পুলওয়ামা হামলা নিয়ে ফেসবুক পোস্টের জেরে চাকরিও গেল বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক চিত্রদীপ সোমের। ছবি: পিটিআই।
প্রথমে হুমকি। পরে বাড়িতে চড়াও হয়ে হেনস্থা। অগত্যা বাড়ি ছেড়ে পালানো। এক রবিবারেই ওলটপালট হয়ে গিয়েছিল তাঁর জীবন। সোমবার সকালে চাকরিও গেল বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক চিত্রদীপ সোমের। তাঁর ‘অপরাধ’, কাশ্মীরে নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন তাঁদের শহিদ বলা হবে? কেন তিনি ওঁদের শহিদ বলতে চান না, সেই বিষয়ে ফেসবুকে সবিস্তার লিখেছিলেন ওই শিক্ষক।
স্কুলের অধ্যক্ষার বক্তব্য, বরখাস্ত করা হয়নি, ওই শিক্ষক নিজেই ইস্তফা দিয়েছেন। চিত্রদীপবাবুর অভিযোগ, তাঁকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করানো হয়েছে বলেই তিনি থানার দ্বারস্থ হন।
ওই শিক্ষক বলেন, ‘‘কিছু লোক এসে আমাকে শাসাতে শুরু করে। আমি বলি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই তো নিহত জওয়ানদের শহিদ বলতে রাজি নয়। তার প্রমাণও দেখাতে চাই ওদের।’’ তাঁর অভিযোগ, ওরা কোনও কথাই শুনতে চায়নি। তাঁকে মাটি ছুঁয়ে ভারতামাতা কি জয় বলতে বাধ্য করানো হয়। বাড়ি ভাঙচুর হবে শুনেই স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন।
দু’বছর ধরে ডানলপের ওই স্কুলে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াচ্ছেন চিত্রদীপবাবু। সোমবারেও প্রথম ক্লাসটি করেন। তার পরেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় অফিসঘরে। অভিযোগ, সেখানে তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করানো হয়। বলা হয়, তিন মিনিটের মধ্যে স্কুল ছেড়ে চলে যেতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে বরাহনগর থানায় গিয়ে স্কুল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন চিত্রদীপবাবু।
স্কুলের অধ্যক্ষা সুজাতা চট্টোপাধ্যায় জানান, ফেসবুকে চিত্রদীপবাবুর ওই পোস্টের পর থেকেই ই-মেলে প্রচুর অভিযোগ আসছিল। স্কুলের উপরে চাপ বাড়ছিল। তাঁকে বরখাস্ত করার দাবি উঠছিল ফেসবুক পেজে। ‘‘আমরা তা না-করে ওঁকে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইতে বলি। কিন্তু তিনি তা না-করে পদত্যাগ করেন,’’ বলেন সুজাতাদেবী। অনেকের প্রশ্ন, দাবি উঠছিল এবং স্কুলের উপরে চাপ বাড়ছিল বলেই শিক্ষককে বরখাস্ত করতে হবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy