Advertisement
E-Paper

কেয়া কই, প্রশ্ন পিঙ্কির

এক বৃহন্নলাকে মারধরের ভিডিও ছড়িয়েছে হোয়াটস‌্অ্যাপে। এমনটাই দাবি করে ওই বৃহন্নলাকে উদ্ধার করে অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে সরব হল বৃহন্নলাদের একটি সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৫৭
নিখোঁজ। সিউড়িতে প্রশাসনিক ভবনে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

নিখোঁজ। সিউড়িতে প্রশাসনিক ভবনে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

এক বৃহন্নলাকে মারধরের ভিডিও ছড়িয়েছে হোয়াটস‌্অ্যাপে। এমনটাই দাবি করে ওই বৃহন্নলাকে উদ্ধার করে অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে সরব হল বৃহন্নলাদের একটি সংগঠন।

ওই দাবিতে শনিবার দুপুরে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মিছিল করে বীরভূম জেলা প্রশাসনিক ভবনে আসেন পশ্চিমবঙ্গ বৃহন্নলা উন্নয়ন সমিতির প্রায় শ’পাঁচেক সদস্য। গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে তাঁরা বিক্ষোভও দেখান।

ওই সংগঠনের দাবি, গত ১৭ মার্চ কাটোয়া থেকে বীরভূমের লাভপুর থানা এলাকার দরবারপুর গ্রামে হাসিবুল শেখের ছেলের মুসলমানিতে নিমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন কেয়া কিন্নর নামে বছর পঁয়ত্রিশের বৃহন্নলা সমাজের এক সদস্য। সেখান থেকেই তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে বলে সংগঠনের সভাপিত সোনা বিবির অভিযোগ। সংগঠনের দাবি, ওই দিন বিকেলেই তাঁদের এক সদস্য অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটস্অ্যাপে একটি ভিডিও পান। তাতে দেখা যায় বৃহন্নলাদের হুগলির চুঁচুড়ার একটি গোষ্ঠীর সদস্যেরা কেয়াকে বেধড়ক মারধর করছে। গোটা ঘটনায় অভিযোগের তির চুঁচুড়া গোষ্ঠীর তিন বৃহন্নলা ‘সুইটি হিজড়া’, ‘নোলক হিজড়া’ ও ‘আবু মাওবাদী’র দিকে। সোনার অভিযোগ, ‘‘ভিডিও দেখার পরেই আমরা হুগলির পুলিশ সুপার এবং চুঁচুড়া থানার আইসি-কে বিষয়টি জানাই। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। পরের দিন (১৮ মার্চ) লাভপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও পুলিশ তা না নিয়ে শুধু নিখোঁজ ডায়েরি করে।’’ তার পরে এত দিন কেটে গেলেও কেয়াকে পুলিশ উদ্ধার করতে না পারায় তাঁরা বাধ্য হয়ে পথে নেমেছেন বলে ওই সংগঠনের সদস্যদের দাবি।

বেশ কিছু দিন ধরেই এলাকা দখলকে ঘিরে চুঁচুড়ার ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে বৃহন্নলাদের কাটোয়া গোষ্ঠীর গোলমাল চলছে। তার জেরে গত ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি কাটোয়া গোষ্ঠীর বৃহন্নলা পিঙ্কি এবং তাজেল শেখ নামে তাঁর এক শিষ্যকে দুষ্কৃতীরা চুঁচুড়ার খাগড়াজোলে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় কেতুগ্রাম থেকে তাপসী এবং বকুল শেখ নামে দুই বৃহন্নলাকে ধরে পুলিশ। কেয়ার অপহরণের ঘটনা তারই জের বলে মনে করছে পুলিশ।

এ দিন পিঙ্কি অভিযোগ করেন, ‘‘লাভপুরের ওই বাসিন্দা লাখ দুয়েকের বিনিময়ে আমার শিষ্য কেয়াকে চুঁচুড়া গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিয়েছে।’’ সংগঠনের আশঙ্কা, কেয়াকে প্রাণে মেরে ফেলা হয়েছে। তাই সমাজের অঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসন কেন তাঁদের অভিযোগকে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না, তাঁদের নিরাপত্তাই বা কোথায়— সেই প্রশ্ন তুলে এ দিন তাঁরা জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতেই সিউড়ি এসেছেন বলে জানান বৃহন্নলাদের ওই সংগঠনের সদস্যেরা।

এ দিন ছুটির দিন থাকায় ফোনেই বীরভূমের জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী এবং পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমারের সঙ্গে কথা বলেন বৃহন্নলারা। দু’জনই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। পরে সংগঠনের সদস্যেরা দেখা করেন ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডি অ্যান্ড টি) আনন্দ সরকারের সঙ্গে। বেরিয়ে এসে সোনা বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন রবিবার থেকেই তদন্ত শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন। কাজ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’ পুলিশ সুপার জানান, তিন জেলার যে কোনও থানায় ওই সংগঠনকে তিনি গোটা বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বীরভূমে অভিযোগ হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন বলে তাঁর আশ্বাস।

অভিযুক্ত সুইটির মোবাইল ফোন এ দিন বন্ধ ছিল। চুঁচুড়া গোষ্ঠীর সদস্য পূজার দাবি, ‘‘ঠিক কী হয়েছে জানি না। তবে, এই সব ঘটনায় আমাদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে কিছু ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়া উচিত।’’

Transgender Kidnap
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy