প্রতিবাদ: পড়ুয়াদের খাবারের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবিতে অবরোধ মিড-ডে মিল কর্মীদের। সোমবার, ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
কারও হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘১২ মাসের কাজ করিয়ে ১০ মাসের বেতন দেওয়া চলবে না’। কোনও প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘মাসিক ১৫০০ টাকা ভাতায় আর চলছে না। ভাতা বাড়াতে হবে’। কেউ আবার তুলে ধরেছেন, পড়ুয়াদের রোজ ডিম দেওয়ার দাবি।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে, সোমবার শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং কিছু ক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে গেল ‘মিড-ডে মিল কর্মী ঐক্য মঞ্চ’-এর এই বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে। সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শুরু করে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত ওই মিছিলে পা মেলান রাজ্যের বিভিন্ন জেলার গ্রাম থেকে আসা মিড-ডে মিলের কর্মীরা। পরে ‘মিড-ডে মিল ঐক্য মঞ্চ’-এর প্রতিনিধিরা বিকাশ ভবনে স্মারকলিপি দেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থেকে মিছিলে এসেছিলেন আসমা সর্দার, নীলিমা হালদার, আঙুরবালা চক্রবর্তীরা। তাঁদের অভিযোগ, সারা বছর উৎসবের পিছনে বিপুল টাকা ব্যয় করে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার। অথচ, মিড-ডে মিলের কর্মীদের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে তারা নিশ্চুপ। শুধু তা-ই নয়, সারা বছর কাজ করিয়ে ১০ মাসের বেতন দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। সেই সঙ্গে মিড-ডে মিলের কর্মীরা স্কুলপড়ুয়াদের খাবারের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিও জানিয়েছেন।
আসমা বলেন, ‘‘প্রাথমিকের পড়ুয়াদের জন্য মিড-ডে মিলে বরাদ্দ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। তার মধ্যে এক টাকা জ্বালানির জন্য বরাদ্দ, এক টাকা সরিয়ে রাখতে হয় ডিমের জন্য। ছ’দিনে ছ’টাকা সরিয়ে সপ্তাহে একটা ডিম দেওয়া যায়। হাতে থাকল পড়ুয়াপিছু ৩ টাকা ৪৫ পয়সা। সেই টাকায় কিনতে হবে দু’রকমের আনাজ এবং রান্নার মশলা।’’ নীলিমা জানান, উচ্চ প্রাথমিকে বরাদ্দ ৮ টাকা ৮৫ পয়সা। তাঁদের প্রশ্ন, এই টাকায় ভাল মানের খাবার দেওয়া কি আদৌ সম্ভব?
আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁদের প্রধান দাবি, অবিলম্বে রন্ধনকর্মীদের ২৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি প্রদান, ১২ মাসের বেতন, উৎসবকালীন ভাতা ও ছুটি এবং সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি প্রদান। সেই সঙ্গে রন্ধনকর্মীদের মিড-ডে মিলের খাবারের অধিকার দেওয়ার দাবি উঠেছে।
‘পশ্চিমবঙ্গ মিড-ডে মিল কর্মী ইউনিয়ন’-এর পক্ষে মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেশ কিছু রাজ্য রন্ধনকর্মীদের অতিরিক্ত মজুরি এবং ছাত্রছাত্রীদের খাবার বাবদ অতিরিক্ত বরাদ্দ দিচ্ছে। যেমন, পুদুচেরি সরকার দিচ্ছে ১২ হাজার টাকা। তামিলনাড়ুতে দেওয়া হচ্ছে ৭০০০-১৪০০০ টাকা, হরিয়ানায় ৭০০০ টাকা, কেরলে দৈনিক ৬০০ টাকা। কিছু রাজ্য সপ্তাহে পাঁচ দিন ডিম, মিষ্টি, দু’দিন দুধও দেয়। কিন্তু এই রাজ্যে আজ পর্যন্ত মিড-ডে মিলে বরাদ্দ বাড়ানো হল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy