E-Paper

ভোর থেকে প্রকাশ্যেই ইঞ্জিন ভ্যানে ‘বালি পাচার’, ক্ষোভ

স্থানীয় সূত্রের খবর, দ্বারকেশ্বর নদ থেকে বালি তুলে রেওড়া, বনমালিপুর, ভাটরা, অবন্তিকা, ঠাকুরপুর, চাকদহ ইত্যাদি এলাকার উপর দিয়ে বালির ইঞ্জিন ভ্যান ছুটছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৬
এ ভাবেই বালি পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ।

এ ভাবেই বালি পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।

বিষ্ণুপুরে এ মুহূর্তে কোনও বৈধ বালি খাদান চালু নেই। অথচ ভোর হলেই বিষ্ণুপুর শহর ও দ্বারকেশ্বর নদ লাগোয়া বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙছে বালিবাহী ইঞ্জিন ভ্যানের শব্দে। সেই সঙ্গে কালো ধোঁয়ায় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। তাঁদের দাবি, ভোর ৩টে থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বালি পাচার চললেও ধরপাকড় সে তুলনায় কম। তাই রাশ পড়ে না ইঞ্জিন ভ্যানে বালি পাচার।

তবে শীঘ্রই হানা দিয়ে বালি পাচার বন্ধ করার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন বিষ্ণুপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দীপঙ্কর সাহা। তিনি বলেন, “সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে অবৈধ বালি তোলা বন্ধ করা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হচ্ছে।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, দ্বারকেশ্বর নদ থেকে বালি তুলে রেওড়া, বনমালিপুর, ভাটরা, অবন্তিকা, ঠাকুরপুর, চাকদহ ইত্যাদি এলাকার উপর দিয়ে বালির ইঞ্জিন ভ্যান ছুটছে। ভগত সিং মোড়ের চৌমাথা পেরিয়ে সেই সব ভ্যান বিষ্ণুপুর শহরে ঢুকছে সার দিয়ে। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, প্রশাসনের নাগালে এই বালি চুরি দিনের পর দিন চলছে কী ভাবে? বিষ্ণুপুরে বৈধ বালি খাদান না থাকায় স্থানীয়দের ট্র্যাক্টর চলাচল বন্ধ। অভিযোগ, ট্র্যাক্টর মালিকদের একাংশ ইঞ্জিন ভ্যান কিনে বালির জোগান দিচ্ছেন।

অভিযোগ উড়িয়ে ট্র্যাক্টর মালিকদের সংগঠনের তরফে প্রশান্ত বসানী বলেন, “বিষ্ণুপুরে বৈধখাদান নেই। নিয়ম মেনে ওন্দার নদী ঘাট থেকে থেকে চালান কেটে বালি নিয়ে এসে বিক্রি করতে গেলে এক ট্র্যাক্টরের দাম ৪২০০ টাকা পড়ে যাচ্ছে। অথচ সেই পরিমাণ বালি ইঞ্জিন ভ্যানে চার বারে মাত্র ২৪০০ টাকায় পেয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। তাই ইঞ্জিন ভ্যানের বালি কেনার চাহিদা রয়েছে। বাধ্য হয়ে আমাদের অনেকে ঋণের কিস্তি শোধ করতে না পেরে ট্র্যাক্টর বিক্রি করে দিচ্ছেন। প্রশাসনের অবৈধ ভাবে ইঞ্জিন ভ্যানে বালি তোলা বন্ধ করতে কঠোর হওয়া উচিত।’’

বিষ্ণুপুর মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “ইঞ্জিন ভ্যান চলাচলই সম্পূর্ণ বন্ধ। এদের রেজিস্ট্রেশনও নেই। কী ভাবে পথে নামছে ইঞ্জিন ভ্যান?’’

অথচ বাসিন্দাদের দাবি, দৈনিক দ্বারকেশ্বর নদ থেকে কয়েকশো ইঞ্জিন ভ্যান কম পক্ষে চার বার করে যাতায়াত করছে। তাঁদের কথায়, পথ আইন ভাঙায় বাইক ধরপাকড়ের ক্ষেত্রে পুলিশের যে সক্রিয়তা দেখা যায়, তা ইঞ্জিন ভ্যানে বালি পাচার রোধে দেখা যায় না কেন? ভগত সিং মোড়ের চৌমাথায় বসানো হয়েছে একাধিক সিসি ক্যামেরা। সেই সব নজরদারি ক্যামেরায় ধরা পড়ার কথা সারাদিনে কত বালি বোঝাই ইঞ্জিনভ্যান যাতায়াত করছে। অথচ পুলিশ বালি পাচার রোধে নামছে না!

শুক্রবার সকালে ভগত সিং মোড়ে বাস ধরতে এসেছিলেন অমল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা ঘটলে তবেই প্রশাসন ইঞ্জিন ভ্যানের বিরুদ্ধে সরব হয়। অথচ বিকট শব্দ তুলে ধোঁয়া ছড়িয়ে ভ্যানগুলি যাতায়াত করলেও কারও হেলদোল নেই।”

যদিও পুলিশের দাবি, মাঝে মধ্যেই হানা দিয়ে ইঞ্জিন ভ্যান বাজেয়াপ্ত করা হয়। এখনও বিষ্ণুপুর থানায় জমে আছে বালি-সহ একাধিক ইঞ্জিন ভ্যান।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bishnupur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy