E-Paper

খুনের ছ’বছর বাদে গ্রেফতার আর এক অভিযুক্ত

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে স্থানীয় কাঁদরকুলো গ্রাম সংলগ্ন কু্ঁয়ে নদীর বাঁধে সাগরের মোটরবাইক আটকে বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা। মেয়ে বেঁচে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩০
কীর্নাহার থানা থেকে বোলপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সুজন শেখকে।

কীর্নাহার থানা থেকে বোলপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সুজন শেখকে। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের বুথ সভাপতি সাগর শেখ খুনের ছ’বছর পরে মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন দেখে রবিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুরের নিউটাউন এলাকা থেকে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন খুনের অন্যতম অভিযুক্ত সুজন শেখ। সোমবার তাঁকে বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

২০১৮ সালে কীর্ণাহার থেকে ইদের বাজার সেরে সাত বছরের মেয়েকে নিয়ে মোটরবাইকে লাভপুরের কাজীপাড়ার গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন সাগর। পথে বোমার আঘাতে খুন হন তিনি। এই মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এই ঘটনায় ছ’জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশও দিয়েছে বোলপুর মহকুমা আদালত। বাকিরা পলাতক ছিলেন। মাস ছয়েক আগে ধরা পড়েন এক অভিযুক্ত তজির শেখ। এ বার ধরা পড়লেন সুজন।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে স্থানীয় কাঁদরকুলো গ্রাম সংলগ্ন কু্ঁয়ে নদীর বাঁধে সাগরের মোটরবাইক আটকে বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা। মেয়ে বেঁচে যায়। অভিযোগ ছিল, খুনে অভিযুক্তেরা এক সময়ে তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এই খুন হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানেননি। খুনের পরে সাগরের কাজীপাড়ার বাড়িতে ছুটে এসেছিলেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ-সহ তৃণমূল নেতারা।

মৃতের ভাই শেরআলি শেখের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে বোলপুর মহকুমা আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। অভিযুক্তদের মধ্যে ছ’জন গ্রেফতার করা হলেও বাকিরা পলাতক ছিলেন। মামলায় আদালতে গোপন জবানবন্দি দেয় সাগরের মেয়ে। ২০২৩ সালে আদালত ছ’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা দেয়।

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্গাপুরের নিউটাউন এলাকায় সুজন রাজমিস্ত্রীর কাজ করত। অভিযোগ, সেখান থেকে সে তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট ঠিবা অঞ্চল কমিটির সভাপতিকে সায়িন কাজীকে ফোনে লাগাতার খুনের হুমকি দিত। সায়িনের অভিযোগের ভিত্তিতে সেই ফোনের সূত্র ধরেই সুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

যদিও এ দিনও সায়িন খুনের পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘দুষ্কৃতীরা সিপিএম আশ্রিত। রাজনৈতিক আক্রোশেই ওই খুন। আমি নিহত সাগর শেখের পরিবারে পাশে আছি বলে ফোনে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা কমিটির সদস্য সৈয়দ মাহাফুজুল করিম বলেন, ‘‘ওই খুনের সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নন। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল।’’

পুলিশ জানায়, সুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজও চলছে। এ দিন সরকারি আইনজীবী ফিরোজকুমার পাল বলেন, ‘‘এ দিন অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

kirnahar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy