Advertisement
E-Paper

প্রোমোটারের থাবা সারদা গার্ডেনে, নালিশ আদালতে

সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী জানান, সারদা-প্রধানের বিরুদ্ধে আমানতকারীদের কাছ থেকে তোলা ২৪০০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:১৮

গোষ্ঠীর কর্ণধার ও অন্যান্য কর্তা লৌহকপাটের আড়ালে চলে যাওয়ার পরে সারদার সব সম্পত্তিই বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আদালতের কাছে তা ‘অ্যাটাচমেন্ট’ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ইডি-র আইনজীবীরা। ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার হেফাজতে থাকা সেই সম্পত্তি জবরদখল হয়ে যাচ্ছে বলে সম্প্রতি বারাসতের বিশেষ আদালতে অভিযোগ করেছেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। তাঁর আইনজীবীদের অভিযোগ, কলকাতার দক্ষিণ শহরতলিতে সারদার আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত ‘সারদা গার্ডেন’ কার্যত এখন প্রোমোটারদের দখলে চলে গিয়েছে।

সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী জানান, সারদা-প্রধানের বিরুদ্ধে আমানতকারীদের কাছ থেকে তোলা ২৪০০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। দক্ষিণ শহরতলির ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন বিষ্ণুপুরের ভাসা মৌজার কানচৌকি এলাকায় সারদা গার্ডেনের প্রায় ১২০০ বিঘে জমির বর্তমান বাজারদর ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা। সুদীপ্তের কৌঁসুলিদের অভিযোগ, ওখানে কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা না-থাকায় অবৈধ ভাবে জমি বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সারদা গার্ডেন লেখা মূল গেটে একটি প্রোমোটার সংস্থা নিজেদের হোর্ডিং লাগিয়ে দিয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে সারদা গার্ডেন বলে আর কিছুরই অস্তিত্ব নেই।

সিবিআইয়ের অভিযোগ, ওই জমিতে আবাসন প্রকল্প তৈরি করবেন বলে আমানতকারীদের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা তোলেন সুদীপ্ত। প্রথম ধাপে আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জমি কেনা হয়। পরবর্তী পর্যায়ে সেই জমি দেখিয়ে আমানতকারীদের কাছ থেকে আবার প্রচুর টাকা তোলা হয়। ওই জমির

কিছুটা অংশ বেচে সুদীপ্ত সেই টাকা আত্মসাত করেছেন বলে তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ। সারদা গার্ডেনে সুদীপ্তের বেচে দেওয়া জমিতে শ’পাঁচেক বাড়ি এবং একটি বাজার রয়েছে। কিন্তু সারদা মামলা চলায় পুরো সারদা গার্ডেনই এখন রয়েছে ইডি-র হেফাজতে। আইনত সারদা গার্ডেনের কোনও জমি এখন কেনা ও বিক্রি করা যাবে না। এবং সারদা গার্ডেনের নামও বদল করা যাবে না।

সিবিআই সূত্রের খবর, সারদার ঘোষিত সদর দফতর সল্টলেকের মিডল্যান্ড পার্কে। কিন্তু অর্থ লগ্নির

ব্যবসা পরিচালিত হত মূলত বিষ্ণুপুরের সারদা গার্ডেন থেকেই। সুদীপ্ত

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সেখানেই থাকতেন। সন্ধ্যার পরে বসতেন মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে।

সুদীপ্তের কৌঁসুলিদের অভিযোগ, একটি প্রোমোটার সংস্থা সারদা গার্ডেনের ভিতরে অফিস খুলে বসেছে। সারদা গার্ডেনের জমি বিক্রি করা

হবে বলে প্রচারপত্রও বিলি করছে

তারা। ইডি-র যথাযথ নজরদারি না-থাকায় বাজেয়াপ্ত জমি বেআইনি ভাবে বিক্রি করতে একটি দুষ্টচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতা সেই চক্রের মদতদাতা বলে অভিযোগ ওই আইনজীবীদের।

সুদীপ্তের অন্যতম কৌঁসুলি বিপ্লব গোস্বামী বলেন, ‘‘তাঁর মক্কেল সরাসরি বিশেষ আদালতের বিচারকের কাছে সম্পত্তি জবরদখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। ইডি বিষয়টি দেখছে না। আমরা এখন সারদা গার্ডেনের জমি জবরদখলের বিষয়টি লিখিত ভাবে বিচারককে জানানোর প্রস্তুতি চালাচ্ছি।’’

ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র অবশ্য জানান, ওই জমি জবরদখলের বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও খবর নেই। তবে অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা হবে। ওই জমি বিক্রি বা অন্য কোনও

ভাবে হস্তান্তর করা যায় না। সুদীপ্ত

কিছু জমি বিক্রি করেছিলেন। তাঁর

বিক্রি করা জমিও আইনত হস্তান্তর করা সম্ভব নয়। ‘‘বিষয়টি খতিয়ে

দেখে আমরাও আদালতে রিপোর্ট পেশ করব। পুরো বিষয়টিতে

কোনও প্রোমোটার সংস্থা জড়িত রয়েছে কি না, খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’’ বলেন ইডি-র আইনজীবী।

Sudipta Sen Saradh Garden
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy