Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Madhyamik

Madhyamik: বাবা মারা গিয়েছেন মাধ্যমিকের আগের রাতে, শেষকৃত্য সেরে সকালে পরীক্ষা দিল ছেলেমেয়ে

রবিবার রাতে বীরভূমের বোলপুরে গীতাঞ্জলির সামনে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর হন আহত শিবশঙ্কর কিস্কু।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বীরভূম শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২২ ০০:০৮
Share: Save:

পর দিন সকালে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, মাধ্যমিক। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে লেগে ছিল ওরা। হঠাৎই দুঃসংবাদ এল রাতে। বাবা আর নেই। মারা গিয়েছেন। শুনে দুই ছেলেমেয়ের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। তার পরেই ছুটোছুটি। হাসপাতাল। বাবার শেষকৃত্য সেরে সকালে সময় মতো পরীক্ষকেন্দ্রে হাজির তারা।

রবিবার রাতে বীরভূমের বোলপুরে গীতাঞ্জলির সামনে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর হন আহত শিবশঙ্কর কিস্কু। ঘটনার পর তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও শেষরক্ষা হয়নি। রাতেই মৃত্যু হয় আমোদপুরের বড়োডাঙা গ্রামের বাসিন্দা শিবশঙ্করের। বাড়িতে তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই মা-কে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে চলে আসে শিবশঙ্করের ছেলে ঘনশ্যাম ও মেয়ে জোনাকি। তার পর সেখান থেকেই বাবার অন্তিম যাত্রা।

এই ঘটনার পরেও সোমবার সকালে আমোদপুর জয়দুর্গা উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পৌঁছয় ঘনশ্যাম ও জোনাকি। দু’জনেই কেসাই পুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। জোনাকি বলছে, ‘‘পড়াশোনার পর রাতে শুয়েই পড়েছিলাম আমি আর মা। ওই সময়েই খবর এল, বাবা মারা গিয়েছে। ওই কথা শুনে কী করব বুঝতে পারছিলাম না। বাবা মারা গিয়েছে! আর এ দিকে মাধ্যমিকের টেনশন! মনে হচ্ছিল পরীক্ষাই হয়তো দেওয়া হবে না। পরে ভেবে দেখলাম, না, বাড়িতে বসে থাকলে হবে না। চলে এলাম আমি আর দাদা।’’

ঘনশ্যাম আর জোনাকির এই মনোবল দেখে আপ্লুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কেসাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণবকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতেও যে ওরা পরীক্ষা দিতে এসেছে, সেটাই অনেক বড়ো বিষয়। আমরা চাই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা ওরা ভাল করে দিক। জীবনে অনেক উন্নতি করুক ওরা। আমরা সবাই ওদের সাহায্য করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE