E-Paper

মনমোহনের দর্শনই প্রয়োজন: অমর্ত্য

এখন শান্তিনিকেতনে নিজের বাড়ি ‘প্রতীচী’তেই রয়েছেন অমর্ত্য। সেখানে এ দিন তিনি সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে মনমোহনের প্রয়াণ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। গত ২৬ ডিসেম্বর প্রয়াত হন মনমোহন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:৪৮
শান্তিনিকেতনে প্রতীচী বাড়িতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। রবিবার।

শান্তিনিকেতনে প্রতীচী বাড়িতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

সাত দশকের ব্যক্তিগত সম্পর্কে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে নানা রূপে দেখেছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। মনমোহনের অর্থনীতির প্রজ্ঞা সম্পর্কে সকলে অবহিত। কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক দর্শন, ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়ে বক্তব্যও আজকের ভারতে শিক্ষণীয় বলে মনে করেন তাঁর প্রাক্তন শিক্ষক তথা প্রাক্তন সহকর্মী অমর্ত্য। রবিবার বীরভূমের শান্তিনিকেতনে নিজের বাড়িতে সংবাদমাধ্যমকে অমর্ত্য জানান, হাল আমলে দেশে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে যা শুরু হয়েছে, তা ঠেকাতে মনমোহনের
দর্শন প্রয়োজন।

এখন শান্তিনিকেতনে নিজের বাড়ি ‘প্রতীচী’তেই রয়েছেন অমর্ত্য। সেখানে এ দিন তিনি সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে মনমোহনের প্রয়াণ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। গত ২৬ ডিসেম্বর প্রয়াত হন মনমোহন। অমর্ত্য বলেন, ‘‘ক্ষতি তো খুবই হল। কারণ, মনমোহন সিংহ ভারতীয় অর্থনীতি ও রাজনীতির বিষয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করেছেন৷ আমার মতে, তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে দেশের নানা উন্নতি হয়েছে।’’

কী ভাবে সেই উন্নতি হয়েছে, ব্যাখ্যাও করেন অমর্ত্য। উল্লেখ করেন মনমোহন সরকারের আমলে চালু হওয়া একশো দিনের কাজের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের রোজগার নিশ্চিত করার প্রকল্পের (মনরেগা) কথা। অমর্ত্য জানান, ওই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ ভারতে অসংখ্য মানুষ কাজ পেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মনমোহনের কাছে ভাবনা ছিল, দেশে কর্মসংস্থান না বাড়ালে জাতীয় সমৃদ্ধি নানা লোকের মধ্যে ছড়াতে পারে না৷’’ এখন দেশে চরম বেকারত্বের অভিযোগ রয়েছে। তাই মনমোহনের নীতি প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন অমর্ত্য। তিনি বলেন, ‘‘বেকারত্ব একটা বড় সমস্যা৷ এ সব অর্থনীতির অনেক দিক নিয়ে মনমোহনের বক্তব্য ছিল, যেগুলোর এখনও
প্রয়োগ প্রয়োজন।’’

অতীতে অমর্ত্য বহু বার মনমোহনের সঙ্গে তাঁর গভীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম বার কেমব্রিজে ছাত্র মনমোহনকে দেখেছিলেন। তখনই তাঁর প্রজ্ঞা ও বিনয় দেখে চমৎকৃত হন। পরে দিল্লি স্কুল অব ইকোনমিক্সে তাঁরা ছিলেন সহকর্মী। তার পরে মনমোহন নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলেছেন। মনমোহনের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়েও অমর্ত্যের সঙ্গে তার বহু বার সাক্ষাৎ, আলোচনা হয়েছে। দুই বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল অটুট।

মনমোহনের অর্থনীতি নিয়ে বহুল চর্চা হলেও, তাঁর রাজনৈতিক দর্শনও একই রকম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন অমর্ত্য। তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতিতে মনমোহন ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে যা বলেছেন এবং করেছেন, তা থেকে শেখার বহু জিনিস আছে।’’ অমর্ত্যের মতে, ‘‘এখন ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে যা চলছে, তা রোধ করায় মনমোহনের সুচিন্তিত বক্তব্য খুব প্রয়োজন ছিল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Amartya Sen manmohan singh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy