শতাব্দী রায়। ফাইল ছবি।
অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রার কোনও প্রভাব আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে না। ভোট যেমন হওয়ার, তেমনই হবে। বৃহস্পতিবার এমন মন্তব্য করলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। গরু পাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দিল্লি নিয়ে যেতেই জেলা জুড়ে ‘উৎসব’-এ মেতেছে বিজেপি। সেই আবহে শতাব্দীর হুঁশিয়ারি, কী ভাবে ভোট করাতে হয়, দলের নেতারা জানেন। এর পাল্টা কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবিরও।
গত বছরের অগস্টে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে বীরভূমের রাজনীতিতে ‘সক্রিয়’ হয়ে উঠেছেন শতাব্দী। সম্প্রতি তাঁকে জেলায় দলের কোর কমিটির সদস্যও করেছেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় দলের ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিরও প্রধান মুখ হয়েছে উঠেছেন শতাব্দী। বৃহস্পতিবারও তিনি সাঁইথিয়ার অবিরামপুর গ্রামে ওই কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। শুনেছেন স্থানীয়দের অভাব অভিযোগ। সেখানেই অনুব্রতের দিল্লি সফর প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘অনেক ভোটেই অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি রাখা হয়েছিল। তা বলে কি ভোট হয়নি? ব্যাপারটা একেবারেই সেই রকম নয়। যেমন ভোট হওয়ার তেমনই হবে।’’
শতাব্দীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা কটাক্ষ করেছেন সাংসদকে। তিনি বলেন, ‘‘শতাব্দী রায় এত দিন শীতঘুমে ছিলেন। লোকসভা নির্বাচন আসছে। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা যাতে ভেঙে না পড়েন, তাই টোটকা দিয়েছেন উনি। আগামী নির্বাচনে যে পরিস্থিতি আসছে, তাতে ওঁর জেতা সম্ভব নয়। সেটা বুঝতে পেরেই এই টোটকা দিয়েছেন। ঠিকঠাক নির্বাচন হলে তৃণমূল জিততে পারবে না।’’
জেলার রাজনীতিতে অনুব্রত ও শতাব্দীর সম্পর্ক ততটা ‘মসৃণ’ নয় বলেই শোনা যায়। তৃণমূলের একাংশের মতে, বেশ কয়েক বার শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অনুব্রত সম্পর্কে নালিশ করেছিলেন সাংসদ। কিন্তু জেলা সভাপতি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তাঁর পাশেই দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে শতাব্দীকে। বৃহস্পতিবারও সতীর্থের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। শতাব্দী বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক অবস্থা খারাপ, সেটা বার বার প্রমাণ হয়েছে। ফলে তাঁর শারীরিক অবস্থার দিকে ইডি অফিসারদের বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে।’’
গত মাসে বীরভূম সফরে এসে জেলায় দলের কোর কমিটির সদস্যসংখ্যা বাড়িয়েছেন মমতা। সেই কমিটিতে শতাব্দীর পাশাপাশি ঠাঁই হয়েছে নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখেরও। দলীয় সূত্রে দাবি, তৃণমূলনেত্রী সেই কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে বৈঠকে বসার নির্দেশ দিলেও তা আজও কার্যকর হয়নি। সম্প্রতি তা নিয়ে জেলা কমিটির বৈঠকেই ক্ষোভপ্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে কাজলকে। তার পরেও বসেনি কোর কমিটির সদস্যেরা। সে প্রসঙ্গে শতাব্দী জানান, লোভসভা ও বিধানসভা অধিবেশনের জন্য এখনও বৈঠকে বসা সম্ভব হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘কখনও বিধানসভা শুরু হচ্ছে, কখনও লোকসভা শুরু হচ্ছে। সেই কারণেই বৈঠকে বসা সম্ভব হয়ে উঠছে না।। তবে কোর কমিটির বৈঠক হওয়া উচিত ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy