E-Paper

ভাঙা হচ্ছে অবন-স্মৃতির ‘আবাস’, ক্ষোভ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক তলা, তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা বাড়িটি গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে তৈরি। অবনীন্দ্রনাথের বংশধরেরা জায়গাটি প্রোমোটারকে বিক্রি করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তার পরেই ‘আবাস’ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:২৪
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ‘আবাস’ নামের বাড়িটি ভাঙার কাজ চলছে। মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনের অবনপল্লিতে।

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ‘আবাস’ নামের বাড়িটি ভাঙার কাজ চলছে। মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনের অবনপল্লিতে। —নিজস্ব চিত্র।

‘মানুষের সঙ্গ পেয়ে বেঁচে থাকে বসত-বাড়িটা’—‘আপনকথা’য় লিখেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এক বিঘা জমির উপরে তাঁর পুত্র অলোকেন্দ্রনাথ ঠাকুর বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘আবাস’। সে বাড়িকে কেন্দ্র করেই এলাকারনামকরণ হয়েছিল অবনপল্লি। শান্তিনিকেতনে অবন ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত সেই ‘আবাস’ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। যা নিয়ে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা, আশ্রমিক, বিশ্বভারতীর শিক্ষক ও প্রাক্তনীদের একাংশ। এ নিয়ে বাড়িটির বর্তমান মালিকের সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগকরা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক তলা, তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা বাড়িটি গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে তৈরি। অবনীন্দ্রনাথের বংশধরেরা জায়গাটি প্রোমোটারকে বিক্রি করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তার পরেই ‘আবাস’ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। হুগলির কোন্নগরের বাগানবাড়িতে ছোটবেলা কেটেছে অবনীন্দ্রনাথের। আর এ বাড়িতে তিনি এসেছেন দু’-এক বার। পাঠভবনের প্রাক্তন শিক্ষক ও প্রবীণ আশ্রমিক সুব্রত সেন মজুমদার বলেন, ‘‘অবন ঠাকুর এক বা দু’বার এই বাড়িতে এসেছেন। আজ চোখের সামনে সেটিকে ভেঙে ফেলতে দেখে বড় কষ্ট হচ্ছে। পুরসভাকে অনুরোধ করব, শান্তিনিকেতন এলাকার ঐতিহ্যপূর্ণ বাড়িগুলি যাতে এ ভাবে নষ্ট না হয়।”

ঠাকুর পরিবারের সদস্য ও প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুরের কথায়, “পুরনো ঐতিহ্য নষ্ট হলে খারাপ লাগবেই। কিন্তু আমাদের কিছু করারও নেই।” বিশ্বভারতীর প্রাক্তন কর্মী সমীরণ নন্দী বলেন, “অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এমন করেই এক সময়ে রতনপল্লিতে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ‘সুরোপুরী’ বাড়িটি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।”

বাড়িটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে অবীন্দ্রনাথের বংশধরদের সঙ্গে বহু চেষ্টাতেও যোগাযোগ করা যায়নি। যোগাযোগ করা যায়নি বর্তমান মালিকের সঙ্গেও। বোলপুরের পুরপ্রধান পর্ণা ঘোষ বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। স্মৃতি বিজড়িত বাড়িগুলির ঐতিহ্য বজায় রাখারচেষ্টা করব।’’

‘যে আসবে তার সেকাল নয়, শুধু একালটাই নিয়ে সে বসবে এখানে’—অনাগত ভবিষ্যতের এ উল্লেখ অবন ঠাকুরের লেখাতেই ছিল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Abanindranath Tagore Demolition

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy