Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Raghunathpur

ফুটবল ম্যাচ ঘিরে বচসা, লাঠির ঘায়ে প্রৌঢ় ‘খুন’

স্থানীয় সূত্রের খবর, আষাড়িকেন্দ ও বৃন্দাবনপুর গ্রামের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত দুর্গাপুজোর আগে। সে সময়ে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আষাড়িকেন্দ।

আষাড়িকেন্দ গ্রামে চলছে পুলিশের টহল। ছবি: সঙ্গীত নাগ।

আষাড়িকেন্দ গ্রামে চলছে পুলিশের টহল। ছবি: সঙ্গীত নাগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৪২
Share: Save:

ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে বিবাদ চলছিল দুই গ্রামের মধ্যে। সমস্যা মেটাতে মীমাংসা চলাকালীন লাঠির ঘায়ে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। সোমবার রাতে রঘুনাথপুর থানার আষাড়িকেন্দ গ্রামের ঘটনা। মৃত শিশির বাউরির (৫৮) বাড়ি পাশের সাঁতুড়ি থানার বৃন্দাবনপুর গ্রামে। রাতে পুলিশ অভিযুক্তদের আষাড়িকেন্দ গ্রামে তল্লাশি চালায়। মঙ্গলবার সকালেও পুলিশ অভিযান চলে।

পুরুলিয়ার জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, ‘‘রঘুনাথপুর থানা এলাকার ওই খুনের ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” পুলিশ জানাচ্ছে, ধৃতেরা সবাই আষাড়িকেন্দ গ্রামের বাসিন্দা। আরও তিন অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। উত্তেজনা সামলাতে দুই গ্রামেই বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট।

স্থানীয় সূত্রের খবর, আষাড়িকেন্দ ও বৃন্দাবনপুর গ্রামের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত দুর্গাপুজোর আগে। সে সময়ে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আষাড়িকেন্দ। কিন্তু আবেদন করার পরেও বৃন্দাবনপুর গ্রামের ফুটবল ক্লাবকে সেখানে খেলায় যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। পরে বৃন্দাবনপুর গ্রামের লোকজন ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। যোগ দিতে দেওয়া হয়নি আষাড়িকেন্দ গ্রামের দলকে।

তারপর থেকেই দু’গ্রামের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। বৃন্দাবনপুরের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের গ্রাম থেকে স্থানীয় রামকানালি স্টেশন কিংবা ব্লক সদর গোবাগে যাওয়ার শর্টকার্ট রাস্তা আষাড়িকেন্দ গ্রামের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে। কিন্তু পুজোর পর থেকে সেই রাস্তা দিয়ে চলাচল তাঁদের কার্যত বন্ধ করে দিয়েছেন ওই গ্রামের লোকজন। কেউ যাতায়াত করলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হত। শিশিরের স্ত্রী কল্পনার অভিযোগ, ‘‘সোমবার সন্ধ্যায় ওই রাস্তা দিয়েই রামকানালির হাট থেকে আনাজ কিনে বাড়ি ফিরছিলেন স্বামী। রাস্তায় আষাড়িকেন্দ গ্রামের লোকজন তাঁকে হেনস্থা করেন। বাড়ি ফিরে কিছুক্ষণ জিরিয়ে তিনি বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বলে গিয়েছিলেন, কিছু পরেই ফিরবেন। পরে খবর পাই, আষাড়িকেন্দ গ্রামের কিছু লোক ওঁকে মেরে ফেলেছে।”

পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় বৃন্দাবনপুর গ্রামের কয়েকজন আষাড়িকেন্দ গ্রামে বিবাদের মীমাংসা করতে যান। সেই দলে ছিলেন শিশির। সেখানেই দু’পক্ষর মধ্যে ফের বিবাদ বাধে। মারামারি শুরু হয়। লাঠির আঘাতে গুরুতর জখম হন শিশির। বৃন্দাবনপুরের লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু পথেই মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ের। পুলিশের দাবি, মৃতের পরিবারের তরফে করা অভিযোগে মীমাংসা সভায় মারামারির ঘটনায় শিশিরের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আষাড়িকেন্দে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে গ্রাম কার্যত পুরুষ-শূন্য। মহিলাদের একাংশের দাবি, সোমবার মীমাংসা করতে নয়, বৃন্দাবনপুরের লোকজন লাঠি নিয়েই তাঁদের গ্রামে চড়াও হন। ছালি বাউড়ি নামের এক মহিলার দাবি, ‘‘বৃন্দাবনপুরের লোকজন গ্রামে এলে আমাদের ছেলেরা ব্যাপারটি মিটমাট করে নিতে বলেন। ওঁরা শোনেননি। গোলমালের মধ্যেই কিছু ঘটে থাকতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Raghunathpur Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE