Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দুপুরে কী খেয়েছেন, তা-ও জানা পিকে-দের!

দাবি মতো পাঠিয়ে দিচ্ছেন কর্মসূচির ছবি, ভিডিয়ো।

প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র।

জয়ন্ত সেন
মালদহ শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৩:২৪
Share: Save:

পিকে-র অফিসের ফোন নিয়ে এখন থরহরি মালদহে তৃণমূলের ব্লক সভাপতিরা। সকাল নেই, বিকেল নেই, হঠাৎ বেজে উঠছে ফোন। কানে লাগালেই ও প্রান্ত থেকে বলা হচ্ছে— পিকে-র অফিস থেকে বলছি! কিন্তু সত্যিই কি পিকে-র অফিস? যাচাই করতে গিয়ে কেউ কেউ এমন ধাতানি খেয়েছেন যে, আর প্রশ্নটশ্ন না করে যা চাওয়া হচ্ছে, দিয়ে দিচ্ছেন। দাবি মতো পাঠিয়ে দিচ্ছেন কর্মসূচির ছবি, ভিডিয়ো।

প্রশ্ন করতে গিয়ে প্রথম ধাতানিটা খেয়েছিলেন কালিয়াচকের একটি ব্লকের সভাপতি। ফোনটা তাঁর কাছে আসে কয়েক দিন আগে, বিকেলে। তিনি প্রথমে বুঝতেই পারেননি। ফোন তুলে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘কে বলছেন?’’

উল্টো দিক থেকে জবাব: আমি পিকে-র অফিস থেকে বলছি।

নেতা: কোন পিকে?

পিকে টিম: প্রশান্ত কিশোর।

নেতা: কিন্তু আপনি যে পিকের অফিস থেকে বলছেন, তার প্রমাণ কী? আপনার নাম জানতে পারি কি?

পিকে টিম: আমার নাম শুনে কাজ নেই। শুধু এটুকু জেনে রাখুন, দুপুরে আপনি কী দিয়ে খেয়েছেন, আমরা সেটা বলে দিতে পারব। সর্বত্র আমাদের লোক রয়েছেন।

নেতা: তাই!

এর পরে আর ওই নেতা কথা বাড়াননি। তাঁর কাছে যা জানতে চাওয়া হয়েছে, সব জবাবই দিয়েছেন গড়গড় করে। কাটমানি নিয়ে কী পরিস্থিতি, তা-ও নাকি জানতে চাওয়া হয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার ১৫টি ব্লকের সমস্ত দলীয় সভাপতির কাছেই এমন ফোন এসেছে। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি পালন করছেন কি না, করলে কী ভাবে পালন করছেন— তার খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া হয়েছে সভাপতিদের কাছ থেকে।

কালিয়াচক-৩ ব্লকের সভাপতি নালেপ আলি বলেন, ‘‘গত শনিবার দুপুরে ‘পিকের অফিস থেকে বলছি’ বলে এক জন ফোন করেছিলেন। তাঁর নাম জানতে পারিনি। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি পালন করছি কি না, তা জানতে চান। কুম্ভীরা পঞ্চায়েতের শবদলপুর বাজারে আমি যে ‘দিদিকে বলো’ কার্ড বিলি করেছি, সে কথা জানিয়েছি। তার ছবি ও ভিডিয়ো ক্লিপিংসও পাঠালাম তাঁকে।’’ কালিয়াচক-২ ব্লকের সভাপতি আসাদুল আহমেদেরও একই অভিজ্ঞতা। বলেন, ‘‘রবিবার ফোন এসেছিল। যিনি ফোন করেছিলেন, তিনি বিভিন্ন বুথ থেকে পাঁচ জন দলীয় কর্মীর নাম ও ফোন নম্বর চান। ওই দিনই আমি সে সব পাঠিয়ে দিয়েছি।’’ হবিবপুর ব্লক সভাপতি প্রভাস চৌধুরী বলেন, ‘‘আমিও ফোন পেয়েছি।’’

এই খোঁজখবরে কিন্তু ব্লক সভাপতিদের একাংশ খুশি। এক ব্লক সভাপতি বলেন, ‘‘এমন সাংগঠনিক উদ্যোগ যদি আগে নেওয়া হত, তবে লোকসভা ভোটে দু’টি আসনে হয়তো হারে হত না।’’ দলের জেলা সভাপতি মৌসম নুর মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prashant Kishor TMC Mamata Banerje
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE