মেজিয়ায় চপার থেকে নামছেন তৃণমূল সাংসদ।—নিজস্ব চিত্র
প্রথম দফার ভোটপর্ব মিটতেই বাঁকুড়ার বাকি কেন্দ্রগুলির ভোট নিয়ে জোর প্রচার শুরু হয়ে গেল মঙ্গলবার। জেলার একপ্রান্তে যখন বাম নেতারা সভা করতে নামেন, সে দিন একা তৃণমূল সাংসদ অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই দু’টি কেন্দ্রে সভা করলেন। মাঠে জনতাও এসেছিল।
বস্তুত দ্বিতীয় দফায় বাঁকুড়ার যে ন’টি কেন্দ্রে আগামী সোমবার নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেগুলি সবই শাসকদলের দখলে। তৃণমূলের লক্ষ্য তাদের ‘আসন’ ধরে রাখা। অন্যদিকে, সিপিএম ও কংগ্রেস জোটের লক্ষ্য এই ন’টি কেন্দ্রই শাসকদলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া। শনিবার ইন্দাসের শাসপুর, সোনামুখী, ছাতনা ও বড়জোড়ায় এবং রবিবার জয়পুরে সভা ও বাঁকুড়ায় পদযাত্রা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মেজিয়া ও পাত্রসায়রের বালসিতে সভা করলেন যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন দুপুর ১টায় শালতোড়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী স্বপন বাউরির সমর্থনে মেজিয়া হাইস্কুলের মাঠে সভা করেন তিনি। মেজিয়ার পরে পাত্রসায়রের বালসি ফুটবল মাঠে ইন্দাস বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী গুরুপদ মেটের সমর্থনে আরও একটি সভা করেন অভিষেক। পাহাড় থেকে জঙ্গলমহলে শান্তি বিরাজ করছে বলে দাবি করেন তিনি। কৃতিত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুনিয়েছেন গত সাড়ে চার বছরে মা মাটি মানুষের সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তিও। সে কারণেই তিনি জানান, সব ক’টি কেন্দ্রে তৃণমূলের একজনই প্রার্থী— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাশাপাশি কংগ্রেস–সিপিএমের জোটকে বিঁধতে ছাড়েননি অভিষেক। বামফ্রন্ট–কংগ্রেসের জোট প্রসঙ্গে অভিষেকের কটাক্ষ, “সিপিএম আর কংগ্রেসের বিয়ে হয়েছে। অশুভ জোট হয়েছে।” তাঁর দাবি, ৩৪ বছরে বামফ্রন্টের রাজত্বে একের পর এক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওরা কোথাও শিল্প কারখানা গড়েনি।
সোমবারই প্রথম দফায় জঙ্গলমহলে ভোট মিটেছে। ওই সভা নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়ে অভিষেকের কটাক্ষ, “প্রথম দফার ভোটে জঙ্গলমহলের মানুষ সত্যিই ছক্কা মেরেছেন। আসলে জঙ্গলমহলের মানুষ ব্যাট করেছেন। আর সূর্যকান্তবাবু বল করেছেন। জঙ্গলমহলের মানুষ সূর্যকান্তবাবুর বলকে একেবারে ওভার বাউন্ডারি মেরে মাঠের বাইরে ফেলে দিয়েছেন। ১৯ মে ভোটবাক্স খুললেই প্রমাণ পেয়ে যাবেন সূর্যকান্তবাবু।”
চড়া রোদকে উপেক্ষা করেও এ দিন মেজিয়া ও বালসিতে অভিষেকের সভায় ব্যাপক ভিড় হয়েছিল। বক্তব্য শোনার থেকে মঞ্চের পাশে চপার দেখার জন্য সভায় আসা মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। মাঠের পাশাপাশি রাস্তার দু’ধারে, পুকুরের পাড়ে, বাড়ির ছাদেও অভিষেককে দেখার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেছিলেন সাধারণ মানুষ। দ্বন্দ্ব ভুলে তৃণমূলের ব্লক নেতা স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়, দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম বেরা থেকে রবিউল হোসেন সকলেই এ দিনের সভা সফল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
সভায় ঠাসা ভিড় দেখে অবশ্য তৃণমূল নেতাদের মুখে হাসি ফুটেছে। গুরুপদবাবুর দাবি, “৩০ হাজারের বেশি মানুষ এ দিনের সভায় হাজির ছিলেন। মানুষ যে মা মাটি মানুষের সরকারের উন্নয়নের পক্ষে এ দিনের ভিড়ই তার প্রমাণ।” মেজিয়ার সভাতে অভিষেক ছাড়াও ছিলেন জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য অরূপ চক্রবর্তী, যুব তৃণমূল সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy