Advertisement
E-Paper

ঘর না ছাড়ার সিদ্ধান্ত আলাপিনী সমিতির

সমিতির সদস্যাদের দাবি, উপাচার্যের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এই কক্ষ হস্তান্তর করবেন না। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:২০
তৎপর: সরানো হচ্ছে কক্ষে থাকা ছবিগুলি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

তৎপর: সরানো হচ্ছে কক্ষে থাকা ছবিগুলি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অধিবেশন কক্ষ ছাড়ার নির্দেশ থাকলেও, এখনই তা না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিল শান্তিনিকেতনের আলাপিনী মহিলা সমিতি। গোটা ঘটনায় হস্তক্ষেপ চেয়ে ইতিপূর্বেই বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিল ওই সমিতি। বুধবার সমিতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতিকেও চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানিয়ে রাখা হচ্ছে শান্তিনিকেতন থানাকেও। সমিতির সদস্যাদের দাবি, উপাচার্যের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এই কক্ষ হস্তান্তর করবেন না।

১৯১৬ সালে শান্তিনিকেতনের গুরুপত্নীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই আশ্রমের নানা সাংস্কৃতিক, সমাজকল্যাণ এবং সেবা মলক কাজে অংশগ্রহণ করেছেন আলাপিনীর সদস্যারা। আশ্রমের প্রথম দিকে গ্রেসন গ্রিন নামে এক বিদেশিনি আসেন শান্তিনিকেতনে, যিনি ধাত্রীবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি এসে এই ধাত্রীবিদ্যা ও প্রাথমিক চিকিৎসা শেখান আশ্রমের মেয়েদের। সেই সময় সমিতির সদস্যা কিরণবালা সেন ও ননীবালা দেবী ধাত্রীবিদ্যা শিখে আশ্রম ও আশ্রম সংলগ্ন এলাকার প্রসূতিদের সেবায় নিয়োজিত হন। বছর কয়েক আগে পর্যন্তও ফি বছর রবীন্দ্র সপ্তাহে একটি দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন ও পরিবেশনা এবং শারদোৎসবে নাটক পরিবেশন করতেন সমিতির সদস্যারা।

সমিতির অভিযোগ, বর্তমান উপাচার্য আসার পরে সেই পরিসর বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতি বছর ৭ পৌষ দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া নাম অনুসারে তাঁরা 'শ্রেয়সী' নামে একটি সাহিত্য পত্রিকাও প্রকাশ করেন। পাঠভবনের ছাত্রীনিবাস ও ক্যান্টিনে গিয়ে ছাত্রীদের খাওয়াদাওয়া ও পোশাকেরও নিয়মিত তদারকি করেন সিমিতির সদস্যারা। মেধাবী পড়ুয়াদের বইও উপহার দেওয়া হয়। সমিতির অন্যতম সদস্য শর্মিলা রায় পোমো বলেন, “এখনকার প্রশাসক আর্থিক দিকটা নিয়ে চিন্তা করেন বেশি। ১৯৫৩ সালে আলাপিনীর সদস্যারাই আনন্দ পাঠশালার সূচনা করেন, যা এখন ‘মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালা’ নামে পরিচিত। এখান থেকে প্রতি বছর বিশ্বভারতীর একটা ভাল পরিমাণ টাকা আয় হয়।’’

১০ ডিসেম্বর ‘আলাপিনী মহিলা সমিতি’-কে ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকা তাদের অধিবেশন কক্ষ ‘নতুন বাড়ি’ ছেড়ে দেওয়ার নোটিস দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সমিতির ১০৪ বছরের ঐতিহ্যকে সামনে রেখে উঠে না-যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সদস্যারা। আগামী ১ জানুয়ারি সমস্ত শুভানুধ্যায়ী ও আশ্রমবন্ধুকে জমায়েতেরও ডাক দেওয়া হয়েছে ‘নতুন বাড়ি’র সামনে। একই সঙ্গে শান্তিনিকেতন থানাতেও গোটা ঘটনার উল্লেখ করে, অধিবেশন কক্ষে সমিতির নিজস্ব সম্পত্তির একটি তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। তবে, কক্ষে থাকা বহুমূল্য ছবিগুলি সরানো হয়েছে।

সমিতির সভানেত্রী অপর্ণা দাস মহাপাত্র বলেন, “আমরা আশ্রমের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এ ভাবে একটি নোটিসে আমরা সরে যাব না। ওই নোটিসের ভিত্তিতে ১৬ ডিসেম্বর আমরা উপাচার্যের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা-সহ বেশ কিছু আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলাম, যার উত্তর এখনও পাইনি। তাই মুখোমুখি আলোচনার মধ্য দিয়ে কোনও সমাধানসূত্র না-বেরনো পর্যন্ত আমরা কক্ষ না ছাড়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Shantiniketan Visva Bharati VC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy