁর মন্তব্য, যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের দুর্নীতির দায়ে জেলে যেতে হয়, সেই মন্ত্রিসভা এবং দলের নেতারাই এখন অক্লেশে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ান!
প্রয়াত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অশোক ঘোষের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে শনিবার মহাজাতি সদনে প্রধান বক্তা ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান। বয়সে অশোকবাবু বড় হলেও রাজনৈতিক জীবনে তাঁর সঙ্গে বিশেষ হৃদ্যতা ছিল বিমানবাবুর। দু’জনে একসঙ্গে পুরুলিয়ার মতো জেলায় বাম সংগঠনের কাজ করেছেন, বামফ্রন্টের হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছেন। দু’জনের জন্মদিনও পরপর দু’দিনে। পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানাতে যেতে কখনও ভুলতেন না দুই বাম নেতা। প্রয়াত ফ ব নেতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়েই বিমানবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘অশোকদা’র মতো নেতারা সর্বত্যাগী হয়ে রাজনীতি করতে এসেছিলেন। মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে জীবন বিকিয়ে দিয়েছিলেন। আজকের দিনে এ সব অলীক কল্পনা! এখন যাঁরা রাজনীতি করতে আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই ভাবেন কী ভাবে আয় বাড়ানো যাবে।’’ প্রসঙ্গত, অশোকবাবু এবং বিমানবাবু, দু’জনেই বাড়ি-পরিবার ছেড়ে দলের কার্যালয়েই জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
বর্তমান পরিস্থিতির প্রসঙ্গ এনে বিমানবাবু আরও বলেছেন, ‘‘চুরি-দুর্নীতির দায়ে মন্ত্রীরা জেলে যাচ্ছেন। তার পরে মুখ কালো করে যাঁদের বসে থাকার কথা, তাঁরাই এখন বুক ফুলিয়ে বড় বড় কথা বলে বেড়াচ্ছেন!’’ অশোকবাবুর বিভিন্ন লেখার একটি সংকলন প্রকাশিত হয়েছে এ দিনের অনুষ্ঠানে। ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক জি দেবরাজন ও রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় এখনকার প্রেক্ষাপটে বাম ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। ফ ব-র রাজ্য দফতর হেমন্ত বসু ভবনে অশোকবাবুর উপরে একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy