সিমলান্দি গ্রামের খুদে শিল্পী সুপ্রিয় গড়ছে ছোট্ট দুর্গা। —নিজস্ব চিত্র।
বাবা প্রতিমা বানিয়ে সংসার চালান। বাবার শিল্পকর্ম দেখে মাত্র আট বছর বয়সে বিভিন্ন ঠাকুরের মূর্তি বানিয়ে নজর কেড়েছে নলহাটি ২ ব্লকের সিমলান্দি গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সুপ্রিয় দাস। এ বছর সে একটি দুর্গা প্রতিমা গড়েছে, যার উচ্চতা ৩০ ইঞ্চি। সেটি দেখতে এখন থেকেই ভিড় করছেন বিভিন্ন গ্রামের মানুষ।
তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াকালীন সুপ্রিয় প্রথম দুর্গামূর্তি বানিয়েছিল। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার ফাঁকেও একটি দুর্গা প্রতিমা বানায় সে। ২০২২-এ সেই প্রতিমা মণ্ডপে রেখেছিলেন মুরারই কালীতলা সর্বজনীন দুর্গামন্দির কমিটির সদস্যেরা। ছোট্ট সেই দুর্গা দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। দুর্গা প্রতিমাটি কাচের একটি বাক্সে মন্দিরে রাখা আছে। সে বার খুদে শিল্পীকে সংবর্ধনা দিয়েছিল পুজো কমিটি।
বাবাকে দেখে সুপ্রিয় প্রতিমা তৈরি শিখেছে। লকডাউনের সময় প্রতিমা তৈরির বরাত না পেয়ে কষ্টের মধ্যে সংসার চলছিল তাঁদের। ওই সময় বছর আটের সুপ্রিয় সরস্বতী ঠাকুর তৈরি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পাঁচটি ছোট্ট সরস্বতী প্রতিমা বানিয়ে ২০-৫০ টাকায় বিক্রি করে বাবার হাতে টাকা তুলে দিয়েছিল। শুধু পরিবার নয়, তার প্রতিভা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন গ্রামের সকলে। সেই থেকে মাটির ছোট প্রতিমা ও খেলনা গড়ে বাবার হাতে তুলে দেয় সুপ্রিয়।
সুপ্রিয় বলে, ‘‘বড় হয়ে বড়মাপের প্রতিমা শিল্পী হতে চাই। শুনেছি, এ রাজ্য থেকে বিদেশে ছোট প্রতিমা যায়। সেই কথা মাথায় রেখেই প্রতিমা তৈরি করব বলে মনস্থির করেছি। একদিন আমার তৈরি ছোট্ট প্রতিমা বিদেশে যাবে। আমি যে প্রতিমাটি গড়েছি সেটি ৩০ ইঞ্চি লম্বা।’’
তার বাবা বলরাম দাস বলেন, ‘‘আমার কাজ দেখে ও প্রতিমা তৈরি করতে শিখেছে। আমাকেও প্রতিমা গড়তে সাহায্য করছে। ওর গড়া দুর্গা প্রতিমা দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি। ওকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেছি। লেখাপড়ার ফাঁকে এই কাজ করতে বলেছি। এখন পড়াশোনা না করলে সফল হওয়া যাবে না। এ বছরও ছেলের দুর্গা প্রতিমা প্রশংসিত হবে বলে আশাবাদী।’’ সিমলান্দি গ্রামের অনিমেষ দাস বলেন, ‘‘বাবা ও ছেলে দু’জনেই প্রতিমা বানাচ্ছেন। প্রতিমা দেখতে বিভিন্ন গ্রামের ছোট ও বয়স্করা ভিড় জমাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy