বিশ্বভারতীতে বিক্ষোভকারী ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। ভেঙে ফেলেন অবস্থান মঞ্চও। নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাসভবনের সামনে ছাত্রছাত্রীদের করা অবস্থান মঞ্চ ভেঙে দিলেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, নিরাপত্তাকর্মীরা মত্ত অবস্থায় তাঁদের মারধর করেছেন। এমনকি, নিরাপত্তারক্ষীরা ছাত্রীদের ধর্ষণ করার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত পড়ুয়ারা। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অশোক মাহাতোর উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি ছাত্রদের।
তবে অশোক পাল্টা দাবি করেন, মঙ্গলবার রাতে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক এবং অধ্যাপিকাদের বাড়িতে গিয়ে ইট ছুড়েছেন পড়ুয়ারা। সেই কারণে নিরাপত্তাকর্মীরা এসে মাঝরাতে অবস্থান মঞ্চ ভেঙে ফেলেছেন। অধ্যাপকদের বাড়ি থেকে বেশ কিছু পাথর উদ্ধার হয়েছে বলেও দাবি অশোকের। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক ছাত্রীর দাবি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। কেউ ইট ছোড়েনি। বরং নিরাপত্তাকর্মীরা বেড়া টপকে এসে তাঁদের মারধর করতে শুরু করেন এবং অবস্থান মঞ্চ ভেঙে দেন। পাশাপাশি বিক্ষোভকারী ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই দফায় দফায় মারামারি, ধাক্কাধাক্কি এবং তুমুল হট্টগোলে অশান্ত হয়ে উঠেছিল শান্তিনিকেতন। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী তাঁর বসভবন থেকে বেরোতে গিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নিরাপত্তারক্ষাদের ডেকেছিলেন উপাচার্য। তাঁকে ঘেরাওমুক্ত করতে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই সময়ে উপাচার্যের দিকে কয়েক জন আন্দোলনকারী চেয়ার ছুড়েছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও এই ঘটনায় কেউ আহত হননি। নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল হলে যান উপাচার্য। কিন্তু সেখানেও ঝামেলা হয়। বার বার ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন পড়ুয়া এবং নিরাপত্তারক্ষীরা। ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, পড়ুয়াদের দাবিদাওয়া নিয়ে কোনও লিখিত আবেদন তাঁরা পাননি। তাই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রায় কুড়ি দিন ধরে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছেন পড়ুয়াদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের দাবি, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের জন্য তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। বিশ্বভারতীর সমস্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সাংবাদিক বৈঠক করেন। তাঁরা দাবি করেন, দীর্ঘ ২০ দিন ধরে উপাচার্য বাড়িতে আটকে থাকার কারণে বিশ্বভারতীর প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠান-সহ বিশ্বভারতীর নানা ছোটখাটো অনুষ্ঠানও করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উপাচার্য বাড়ি থেকে না বেরোতে পারলে বিশ্বভারতীর এই অচল অবস্থাও কাটবে না। এর পরেই মঙ্গলবার উপাচার্য তাঁর বাসভবন থেকে বেরোতে গেলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy