Advertisement
E-Paper

অচল টাকা সচল করতে নিশানা গরিবের অ্যাকাউন্ট

দেশ থেকে কালো টাকার সমস্যা তাড়াতে রাতারাতি ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটকে অচল বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ রাত পোহাতেই সেই টাকা বদলে নেওয়ার ছক দানা বাঁধছে ওই দুই নোটকে অন্যের অ্যাকাউন্টে পুরে দেওয়ার কলকাঠিতে।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৪২

দেশ থেকে কালো টাকার সমস্যা তাড়াতে রাতারাতি ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটকে অচল বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ রাত পোহাতেই সেই টাকা বদলে নেওয়ার ছক দানা বাঁধছে ওই দুই নোটকে অন্যের অ্যাকাউন্টে পুরে দেওয়ার কলকাঠিতে। আর তার জন্য হাতিয়ার হচ্ছে আধার কার্ড-ই। যাকে দেশের অর্থনীতি স্বচ্ছ করার অন্যতম মাধ্যম বানাতে চায় কেন্দ্র।

মূলত এই ছক কষার চেষ্টা হচ্ছে গ্রামে-গঞ্জে। যেখানে এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক গরিব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। হাতে আধার কার্ড আছে। কিন্তু অ্যাকাউন্টে জমা টাকার পরিমাণ নিতান্ত কম। সেই সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু অসাধু কারবারি পরিকল্পনা করছেন নিজেদের কালো টাকার পাঁচশো, হাজারের নোট গরিব মানুষের অ্যাকাউন্টে ভাঙিয়ে নেওয়ার।

কী ভাবে?

পরিকল্পনা সহজ। গ্রামে যাঁদের অ্যাকাউন্ট ও আধার কার্ড আছে, তাঁদের অনেককে টোপ দেওয়া হচ্ছে সেখানে ওই পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অন্তত এক লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ, ‘ক’-এর কালো টাকা ‘খ’-এর অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে ‘খ’-এরই আধার কার্ড ব্যবহার করে। এ ভাবে হয়তো ২০ লক্ষ কালো টাকা ২০ জনের অ্যাকাউন্টে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন ‘ক’। শর্ত হল, পরে প্রতি জনের কাছ থেকে এর মধ্যে ৯০ হাজার তিনি ফেরত নেবেন। বাকি ১০ হাজার গরিব মানুষটি পাবেন অ্যাকাউন্ট ও আধার কার্ড ‘ব্যবহার করতে দেওয়ার ভাড়া’ হিসেবে।

ওই অসাধু কারবারিদের আশা, এই পড়ে পাওয়া টাকার লোভের ফাঁদে পা দেবেন গ্রামের বহু মানুষ। কারণ, এ ক্ষেত্রে প্রায় কিছুই না করে ১০ হাজার টাকা করে ‘কমিশন’ পাচ্ছেন তাঁরা। উল্টো দিকে, মাত্র ১০% খরচ করে নিজেদের কালো টাকা ভাঙিয়ে নিতে পারছেন ওই অসাধু কারবারিরা।

এ ক্ষেত্রে টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে ঝুঁকি একটা আছেই। কারণ, যাঁর অ্যাকাউন্ট, পরে টাকা ফেরত দিতে তিনি বেঁকে বসতে পারেন। বিশেষত লেনদেনের লিখিত কোনও প্রমাণ যেখানে নেই। সেই ঝুঁকি কমাতে গ্রামে রাজনৈতিক স্তরে (মূলত পঞ্চায়েতে) যোগাযোগ শুরু করেছেন ওই কারবারিরা। যোগসাজসের চেষ্টা হচ্ছে ব্যাঙ্ক কর্মীদের সঙ্গে। সে ক্ষেত্রে তাঁদেরও টাকার একটা ভাগ দিতে তৈরি ওই কারবারিরা।

এমনই এক কারবারির কথায়, পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলিতে ১০০ দিনের কাজের মজুরদের অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ঠিকানা রয়েছে। সেখান থেকেই ওই দু’টি আছে, এমন গরিব মানুষের হদিস মিলবে।

কিন্তু হঠাৎ ওঁদের অ্যাকাউন্টে এত টাকা এল কী ভাবে, সেই প্রশ্ন উঠবে না? কারবারিদের দাবি, গ্রামের অধিকাংশ মানুষ টাকার বড় অংশ বাড়িতে রাখেন। ফলে লাখ-দেড়
লাখ ব্যাঙ্কে জমা দিলে, তা নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। পরে তা করের আওতায় আসারও সম্ভাবনা নেই।

মওকা বুঝে টাকা ভাঙানোর ব্যবসাতেও দু’পয়সা বাড়তি কামিয়ে নিচ্ছেন অনেকেই। ৫০০ বা ১০০০ টাকার নোট ভাঙিয়ে হয়তো দিচ্ছেন ৪০০ ও ৮০০ টাকা। খুচরোর ব্যবসা এমনিতে প্রতিদিনের। কিন্তু এখন সেই মুনাফার হারই অসম্ভব চড়া।

poor bank account miscreants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy