আনুষ্ঠানিক ভাবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিজেপির সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু হল বাঁকুড়ায়। তবে নিয়মের বেড়াজালে সদস্য সংগ্রহের গতি আটকে পড়ার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই। শুক্রবার বাঁকুড়ার ধর্মশালায় বিজেপির তরফে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার, জেলা পর্যবেক্ষক গৌতম চৌধুরী প্রমুখ। সেখান থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু হল দলের।
চলতি মাস থেকেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সদস্য পদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিজেপি। সে ক্ষেত্রে একটি মোবাইল নম্বরও চালু করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি (১৮০০২৬৬২০২০)। সেই নম্বরে মিসড্ কল দিলেই এসএমএসের মাধ্যমে একটি নম্বর চলে আসবে কলারের কাছে। সেই নম্বরে ভোটার আইডি কার্ড নম্বর, নাম ও ঠিকানা লিখে পাঠালেই সদস্যপদ লাভ করা যাবে। মার্চের পরে কেন্দ্র থেকে রাজ্য এবং সেখান থেকে নীচুস্তরে সদস্যদের নামের তালিকা আসবে। সেই তালিকা ধরে ধরে দলের নেতা-কর্মীরা ওই ব্যক্তিদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেবে। কারও সম্পর্কে কোনওরকম গুরুতর অভিযোগ থাকলে তা দলীয় নেতৃত্বকে জানানো হবে। প্রয়োজনে সেই সব নাম ওই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। ঝাড়াই-বাছাই পক্রিয়া শেষ হলে তবেই চূড়ান্ত ভাবে সদস্য হিসেবে তাঁদের মনোনীত করা হবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে এই পদ্ধতিতে সদস্য পদ নিয়ে প্রকল্পের সূচনা করেছেন।
গত সোমবার বিজেপির রাজ্য কমিটিতে এ নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে সব কটি জেলাকেই এই পদ্ধতিতে সদস্য সংগ্রহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ দিন বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করল জেলা বিজেপি। আগামী মার্চের মধ্যে ১ লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নিয়েছে বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা। এ জন্য বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার বাঁকুড়া পুরসভা-সহ মোট ১৬টি মণ্ডলে একজন করে ব্যক্তিকে ‘মেম্বারশিপ ইনচার্জ’ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মণ্ডলীর সদস্য সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁর উপরে। আপাতত তাঁদের গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ফেস্টুন খাটিয়ে, মাইকে এ বিষয়ে প্রচার চালানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে সদস্য সংগ্রহে নিয়মের গেরোই মূল বাধা হতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। নিয়ম অনুযায়ী একটি মোবাইল নম্বর থেকে এক জন সদস্য পদ পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অনেক পরিবারেই একাধিক মোবাইল ফোন থাকে না। এ বার পরিবারের একাধিক সদস্যদের সদস্য পদ নেওয়ার ইচ্ছা থাকলে অন্য মোবাইল নম্বর থেকে তাঁকে সদস্য হতে হবে। এই সমস্যার কথা বৈঠকে পর্যবেক্ষক গৌতমবাবুকে জানান দলীয় কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে কী করা যায় তা নিয়ে ধন্দ অবশ্য বৈঠকে কাটেনি। মাস খানেক পরে এ বিষয়ে একটি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গৌতমবাবু। তবে যাঁরা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মোবাইল না থাকায় সদস্য হতে পারছেন না, তাঁদের নাম ও ঠিকানা দলীয় কর্মীদের লিখে রাখতে বলেছেন তিনি। আপাতত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদেরই সদস্য করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলীয় কর্মীদের।
গৌতমবাবু বলেন, “বহু মানুষ বিজেপিতে আসতে চাইছেন। কিন্তু অনেকের পক্ষেই দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে নাম লেখানোর সময় নেই। তাই এই পদ্ধতিতে আমরা সদস্য পদ দেওয়া শুরু করেছি।” মার্চের আগে সদস্য সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে তা পূরণ হবে বলেও আশাবাদী তিনি। জেলা বিজেপির মুখপাত্র অজয় ঘটক জানান, কাজে দ্রুততা আনতে প্রতি অঞ্চলে একজন করে মেম্বারশিপ ইনচার্জ গড়া হচ্ছে। ব্লক স্তরে বৈঠক করে তাঁদের নিযুক্ত করা হবে। এ জন্য আলাদা ভাবে তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। এ দিনের বৈঠকে আগামী শনিবার থেকেই ‘সন্ত্রাস হটাও, বাংলা বাঁচাও’ দাবিকে সামনে রেখে জেলা জুড়ে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy